কলকাতা

আগামী ৯ নভেম্বর রাজ্য মন্ত্রিসভায় রদবদলের সম্ভাবনা

রাজ্য মন্ত্রিসভায় রদবদলের সম্ভাবনা৷ যার জেরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মন্ত্রিসভায় নতুন মুখও দেখা যেতে পারে৷ সংশ্লিষ্ট সূত্রে অন্তত এমনটাই দাবি করা হয়েছে ৷ আগামী ৯ নভেম্বর রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এনিয়ে ঘোষণা করতে পারেন৷ আসলে একুশের বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকেই সময়টা যেন খুব একটা ভাল যাচ্ছে না মুখ্যমন্ত্রীর ৷ প্রথমে ক্রেতা সুরক্ষা দফতরের মন্ত্রী সাধন পান্ডে অসুস্থ হয়ে পড়লেন ৷ বর্তমানে তিনি চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৷ মুম্বইয়ে তাঁর চিকিৎসা চলছে ৷ অন্যদিকে, রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র নতুন করে নির্বাচনে না দাঁড়ানোয় তাঁর কার্যকালের মেয়াদও ফুরিয়েছে ৷ ফলে এই অবস্থায় অর্থ দফতরের মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি দফতর কার্যত অভিভাবকহীন ৷ এসবের মধ্যেই পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের  হঠাৎ প্রয়াণ তাঁর দফতরেও শূন্যস্থান তৈরি করেছে ৷ এই পরিস্থিতিতে সংশ্লিষ্ট দফতরগুলির সবক’টাই একে একে মুখ্যমন্ত্রীকে নিজের হাতে নিতে হচ্ছে বা হয়েছে ৷ যত দূর শোনা যাচ্ছে, এই শূন্যস্থান পূরণের জন্যই মন্ত্রিসভায় রদবদল করা হবে ৷ আগামী ৯ তারিখ রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠক রয়েছে ৷ রাজ্য বিধানসভায় এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে ৷ সেখানেই মন্ত্রিসভার রদবদল নিয়ে আলোচনা করা হতে পারে বলে সূত্রের খবর ৷

সূত্রের খবর, চলতি সপ্তাহে ৯ তারিখ এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে। সম্প্রতি চার কেন্দ্রের উপনির্বাচনের ফল প্রকাশ হয়েছে। বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছেন তৃণমূলের উদয়ন গুহ, শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, সুব্রত মণ্ডল এবং ব্রজকিশোর গোস্বামী। নবনির্বাচিত বিধায়করা মঙ্গলবার শপথ নেবেন। ওই দিন বিকেল ৩টেয় মন্ত্রিসভার বৈঠক হবে। সেই বৈঠকেই রদবদলের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হবার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে নতুন মন্ত্রীরা কবে শপথ নেবেন, তা স্পষ্ট নয়। সূত্রের খবর, নবনির্বাচিত বিধায়কদের মধ্যে থেকে দু’একজন মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পেতে পারেন। এক্ষেত্রে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছেন দিনহাটার বিধায়ক উদয়ন গুহ। রেকর্ড ভোটে বিজেপি প্রার্থীকে হারিয়েছেন তিনি। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, উদয়নকে মন্ত্রী করলে এক ঢিলে দুই পাখি মারতে পারবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একদিকে যেমন মন্ত্রিসভায় উত্তরবঙ্গের প্রতিনিধিত্ব বাড়বে, ঠিক তেমনই রেকর্ড ভোটে জেতার পুরস্কারও দেওয়া যাবে। শান্তিপুরের বিধায়ক ব্রজকিশোর গোস্বামীও মন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে রয়েছেন। এই কেন্দ্রে বিধানসভা নির্বাচনে বড় ব্যবধানে হেরেছিল ঘাসফুল শিবির। উপনির্বাচনে শান্তিপুরে জোড়াফুল ফুটিয়েছেন ব্রজকিশোর। ৬০ হাজারেরও বেশি ভোটে জয়ী হয়েছেন তিনি। বিধানসভা নির্বাচনে নদিয়ায় খারাপ ফল করেছিল তৃণমূল। মতুয়া অধ্যুষিত এই জেলায় বেশ কয়েকটি আসনে পেয়েছিল বিজেপি। তার আগে লোকসভা নির্বাচনে রানাঘাট আসন হারাতে হয়েছিল তৃণমূলকে। ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে শান্তিপুরের বিধায়ক ব্রজকিশোর গোস্বামীকে ক্যাবিনেটে স্থান দিতে পারেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সদ্য প্রয়াত সুব্রত মুখোপাধ্যায় দীর্ঘদিন পঞ্চায়েত দফতর সামলেছেন। তার আমলে একাধিকবার ১০০দিনের কাজে দেশের সেরা হয়েছে বাংলা। সুব্রতবাবুর জায়গায় অভিজ্ঞ কোনও মুখকে আনতে পারেন মমতা। সূত্রের খবর, পঞ্চায়েত মন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে আছেন বর্তমান মন্ত্রিসভায় দুই সদস্য। অর্থ দফতর নিজের হাতেই রাখতে পারেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্রের খবর, পূর্ণমন্ত্রীর মর্যাদা দিয়েই অর্থ দফতরের উপদেষ্টা হিসেবে অমিত মিত্রকে কাজে লাগাতে চান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অমিতের মন্ত্রিত্বের সময়সীমা শেষ হচ্ছে নভেম্বর মাসে। ২০১১ সালে তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় আসার পর থেকেই অর্থমন্ত্রী রয়েছেন অমিত মিত্র। আর্থিক সমস্যার মধ্যেও সরকারি প্রকল্পগুলি চালু রেখেছেন তিনি।