২৭ তারিখ নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ। ঠিক তার পরের দিন, ২৮ আগস্ট, তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবস। সেদিনই ১২ ঘণ্টার বনধের ডাক দিয়েছে বিজেপি। ২৮-এর মঞ্চে গেরুয়া শিবির এবং এই পরিস্থিতিতে তাদের রাজনীতিকে একহাত নিলেন অভিষেক। মণিপুর, উন্নাও, বদলপুরের প্রসঙ্গ টেনে জোর গলায় প্রশ্ন করলেন, ‘নারী সুরক্ষার কথা আমাদের বিজেপির কাছে শিখতে হবে?’ আরজি কর ঘটনার পর গেরুয়া শিবিরের দাবি প্রসঙ্গে বললেন ‘দুর্ভাগ্যজনক ঘটনায় যখন সকলেই বিচার চাইছে, তখন বিজেপি চাইছে মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ।’ কেন বিচার থেকে সরে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ এই পরিস্থিতিতে দাবি গেরুয়া শিবিরের? তার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন অভিষেক। বললেন, এর কারণ বিজেপির মনের সুপ্ত বাসনা। অভিষেক বলেন, ‘আমরা চাই প্রকৃত দোষীরা শাস্তি পাক, বিজেপি বলছে মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ চাই। তাদের মনের সুপ্ত বাসনা, ২০২১, ২০১৬, ২০১৮-এর পঞ্চায়েত, ২০১৯, ২০২৪-এর লোকসভায় হেরেছে, ২০১৮ এর পঞ্চায়েতে হেরেছে, ২০২৩ এর পঞ্চায়েতে হেরেছে, ২০২২ এর পুরসভায় হেরেছে বিজেপি। ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ করতে, বাংলাকে অশান্ত করার জন্য ইট-পাটকেল ছুঁড়ে কাল পুলিশকে আক্রমণ করেছে।’ নবান্ন অভিযানে বহু পুলিশ আক্রান্ত হয়েছেন। তৃণমূল সাংসদ এদিন পুলিশের সংযম প্রসঙ্গে বলেন, ‘পুলিশ যে সংযমের পরিচয় দিয়েছে, সেটাই প্রমাণ করে বাংলা উত্তরপ্রদেশ, গুজরাত, মণিপুর নয়। ‘ বনধের জন্য কার্যত তুলোধনা বিজেপিকে। বললেন, ‘ভারতীয় জনতা পার্টির বাংলার নেতৃত্বকে অনুরোধ করব, প্রতি ২৮ আগস্ট আপনারা পারলে একটা করে বনধ ডাকুন। আপনাদের বনধকে কী করে প্রতিহত করতে হয়, বাংলার অমানুষ জানে।’ স্পষ্ট করে বলেন, আজ বিজেপির বনধ বিচারের দাবিতে নয়, মঙ্গলবারের নবান্ন অভিযানে বিজেপির কর্মীদের পুলিশকে আক্রমণ করে, পুলিশের সম্পত্তি ভেঙে যারা গ্রেপ্তার হয়েছে, সেই দুর্বৃত্তদের ছাড়ানোর লক্ষ্যে বনধ। এই বনধের দিনেও, তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসে বিপুল জমায়েতের কথা উল্লেখ করে অভিষেক বলেন, ‘বনধের নমুনা কী, সংবাদ মাধ্যমের বন্ধুদের বলব, মঞ্চের ছবি দেখবেন না, একদিকে কলম করুন বিজেপির ডাকা ১২ ঘণ্টার বাংলা বনধ, একদিকে এই জমায়েত। মানুষ দেখুক।’ আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদে উত্তাল রাজ্য, সকলেই এক স্বরে বিচার চাইছেন। তৃণমূলের পক্ষ থেকে শুরুতেই নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করা হয়েছিল, দলনেত্রী, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী দোষীদের ফাঁসির দাবিতে রাস্তায় নেমেছেন। এদিন অভিষেক বলেন, একটা দুর্ভাগ্যজনক ঘটনাকে কেন্দ্র করে, যেখানে সারা ভারতের মানুষ বিচার চাইছেন, সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আজকে যারা রাজনীতি করছে, যারা লাশের নোংরা রাজনীতিতে নিজেদের লিপ্ত করছে, বাংলার মানুষের কাছে তাদের মুখোশ খুলে প্রকৃত চেহারা উন্মোচিত হয়েছে। আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদে ‘মেয়েদের রাত দখল’-এর প্রসঙ্গ অভিষেকের কথায় উঠে আসে। বলেন, ‘আমরা সেই আন্দোলনকে সম্মান জানাই।’ অভিষেক বলেন, প্রতিবাদীদের দাবি ছিল, ধর্ষণ মুক্ত আগামী ভবিষ্যত সমাজ গড়ে তোলা এবং দোষীদের শাস্তি।