দেশ

‘গণতন্ত্রের ইতিহাসে কালো দিন’, রাহুলকে সাংসদপদ থেকে খারিজ করার পর প্রতিক্রিয়া বিরোধীদের

সাংসদ পদ থেকে রাহুল গান্ধিকে খারিজ করার পর কড়া প্রতিক্রিয়া দেশের বিভিন্ন বিরোধী দলের নেতা নেত্রীদের। দেশের ‘গণতন্ত্রের ইতিহাসে কালো দিন’ বলে মনে করছেন বিরোধীরা। বর্ষীয়াণ কংগ্রেস নেতা তথা তিরুবনন্তপুরমের সাংসদ শশী থারুর টুইটারে লিখেছেন, ‘আদালতের রায়ের ২৪ ঘন্টার মধ্যে এবং যখন আপিল প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে বিষয়টি তখন দ্রুততার সঙ্গে এই পদক্ষেপ দেখে আমি হতবাক হয়েছি। অতি সক্রিয়তার এই রাজনীতি আগামী দিনে আমাদের গণতন্ত্রের জন্য খারাপ করবে।’ রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা অশোক গেহলট বিজেপিকে নিশানা করে টুইটারে লিখেছেন, ‘লোকসভার সাংসদ পদ থেকে রাহুল গান্ধিকে খারিজ করা স্বৈরাচারের অন্যতম দৃষ্টান্ত। বিজেপির ভুলে যাওয়া উচিত নয় যে তারা শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধির বিরুদ্ধেও একই পদ্ধতি অবলম্বন করেছিল এবং এর পরিণতি ভোগ করতে হয়েছিল। রাহুল গান্ধি দেশের কণ্ঠস্বর যা বর্তমানে আরও শক্তিশালী হবে এই স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে।’ আম আদমি পার্টির নেতা তথা দিল্লির মন্ত্রী সৌরভ ভরদ্বাজ এই বিষয়ে বলেন, ‘কংগ্রেসের সঙ্গে আমাদের বহু মতপার্থক্য রয়েছে। এমনকি যখন কেন্দ্র সরকার আমাদের আক্রমণ করেছে, কংগ্রেস নেতারা হাততালি দিয়েছিলেন। যখন লেফটেন্যান্ট গভর্নর দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ করেছিলেন, তখন তাদের নেতা অজয় ​​মাকেন হাততালি দিয়েছিলেন। গণতন্ত্রে যদি কেন্দ্র বিরোধীদের কণ্ঠ দমন করে, তাহলে জনগণের ইস্যু কে তুলবে? সংসদে বহুবার বিরোধীদের দমন করা হয়েছে। কিন্তু এখন তুচ্ছ ইস্যুতে ডজন খানেক মামলা হয়েছে। এভাবে যদি চলতে থাকে তাহলে প্রধানমন্ত্রী ও বিজেপি একাই সব নির্বাচনে লড়ুক কোনো বিরোধী দল ছাড়াই। এটা একনায়কতন্ত্র।’ আরজেডি সাংসদ মনোজ ঝা বলেন, ‘এটি লজ্জাজনক এবং দুর্ভাগ্যজনক, সংসদীয় গণতন্ত্রের ইতিহাসে এর চেয়ে বড় দাগ আর কিছু হতে পারে না।’ কংগ্রেস নেতা পৃথ্বীরাজ চৌহান বলেন, রাহুল গান্ধির সাংসদপদ খারিজ হওয়া দেখিয়ে দিচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাঁকে ভয় পেয়েছেন। তিনি বলেন, ‘রাহুল গান্ধিকে সাংসদপদ থেকে বহিস্কার করা হয়েছে। দুই বছরের কারাদণ্ড ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে আমরা সন্দেহ করেছিলাম – এটি কারও সদস্যপদ বাতিল করার জন্য অপরিহার্য। তারা ছয় মাস বা এক বছরের জেল ঘোষণা করতে পারত। কিন্তু দুই বছরের মেয়াদ মানে তাদের আরও একটি পরিকল্পনা ছিল এবং তারা আজ তা করেছে। আমি এই কাজের নিন্দা করি। এটি দেখিয়ে দিল যে নরেন্দ্র মোদি রাহুল গান্ধিকে কতটা ভয় পান।’ এদিন দুপুরের এই ঘোষণার পরেই মোদি সরকারকে তীব্র আক্রমণ করলেন এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ নরেন্দ্র মোদি সরকারের আমলে দেশের গণতন্ত্রের নতুন অবনমন হয়েছে বলে টুইট করেছেন তিনি ৷এদিন রাহুল গান্ধির নাম নাকরে মমতা টুইটে লেখেন প্রধানমন্ত্রী মোদির নতুন ভারতে বিরোধী নেতারা বিজেপি র প্রধান নিশানা হয়ে উঠেছেন ৷ একদিকে ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্তদের কেন্দ্রের ক্যাবিনেটে জায়গা দেওয়া হচ্ছে অন্যদিকে বিরোধী নেতাদের মন্তব্যের জন্য তাঁদের পদ খারিজ করে দেওয়া হচ্ছে ৷ আজ আমরা সাক্ষী থাকলাম আমাদের সাংবিধানিক গণতন্ত্রের নয়া অবনমনের ৷ টুইটে কোথাও কংগ্রেস সাংসদের নাম নানিলেও পদ খারিজ প্রসঙ্গের কথা উল্লেখ করে মমতা রাহুলের পাশে থাকারই বার্তা দিলেন বলে মনে করা হচ্ছে ৷