রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিনহাকে চিঠি দিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব অজয় ভাল্লা জানালেন, পশ্চিমবঙ্গের সাতটি জেলা পর্যবেক্ষণ করে কেন্দ্রের পাঠানো আন্তঃমন্ত্রক টিম যে রিপোর্ট পেশ করেছেন, তাতে বাংলার অবস্থা নিয়ে উদ্বেগের যথেষ্ট কারণ রয়েছে। উদ্বেগের বিষয়গুলি উল্লেখ করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব বলেছেন, বাংলায় কোভিড মোকাবিলা কেমন হচ্ছে তা কয়েকটি বিষয় দিয়েই আন্দাজ করা যায়। একে তো জনসংখ্যার নিরিখে কম সংখ্যক টেস্ট হচ্ছে। সেইসঙ্গে কোভিড আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যুর হার দেশের মধ্যে সবথেকে বেশি পশ্চিমবঙ্গে ১৩.২ শতাংশ। চিঠিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব বলেছেন, পশ্চিমবঙ্গে সংক্রমণ ছড়ানোর উপর নজরদারি যে দুর্বল, রোগ নির্ধারণ ও টেস্টিং যে কম হচ্ছে এটা তারই প্রতিফলন। সুতরাং টেস্ট আরও বাড়াতে হবে। সেইসঙ্গে ক্লাস্টারগুলিতে র্যান্ডম টেস্টিং করতে হবে। অজয় ভাল্লা চিঠিতে আরও বলেছেন, নজরদারি ও পজিটিভ কেসগুলোর কনট্যাক্ট ট্রেসিংয়ের (আক্রান্তদের সংস্পর্শে যাঁরা এসেছেন) মধ্যে বড় ফারাক রয়েছে পশ্চিমবঙ্গে। তা ছাড়া পাহাড়ে টেস্টিংয়ের বিশেষ পরিকাঠামো নেই। সব জেলা থেকে নমুনা সংগ্রহ করে শিলিগুড়িতে পাঠানো হচ্ছে। এতে অনেকটা সময় নষ্ট হচ্ছে। তাতে কনট্যাক্ট ট্রেসিংয়েও অনেক দেরি হয়ে যাচ্ছে।মুখ্যসচিবকে দেওয়া চিঠিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব আরও বলেছেন, কেন্দ্রীয় টিম রিপোর্টে জানিয়েছে যে কলকাতা ও হাওড়ায় নির্দিষ্ট এক গোষ্ঠী লকডাউনের শর্ত ভাঙছে। এমনকি ‘করোনা যোদ্ধা’ পুলিশের উপরেও তারা হামলা করেছে। এই পরিস্থিতি কঠোর ভাবে দমন করা উচিত। তা ছাড়া স্বাস্থ্য কর্মীদের কোথাও কোথাও এক ঘরে করে দেওয়া হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। সেই সঙ্গে কোয়ারেন্টাইনের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই বলেও দেখা গিয়েছে। অজয় ভাল্লা চিঠিতে বোঝাতে চেয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গে বহু কন্টেইমেন্ট জোনে লকডাউন ও সোশ্যাল ডিস্টেন্সিং ঠিক মতো মানাই হচ্ছে না। বাজারে ভি়ড় হচ্ছে, ছেলেরা মাঠে ক্রিকেট খেলছে, রাস্তায় রিকশ চলছে, মুখে মাস্ক না পরে বহু মানুষ ঘুরছে, নদীতে স্নান করছে।এসবই চলছে কন্টেইনমেন্ট জোনে। এতেই প্রমাণিত যে সরকারের নজরদারি খুবই দুর্বল।