কলকাতাঃ সব্যসাচী দত্তর বিজেপি যোগদানের সম্ভাবনা বঙ্গ রাজনীতিতে বেশ কিছুদিন ধরেই ‘ওপেন সিক্রেট’। এবার সেই সিক্রেটের অবসান ঘটল। যাবতীয় জল্পনার অবসান ঘটিয়ে বিজেপিতে যোগ দিলেন বিধাননগর পুরনিগমের প্রাক্তন মেয়র সব্যসাচী দত্ত। তাঁর হাতে দলীয় পতাকা তুলে দিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা সাংসদ দিলীপ ঘোষ। অমিত শাহ তাঁকে রীতিমতো আলিঙ্গন করেন।মঙ্গলবার এনআরসি ইস্যুতে নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে দলীয় কর্মীদের নিয়ে একটি বৈঠক করেন অমিত শাহ। সেই মঞ্চে গিয়েই গেরুয়া শিবিরে নাম লেখান রাজারহাট-নিউটাউনের বিধায়ক। তাঁর সঙ্গে যোগদান করেন বিধাননগর পুরনিগমের আরও দুই কাউন্সিলর। এবং তাঁর অসংখ্য অনুগামী। যোগদানের দিন বিধাননগরের প্রাক্তন মেয়রের কথায় আত্মবিশ্বাস প্রকাশ পেল। তিনি বললেন, “যখন যে দলে ছিলাম, তখন সেই দলের সৈনিক হিসেবে কাজ করেছি। আজও করব। তৃণমূল ভাঙতে চাই না। নতুন লোক আনব। এখন যারা বিধাননগরের কাউন্সিলর তাদের আমি জিতিয়েছি। আবারও নতুন লোককে দাঁড় করিয়ে জেতাব। মানুষ যাঁদের পাশে থাকবে তাঁরাই জিতবে।” দলে যোগ দিয়েই সব্যসাচী বলেন, “আমার কাছে আগে দেশ, পরে দল, তারপর ব্যক্তি।” বিজেপি মুকুল রায়ের সঙ্গে লুচি ও আলুর দম খাওয়ার পর থেকেই তৃণমূলের সঙ্গে সব্যসাচীর সম্পর্কের ফাটল শুরু হয়। এরপর প্রায়শই দলের বিরুদ্ধে সরব হতে দেখা গিয়েছে সব্যসাচীকে। কখনও তিনি দলের বিধায়ক সুজিত বসুর বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন। তো কখনও তাঁর গলায় শোনা গিয়েছে ‘ভারত মাতা কী জয়’ স্লোগান। এমনকী, এনআরএসকাণ্ডে দলনেত্রীর ভূমিকার সমালোচনা করেছিলেন সব্যসাচী। দলবিরোধী কাজের অভিযোগে সব্যসাচীকে ‘মীরজাফর-বেইমান’ বলেও কটাক্ষ করেন তাঁর একসময়ের প্রিয় মানুষ ফিরহাদ হাকিম। এমনকী সব্যসাচীকে দল ছাড়ার বার্তাও দেন তিনি। এরপর বিধাননগর পুরনিগমেও তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা আনে তৃণমূল। সেই প্রস্তাব খারিজ হয়ে গেলেও, পদত্যাগ করেন সব্যসাচী। তারপর থেকেই বিজেপি যোগদানের জন্য দিন গুণছিলেন সব্যসাচী। অবশেষ মঙ্গলবার ষোল কলা পূর্ণ হল। যোগ দিয়েই, তিনি লুচি-আলুর দম প্রসঙ্গ তুলে তৃণমূলকে কটাক্ষ করেন সব্যসাচী। তিনি বলেন, মুকুল দা আমার পরিবারের সদস্য। ওঁকে লুচি-আলুরদম খাওয়ানো নিয়ে অনেক কথা হয়েছে। এটা আমাদের ঐতিহ্য, বাড়িতে কেউ এলে আমরা তাদের আতিথেয়তা করি।