আজ মন কি বাত-এর 66 তম পর্বে দেশবাসীর উদ্দেশে বার্তা দিতে গিয়ে জানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি । বললেন, ” কেউ বলছেন ২০২০ সাল শুভ নয় । সবাই চাইছেন এই সালটা তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে যাক । আমরা ৬-৭ মাস আগে জানতামই না এমন হবে । একদিকে কোরোনা, পঙ্গপাল হানা, ঘূর্ণিঝড় । আবার ভূমিকম্প তো থামছেই না । প্রতিবেশীদের আচরণও দেখেছি আমরা । আমাদের প্রতিবেশী যা করছে, দেশ তার সঙ্গে লড়ছে । এত সমস্যা একসঙ্গে মিটতেই চাইছে না । সংকট আসে কিন্তু এর জন্য কী ২০২০ সালটাকে খারাপ বলে দেব? একটা সালের৬-৭ মাস খারপ হলে কী বাকি মাসগুলোও খারাপ হবে ? একেবারেই না । ভারতের ইতিহাস বলছে, চ্যালেঞ্জ কাটিয়ে, সংকট কাটিয়ে জেতা ভারতের ইতিহাস । আগেও যখন বিদেশি হামলা হয়েছিল দেশে, অনেকেই বলেছিলেন, দেশ সমস্যার পড়বে । কিন্তু তা হয়নি ।” ভারতে যেমন একের পর এক সংকট এসেছে তেমন সৃষ্টিও হয়েছে । প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বছরের কয়েকটা মাস খারাপ গেছে বলে হতাশ হওয়ার কিছু নেই । সংকটের মধ্যেও সবক্ষেত্রে সৃজনশীলতা ফুটে উঠেছে । নতুন নতুন জিনিস তৈরি হয়েছে । দেশ কখনও পিছিয়ে পড়েনি । দেশ এগিয়েছে । বিভিন্ন ক্ষেত্রে । সফলতা পেয়েছে ।” ভারত বন্ধুতা রক্ষা করতে জানে । তবে, ভারতের উপর চোখ তুললে শুত্রুর চোখে চোখ রাখতে পারে ভারত । বিষয়টি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, “আমরা ১৩০ কোটি দেশবাসীর শক্তির উপর বিশ্বাস আছে । যেমনই কঠিন পরিস্থিতি হোক কাটিয়ে ওঠা সম্ভব । ভারতের ইতিহাসও তাই বলছে । সীমান্ত সুরক্ষায় আমাদের জওয়ানরা যা করেছেন তা খুবই সাহসিকতার পরিচয় দেখিয়েছে । ভারতের ভূমির দিকে চোখ তুলে তাকিয়েছে যারা তারা উচিত শিক্ষা পেয়েছে । আগামীদিনেও তাই হবে । আমাদের জওয়ানরা দেখিয়েছেন, তাঁরা দেশের দিকে তাকালে কী করতে পারেন । আমাদের বীর পুত্রদের বলিদানে তাঁদের পরিবারের যে মনোভাব, তাঁরা যে গর্বিত তা অনুপ্রেরণা দেয় ।” বিহারের কুন্দন কুমারের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “শহিদ কুন্দন কুমারের বাবা বলেছেন আমার নাতিদেরও সেনাবাহিনীতে পাঠাব । সেকথা কানে এখনও বাজছে । এতে দেশ আরও অনুপ্রেরণা পেয়েছে । মানুষ যত আত্মনির্ভর হবে, তত দেশ এগবে ।” নাম না করে কংগ্রেস সরকারকে খোঁচা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “স্বাধীনতার আগে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে আমরা অনেক এগিয়ে ছিলাম । অনেক দেশের থেকে অনেক এগিয়ে ছিলাম । কিন্তু পরে একটু পিছিয়ে গেছিলাম । আমরা চেষ্টা করছি আবারও এগোনোর ।” বীর সেনাদের অবদানের পর অনেকেই দেশে তৈরি জিনিস কেনার পক্ষে । দেশের জিনিস কিনলে তা দেশ সেবার সমান । এই প্রসঙ্গ তুলে তিনি প্রধানমন্ত্রী বলেন, “কোনও অভিযান সবার সম্মতি, সহযোগিতা ছাড়া এগোয় না । আপনারা দেশের জিনিস কিনুন । সকলকে কিনতে বলুন । এটা দেশের সেবার সমানই হবে । আপনার এই সেবায় দেশ মজবুত হবে । আমাদের দেশ যত মজবুত হবে, তত শান্তি বাড়বে । ভারতের সংকল্প ভারতের ঐতিহ্য ও আত্মসম্মান রক্ষা করা । ভারত বন্ধুতা করতে জানে । কিন্তু প্রয়োজনে শুত্রুর চোখে চোখ রাখতেও পারে ।” তিনি আরও বলেন, “দেশ লকডাউন থেকে বেরিয়ে এসেছে । আনলক চলছে । এই সময় দু’টো বিষয় সামনে আসছে । কোরোনা মোকাবিলা । ভারতের অর্থনীতি ঠিক করা । আপনাকে আনলকে অনেক বেশি সতর্ক থাকতে হবে । মাস্ক পরতে হবে । দূরত্ব বজায় রাখতে হবে । আপনাতে সচেতন হতে হবে । আমার আবেদন, অসচেতন হবেন না । আপনার নিজেরও খেয়াল রাখুন । পরিবারেরও ।” প্রধানমন্ত্রী বলেন, “পরিষেবা আনলকের পাশাপাশি আরও অনেক বিষয় আনলক হয়েছে । যেমন স্পেস সেক্টর, কয়লা সেক্টর লকডাউনে ছিল । তাকে আনলক করা হয়েছে ।”