সর্বভারতীয় স্তরে শক্তি বাড়ছে তৃণমূলের। তাই জাতীয়স্তরে বিজেপি বিরোধিতা করতে ঝাঁপিয়েছে ঘাসফুল শিবির। বাংলার বাইরে একাধিক রাজ্যে ছাপ রাখতে মরিয়া তারা। ইতিমধ্যে কিছুটা সফলও হয়েছে।। বৈঠক শেষে রাজ্যসভায় তৃণমূলের দলনেতা ডেরেক ও’ ব্রায়েন জানান, সংবিধান বদলাচ্ছে দল। শুধু বাংলা নয়, দলের ওয়ার্কিং কমিটিতে স্থান পাবেন অন্যান্য রাজ্যের নেতারাও। এদিন স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেওয়া হল, দল যে কোনও সিদ্ধান্ত নিলে তা দলনেত্রীকে দিয়ে পাস করাতেই হবে। জাতীয় স্তরে দলের বিস্তার-সহ অন্যান্য সমস্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে একছত্র অধিকার দেওয়া হবে দলের সুপ্রিমোকে। তাই জাতীয় স্তরের রাজনীতির কথা মাথায় রেখে দলের সংবিধানে পরিবর্তন আনা হবে। বাড়ানো হবে ওয়ার্কিং কমিটি। সেখানে স্থান পাবেন বাংলার বাইরের রাজ্যের তৃণমূল নেতারা। প্রসঙ্গত, ১৯৯৮ সালে দল তৈরি হওয়ার পর থেকে ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য সংখ্যা ২১ ৷ কিন্তু জাতীয় স্তরে সংগঠন বিস্তার করতে গেলে ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য সংখ্যা বাড়ানো প্রয়োজন ৷ কারণ, বিভিন্ন রাজ্য থেকেই হেভিওয়েট নেতারা তৃণমূল যোগ দিচ্ছেন ৷ তাঁদের কাউকে কাউকে ওয়ার্কিং কমিটিতে জায়গা দেওয়া প্রয়োজন ৷ সেই কারণেই সংবিধান সংশোধন করা হবে বলে জানা গিয়েছে ৷ বৈঠকের পর জানালেন ডেরেক। তাঁর কথায়, “এখন তৃণমূলের সংবিধান অনুযায়ী ২১ জন সদস্য রয়েছেন। সংখ্যা বাড়ানো হবে। নেত্রীকেই সেই দ্বায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। নতুন বেশ কয়েকজনকে কমিটিতে নেওয়া হবে।” ওয়ার্কিং কমিটির পরবর্তী বৈঠক হবে দিল্লিতে। এদিন কালীঘাটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে দলের ওয়ার্কিং কমিটির মিটিংয়ে উপস্থিত ছিলেন এ রাজ্যের ওয়ার্কিং কমিটির ২১ জন সদস্য । এছাড়া ছিলেন সদ্য তৃণমূলে যোগ দেওয়া দলের নেতা পবন বর্মা, মুকুল সাংমারা । বৈঠকের শুরুতেই সদ্য প্রয়াত রাজ্যের মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় স্মরণে শ্রদ্ধাঞ্জলি দেওয়া হয় । এরপর একে একে বক্তব্য রাখেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, সুব্রত বক্সিরা । জানা গিয়েছে যে ধাপে ধাপে তৃণমূল কংগ্রেসকে সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে উপস্থাপনের জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে । কিভাবে এই পরিবর্তন আনা হবে, তাতে কী কী থাকবে তা নিয়ে এদিন ওয়ার্কিং কমিটিতে আলোচনা হয়েছে । এদিনের এই বৈঠককে ঐতিহাসিক বলেছেন সদ্য তৃণমূলে যোগ দেওয়া পবন বর্মা । তিনি বলেন, ‘‘বিজেপির বিরুদ্ধে এই মুহূর্তে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই মুখ । তাঁকে সামনে রেখেই ২০২৪-এ লড়াই হবে । আজ দেশের যা অবস্থা তাতে এটা স্পষ্ট সারা দেশে বিজেপির বিরুদ্ধে সবাইকে আন্দোলনে নামতে হবে । আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই এই দ্বায়িত্ব নিতে হবে ।’’ তৃণমূল সূত্রে খবর, বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে যে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল একাই লড়াই করবে ৷ কংগ্রেসের অপেক্ষায় থাকবে না ৷ সামগ্রিক পরিস্থিতিতে তৃণমূলও আগামী ২০২৪-এ বিজেপিকে হারানোর বিষয়ে কনফিডেন্ট ৷ সেই আত্মবিশ্বাস এদিন শোনা গিয়েছে তৃণমূলের জাতীয় মুখপাত্র তথা রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েনের গলাতেও ৷ তিনি বলেন, ‘‘বাংলা ভারতবর্ষকে গত মে মাসেও পথ দেখিয়েছে । ২০২৪ সালে সারা দেশকে পথ দেখাবে । দলের সংবিধান পরিবর্তন হবে । তবে তৃণমূল কংগ্রেসের ডিএনএ পরিবর্তন হচ্ছে না ।’’ সূত্রের খবর, ভোটের ফল নিয়ে সন্তোষপ্রকাশ করেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ মমতা ত্রিপুরায় যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন ৷ অভিষেক ৩ মাসের পরিশ্রমে এই সাফল্যের প্রশংসা করেছেন তিনি ৷