জানা গেছে, ১৫ জুন সন্ধ্যায় পূর্ব লাদাখ সেক্টরের শ্যোক ও গালওয়ান নদীর ওয়াই সংযোগের কাছে ভারতীয় সেনার ৩টি ইনফ্যান্ট্রি ডিভিশনর কমান্ডাররা ও অন্যান্য সিনিয়র অফিসাররা একটি ভারতীয় চৌকিতে ছিলেন। যেহেতু দু’দেশের মধ্যে আলোচনা হবে সেই কারণে। সূত্র সংবাদসংস্থা এএনআই-কে জানিয়েছে, চিনা সেনারা ভারতীয় এলাকায় তৈরি করা পোস্ট সরিয়ে নিয়েছে কি না তা বিহার রেজিমেন্ট সহ ভারতীয় সেনাকে নিশ্চিত করতে বলা হয়েছিল। এছাড়া চিন সেনাকে বার্তা দেওয়ার জন্য একটি ছোটো টহল দল পাঠানা হয়েছিল। সেই সময় চিনের পোস্টে ১০-১২ জন ছিল। ভারতীয় সেনারা তাদের পোস্ট সরিয়ে নিয়ে চলে যেতে বলেছিল। কারণ দুই দেশের সেনা কর্তাদের মধ্য এটাই ঠিক হয়েছিল। চিনা সেনারা সেখান থেকে সরে যেতে অস্বীকার করে। এরপর ভারতীয় সেনার টহলদারি দলটি পোস্টে ফিরে আসে এই বিষয়টি জানাতে। এরপর প্রায় ৫০ জন সেনা নিয়ে ১৬ বিহার রেজিমেন্টের কমান্ডিং অফিসার কর্নেল সন্তোষ বাবু চিনাদের তাদের ভূখণ্ডে ফিরে যেতে বলেন। কারণ তারা তখনও ভারতের মাটিতে ছিল। এদিকে, প্রথম ভারতীয় টহলটি সাইট থেকে ফিরে আসার সময় চিনারা গালওয়ান নদী উপত্যকায় তাদের পূর্ববর্তী অবস্থানেই আরও লোকবল বাড়াচ্ছিল। সংখ্যাটা অন্তত ৩০০-৩৫০। সন্তোষ বাবুরা সেখানে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গেই চিনারা পোস্টের আশপাশে উঁচু স্থানে পজিশন নিয়ে নেয়। ভারতীয় সেনাদের ওপর আক্রমণ চালানোর জন্য পাথর ও অন্য অস্ত্র তাদের সঙ্গে ছিল। এরপর উভয় পক্ষের কথা শুরু হতেই, আলোচনা উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এবং ভারতীয় সেনারা চিনের তাঁবু এবং সরঞ্জাম উপড়ে ফেলতে শুরু করে। চিনা সেনারা, যারা ইতিমধ্যেই ভারতীয় সেনাদের বিরুদ্ধে আগ্রাসনের জন্য প্রস্তুত ছিল আক্রমণ শুরু করে। প্রথম আক্রমণ হয়েছিল বিহার রেজিমেন্টের কমান্ডিং অফিসার সন্তোষ বাবু ও হাবিলদার পালানির ওপর। সন্তোষবাবু পড়ে যেতেই বিহার রেজিমেন্টের সেনারা পালটা আক্রমণ শুরু করে। গভীর রাত অবধি তিন ঘন্টা ধরে লড়াই চলছিল। বেশ কয়েকজন চিনা সেনা নিহত বা গুরুতর আহত হয়েছিল। পরের দিন সকালে পরিস্থিতি তুলনামূলকভাবে শান্ত হয়ে গেলে চিনা সেনাদের মৃতদেহগুলি সেখানে পড়ে থাকতে দেখা যায়। ভারতের কমপক্ষ ১০০ জন সেনা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। চিনাদের সংখ্যা ছিল সাড়ে তিনশো। যাই হোক, বিহার রেজিমেন্টের সেনারা প্যাট্রোলিং পয়েন্ট ১৪-তে চিনের পোস্ট উপড়ে ফেলতে সক্ষম হয়েছিল। এই ঘটনার পরপরই চিনারা সেই অবস্থানের নিকটে লোকবল বাড়ায় ও বাহিনীকে প্রস্তুত রাখে। সূত্র জানিয়েছে যে সংখ্যাগরিষ্ঠ হওয়া সত্ত্বেও বিহার রেজিমেন্টের সেনারা চিনের পোস্ট সরাতে পেরেছিল। ফাইল চিত্র।