মতুয়া উন্নয়ন পর্ষদের জন্য বরাদ্দ ১০ কোটি টাকা, উদ্বাস্তু এক লক্ষ ২৫ হাজার পরিবারকে জমির পাট্টা
কলকাতাঃ আজ নবান্নের সভাঘরে মতুয়া-সহ রাজ্যের একাধিক প্রান্তিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বিশেষ বৈঠক করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁদের জন্য একগুচ্ছ উপহারের ডালা সাজিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন মতুয়া সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের পাশাপাশি ছৌ নাচের শিল্পীদের প্রতিনিধি, বাগদী, বাউড়ি, কীর্তনীয়া সম্প্রদায়েক প্রতিনিধিদের সঙ্গে নবান্নের সভাঘরে বিশেষ বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আজ থেকে ২৫ হাজার মানুষকে পাট্টা দেওয়া শুরু হয়েছে ৷ আরও ১ লাখ ২৫ হাজারের মতো পাট্টা দেওয়া হবে ৷ ধাপে ধাপে এই পাট্টা দেওয়া হবে ৷ আদিবাসীদের জমি কেউ কেড়ে নিতে পারবে না ৷” পাশাপাশি ডোকরা শিল্পীদের উন্নতির কথা বলেন তিনি ৷ স্বাস্থ্যসাথির আওতায় ডোকরা ও ছৌ শিল্পীদের আনা হয় ৷ তিনি আরও বলেন, “২০১১ থেকে তিন লাখ মানুষকে পাট্টা দেওয়া হয়েছে ৷ নিজভূমি, নিজগৃহতে বাড়ি করে দেওয়া হয়েছে ৷ আপনাদের দাবি ছিল নিঃশর্ত জমির দলিল দেওয়া হোক ৷ এই পাট্টা নিঃশর্ত জমির দলিল ৷ আমি ১৯৮৭-৮৮ থেকে উদ্বাস্তুদের জন্য লড়ছি ৷” মতুয়া সম্প্রদায়ের উন্নয়নে বোর্ড গঠনের কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী ৷ মতুয়া ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের জন্য ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ করার কথা ঘোষণা করেন ৷ বুধবার নবান্ন সভাঘরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মনে করিয়ে দিলেন, মতুয়াদের কাছে প্রথমে তিনিই পৌঁছেছিলেন। ঠাকুরবাড়ির সঙ্গে তাঁর দীর্ঘ সম্পর্ক। এ দিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন,”আমি মতুয়াদের বলব, এখন যাঁরা উড়ে এসে জুড়ে বসছেন, তাঁরা জানেন না বড়মা যতদিন বেঁচেছিলেন প্রায় ২০-২৫ বছর ধরে বড়মার দেখাশোনা, চিকিৎসা সবটাই আমি করতাম। তারপর মমতাবালা ঠাকুরদের চিনি। মতুয়াদের বাড়িতে প্রথম আমিই গিয়েছিলাম।প্রমথনাথ ঠাকুরের নামে কলেজ করেছি ৷ ঠাকুরবাড়ির ওখানে রেলস্টেশন করেছি। এলাকার উন্নয়ন করেছি। প্রমথনাথ ঠাকুরের নামে কলেজ আমি আসার পরেই হয়েছে। মতুয়াদের জন্য ডেভেলপমেন্ট বোর্ড তৈরি করছি ৷” মতুয়াদের কাছে এখন অনেকেই উড়ে এসে জুড়ে বসেছেন ৷ এছাড়া নমশূদ্র, বাউড়ি, বাগদি, দুলে, মাঝিদের জন্য সাংস্কৃতিক বোর্ড গড়ার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী ৷ তিনি বলেন, “বাগদি, বাউড়িদের জন্য আগে কেউ ভাবেনি ৷ ভোটের আগে সব বড় বড় কথা বলছেন ৷” তিনি এও জানান, কাস্ট সার্টিফিকেট পাওয়ার প্রক্রিয়া এ রাজ্যে আরও সহজ হচ্ছে বলে ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। এখন থেকে জন্মসূত্রে তপসিলি কোনও ব্যক্তি পরিবারের কোনও সদস্যের কাস্ট সার্টিফিকেট দেখাতে পারলেই কাস্ট সার্টিফিকেট পাওয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন। আবেদনের চার সপ্তাহের মধ্যেই মিলবে সার্টিফিকেট।