জেলা

সন্দেশখালিতে অস্ত্র উদ্ধার সিবিআই-এনএসজির চক্রান্ত, অভিযোগ নিয়ে কমিশনের দ্বারস্থ তৃণমূল

 গতকাল দ্বিতীয় দফার ভোটের দিন সন্দেশখালিতে সিবিআই অভিযান এবং অস্ত্র উদ্ধার নিয়ে এবার নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দায়ের করল তৃণমূল কংগ্রেস৷ গতকালই এই ঘটনাকে সাজানো বলে অভিযোগ করেছিল তৃণমূল কংগ্রেস৷ নির্বাচন কমিশনে দায়ের করা অভিযোগেও রাজ্যের শাসক দল দাবি করেছে, রাজ্যের তিনটি কেন্দ্রে নির্বাচন চলাকালীন ইচ্ছাকৃত ভাবেই সিবিআই অসাধু উদ্দেশ্যে এই অভিযান চালিয়েছে৷ প্রসঙ্গত, গতকালই সন্দেশখালিতে এক শাহজাহান ঘনিষ্ঠের বাড়িতে হানা দিয়ে বেশ কিছু বিদেশী অস্ত্র উদ্ধার করা হয় বলে সিবিআই-এর পক্ষ থেকে দাবি করা হয়৷ তার মধ্যে কয়েকটি বিস্ফোরকও ছিল বলে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে৷ ঘটনাস্থলে গিয়ে দীর্ঘক্ষণ তল্লাশি করে এনএসজি-ও৷ নির্বাচন কমিশনকে পাঠানো চিঠিতে তৃণমূলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির প্রচারে কেন্দ্রীয় এজেন্সি ব্যবহার করে যাতে বাধা সৃষ্টি না হয়, সেই বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য আগেই কমিশনকে অনুরোধ করেছিল তৃণমূল৷ গতকাল সন্দেশখালিতে সিবিআই অভিযান তৃণমূলের সেই আশঙ্কাকেই সত্যি করেছে৷ দার্জিলিং, রাায়গঞ্জ, বালুরঘাট- রাজ্যের এই তিন কেন্দ্রে ভোট চলাকালীন কেন সিবিআই সন্দেশখালিতে গতকাল এই অভিযান চালাল, তার উদ্দেশ্য নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিয়েছে তৃণমূল৷ তৃণমূলের অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ‘আইনশৃঙ্খলার বিষয়টি সম্পূর্ণ রাজ্যের এক্তিয়ারভুক্ত৷ অথচ রাজ্য পুলিশ অথবা প্রশাসনকে অবহিত না করেই সিবিআই এই অভিযানে চলে যায়৷ রাজ্য পুলিশের পুরোদস্তুর একটি বম্ব স্কোয়াড থাকা সত্ত্বেও তাদের ডাকার প্রয়োজন বোধ করেনি সিবিআই৷ এমন কি, রাজ্য প্রশাসন বা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছনোর আগেই সেখানে সংবাদমাধ্যম পৌঁছে গিয়েছিল৷ দেশজুড়ে সংবাদ ছড়িয়ে পড়ে যে সন্দেশখালি থেকে অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার হয়েছে৷ অথচ, ওই অস্ত্রগুলি অভিযান চলাকালীন সত্যিই উদ্ধার করা হয়েছে নাকি সেগুলি ওখানে সিবিআই, এনএসজি গোপনে রেখে দিয়েছিল, তা নিশ্চিত ভাবে বলা সম্ভব নয়৷’ তৃণমূলের পক্ষ থেকে সরাসরি অভিযোগ করা হয়েছে, এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে গতকাল দিনভর যেভাবে ভোট প্রক্রিয়া চলাকালীন তৃণমূলের বিরুদ্ধে সংবাদমাধ্যমে প্রচার চালানো হয়েছে, তাতে ভোটারদের মনে তৃণমূল প্রার্থীদের সম্পর্কে বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে৷ রাজ্যের শাসক দলের পক্ষ থেকে আরও দাবি করা হয়েছে, ‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র এবং বিজেপি নেতারা নিয়মিত ভাবে সন্দেশখালির ঘটনার সঙ্গে তৃণমূলকে জড়িয়ে প্রচার করছেন৷ সিবিআইকে যে বিজেপি কেন্দ্রীয় সরকারের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করে, তা স্পষ্ট৷ এই ঘটনায় তা আবারও প্রমাণিত হয়ে গেল৷’ সিবিআই-এর মতো কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে ব্যবহার করেই তৃণমূল বিরোধী প্রচার করে জনমতে প্রভাব ফেলার চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করা হয়েছে৷ রাজ্য সরকারের কোনও প্রতিনিধির অনুপস্থিতিতে অস্ত্র উদ্ধারের এই ঘটনা আসলে সিবিআই এবং এনএসজি-র ষড়যন্ত্র বলেও তৃণমূলের পক্ষ থেকে সন্দেহ প্রকাশ করা হয়েছে৷