শিয়ালদহ স্টেশনের উদ্বোধনের দিনও কাটছে না বিতর্ক। প্রথমে তরজার বিষয় ছিল রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ না জানানো নিয়ে । আর সোমবার যখন কলকাতায় ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর শিয়ালদহ স্টেশনের উদ্বোধন হতে চলেছে, তখন তরজার বিষয় কেন শেষ মুহূর্তে আমন্ত্রণ জানানো হল । প্রসঙ্গত এই বিতর্কের সূত্রপাত হয় রাজ্যের পৌর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের কথা থেকে ৷ যেখানে তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলেন, এই প্রকল্পের অন্যতম প্রধান পৃষ্ঠপোষক বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অথচ তিনি যখন উত্তরবঙ্গ সফরে রওনা হচ্ছেন তখন শিয়ালদা মেট্রো স্টেশনের উদ্বোধন হবে । এর থেকেই স্পষ্ট কেন্দ্রীয় সরকার বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকেও আমন্ত্রণ জানাতে চায় না । যদিও ফিরহাদ হাকিমের এই অভিযোগের পর রেলওয়ে বোর্ডের তরফ থেকে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানানো হয় । একইসঙ্গে আমন্ত্রণ জানানো হয় কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম এবং হাওড়ার গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী অরূপ রায় এবং তৃণমূল সাংসদ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়কে । কিন্তু সেই আমন্ত্রণের পরও কিন্তু বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না । কারণ এ ক্ষেত্রে আমন্ত্রণ গিয়েছে এমন সময়, যে সময় সফরসূচি বদলে এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার কোনও সম্ভাবনা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেই । যেহেতু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আমন্ত্রণের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকারের অনিচ্ছা প্রকাশ পেয়েছে, তাই খুব স্বাভাবিক ভাবেই এই অনুষ্ঠানে থাকবেন না তৃণমূলের কোনও প্রতিনিধি । আর এই অবস্থায় রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা অভিযোগ করেছেন, বাস্তবে এই অনুষ্ঠানে তৃণমূল সুপ্রিমোকে আমন্ত্রণ জানাতে কতটা আগ্রহী কেন্দ্রীয় সরকার, তা মানুষের সামনে চলে এসেছে । রাজ্যে মেট্রোরেলকে সামনে রেখে বিকল্প পরিবহণের ভাবনা একান্ত ভাবেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিজস্ব । তিনি রেলমন্ত্রী থাকাকালীন মেট্রোকে সামনে রেখে গোটা কলকাতা এবং শহরতলির পরিবহণ ব্যবস্থা ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা তৈরি করেছিলেন । আজ তা বাস্তবায়িত হচ্ছে একে একে । শশী পাঁজার অভিযোগ, আর যাই হোক এ ভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কৃতিত্বকে কোনও ভাবেই ছোট করা যাবে না । বাংলার মানুষ জানেন, বাংলায় মেট্রো সম্প্রসারণের জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবদান কী ! এ দিন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ বলেন, “যথাসময়ে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীকে । যাঁরা কখনওই বিরোধী দলকে গুরুত্ব দেন না, সম্মান দেন না ও আমন্ত্রণ জানান না, তাঁরা এটা নিয়ে ফালতু বিতর্ক করছেন । এই যে খড়গপুর, মেদিনীপুরে মুখ্যমন্ত্রী এসে প্রশাসনিক বৈঠক করেন, আমি এখানকার পাঁচ বছরের বেশি জনপ্রতিনিধি রয়েছি, প্রথমে এমএলএ ছিলাম, এখন এমপি আছি, কখনও আমাদের একটা চিঠি দেওয়া হয় না । কখনওই আমাদের খড়্গপুরে ডাকা হয় না ।” মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারি মিটিংকে আদতে পার্টির মিটিং বানিয়ে ফেলেছেন বলেও অভিযোগ করেন দিলীপ । তাঁর কথায়, “উনি মনে করেন, প্রশাসন আর পার্টির মধ্যে কোনও পার্থক্য নেই । আমরা সৌজন্য কীভাবে দেখাতে হয় জানি । আমাদের প্রধানমন্ত্রী সবকা সাথ সবকা বিকাশের কথা বলেন । আর সে কারণেই সকলকে আমন্ত্রণ জানানো হয় ।”