বুধবার নতুন কোভিড বিধি জারি করল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। সেই নির্দেশিকায় কন্টেনমেন্ট জোনে কড়াভাবে নিয়মকানুন মানার উপর জোর দিয়েছে কেন্দ্র সরকার। কন্টেনমেন্ট জোনে শুধু ছাড় থাকবে জরুরি পরিষেবায়। পাশাপাশি সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, কোথাও কোনও লকডাউন করা চলবে না। তবে সংক্রমণ রুখতে নাইট কারফিউ জারি করা যেতে পারে। অক্টোবরের শেষে আনলক ৫-এর নির্দেশিকার মেয়াদ আরও একমাস বাড়ানো হয়েছিল। এবার নভেম্বর মাস শেষ হওয়ার আগেই নতুন এক দফা নির্দেশিকা জারি করল কেন্দ্রীয় সরকার। যা ১ ডিসেম্বর থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত কার্যকর থাকবে। অর্থাত্ বছর শেষেও পুরোপুরি স্বাভাবিক হচ্ছে না জনজীবন। কন্টেনমেন্ট জোনে কড়া নজর রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। চিকিত্সা সংক্রান্ত জরুরি পরিস্থিতি ছাড়া যাতে কেউ ওই এলাকায় আসা-যাওয়া করতে না পারেন, সেদিকে কড়া নজর রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনকে এদিকে কড়া নজর রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, পরীক্ষা বৃদ্ধি, কন্ট্রাক্ট ট্রেসিং, আইসোলেশন বাড়ানোর দিকেও নজর রাখতে বলা হয়েছে।নির্দেশিকায় আরও বলা হয়েছে, যে সমস্ত এলাকায় সপ্তাহে ১০ শতাংশের বেশি করোনা আক্রান্তের হদিশ মিলছে, সেখানে থাকা অফিসগুলির দিকে নজর দিতে হবে। প্রয়োজনে অফিসের টাইমিং বদল করতে হবে। উত্সব পরবর্তী পরিস্থিতিতে মহারাষ্ট্র, দিল্লি, গুজরাট, সহ একাধিক রাজ্যে করোনা সংক্রমণ হু হু করে বাড়ছে। এমন আবহে কয়েকটি রাজ্যে নাইট কারফিউ জারি করা হচ্ছে। যা দেখে নতুন করে লকডাউনের গুজব ছড়িয়েছিল। সেই গুজব সম্পূর্ণ উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের নয়া নির্দেশিকায়। এছাড়া পুরনো সমস্ত নিয়মই কার্যকর থাকছে। খোলা থাকবে সিনেমা হল, অনুষ্ঠান মঞ্চ। তবে প্রয়োজনীয় করোনাবিধি, যেমন-মাস্ক পরা, স্যানিটাইজার ব্যবহার, সামাজিক দূরত্ব-সহ একাধিক নিয়ম মানার উপর জোর দেওয়া হয়েছে।
একনজরে দেখে নিন নয়া কোভিড বিধি
🔴 কনটেনমেন্ট জোনে ছাড় মিলবে শুধুমাত্র জরুরি পরিষেবায়। জেলা প্রশাসন, স্থানীয় পুলিশ এবং পুরসভাকে সংক্রমণে লাগাম টানার বিষয়টি নিশ্চিত করবে। কোনও কার্যকলাপের জন্য এদের থেকে অনুমতি নিতে হবে। বাইরের লোকের যাতায়াত নিষিদ্ধই থাকছে। এ ক্ষেত্রে কোনও অনিয়ম হলে সংশ্লিষ্ট রাজ্য বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলকে তার ব্যাখ্যা দিতে হবে।
🔴 সামাজিক ক্রিয়াকলাপ এবং জমায়েত নিষিদ্ধই থাকছে। এ ক্ষেত্রে আগে জারি করা আদর্শ কার্যবিধি (এসপিও)-র কোনও বদল হচ্ছে না বলে জানিয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। কনটেনমেন্ট জোনে বাড়ি বাড়ি গিয়ে সমীক্ষা চালানো হবে। স্থানীয় প্রশাসনের তৈরি করা বিশেষ দল এই কাজ করবে।
🔴 রাজ্য বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলি করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে স্থানীয়ভাবে বিধিনিষেধ জারি করতে পারে। রাজ্যগুলিকে রাত্রিকালীন কার্ফু জারি-সহ বেশ কিছু ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। তবে লকডাউন ঘোষণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রের সঙ্গে আলোচনা বাধ্যতামূলকই থাকছে।
🔴 করোনা রুখতে নির্দিষ্ট স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য সচেতনতার প্রচার চালাবে রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলি। মাস্ক পরা, সাবান-স্যানিটাইজার ব্যবহার এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার মতো বিষয়গুলি প্রশাসনকে সুনিশ্চিত করতে হবে। জনসমক্ষে বা কর্মস্থলে কেউ মাস্ক না পরলে জরিমানাও করা যেতে পারে।
🔴 বাজার, হাট, শপিং মল, গণ পরিবহনের মতো জনবহুল জায়গায় সামাজিক দূরত্বের বিধি পালনের জন্য শীঘ্রই একটি ‘স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর’ (এসওপি) জারি করবে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে তা বলবৎ করার বিষয়টি সুনিশ্চিত করতে হবে।