মালদা

জালালপুরের উন্নয়ন থমকে, প্রধানের বিরুদ্ধে ক্ষোভ দলীয় সদস্যদের

হক জাফর ইমাম, মালদা: মালদা জালালপুরের উন্নয়ন থমকে, প্রধানের বিরুদ্ধে ক্ষোভ দলীয় সদস্যদের। বেহাল রাস্তা নিয়ে নাজেহাল কালিয়াচক-১ ব্লকের জালালপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দারা। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ার ফলে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে একাধিক রাস্তা।সুখা মরশুমে সমস্যা তেমন প্রকট না হলেও বর্ষা আসতেই চ্রমে উঠেছে দুর্ভোগ। জলকাদায় ভরতি রাস্তা দিয়ে নিয়মিত যাতায়াত করতে গিয়ে বিপাকে পড়তে হচ্ছে প্রায় সকলকেই। এনিয়েই সাধারণ মানুষের মধ্যে বাড়ছে ক্ষোভ। অভিযোগ, বহু বছর ধরেই কাঁচা রাস্তাগুলি নিয়ে সমস্যা থাকলেও তা দূর করতে স্থানীয় পঞ্চায়েতের কোনো হেলদোল নেই। অনেকে আবার অভিযোগের সুরে বলেন, ক্ষমতাসীন বোর্ডের আভ্যন্তরীণ বিবাদের জেরেই রাস্তাগুলি মেরামত হচ্ছে না। যার ফল করতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। জালালপুর অঞ্চল তৃণমূল নেতৃত্বেরও দাবি, স্থানীয় প্রধানের কারণেই উন্নয়ন প্রায় থমকে গিয়েছে। এর প্রভাব পড়েছে লোকসভা ভোটেও। তৃণমূলের দখলে পঞ্চায়েত থাকলেও কংগ্রেস প্রার্থী এখানে বিপুল ভোটে এগিয়ে রয়েছেন। কালিয়াচক-১ ব্লকের জালালপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রায় কয়েক হাজার মানুষের বাস। দীর্ঘদিন ধরে কংগ্রেসের শক্ত ঘাটি থাকলেও উন্নয়ন সেভাবে হয়নি বলে সাধারণ মানুষের অভিযোগ। গত পঞ্চায়েতে এই জালালপুর অঞ্চল তৃণমূল দখল করে। মোট ২৩ টি আসনের মধ্যে ১৪টি আসনে তৃণমূল প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন। ৭টি আসন পেয়েছে কংগ্রেস। বাকি ২টি আসনের ১টি করে পেয়েছে নির্দল এবং বিজেপি। একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে বোর্ড দখল করলেও এলাকার উন্নয়ন সেভাবে হয়নি বলে অভিযোগ অনেকের। অঞ্চলের বেশিরভাগ রাস্তাঘাট

চলাচলের অযোগ্য। জালালপুরের ছিরামপুর, কুশাবাড়ি, বড়ানগর ডাঙ্গা, খাড়িয়াডোবা কলোনির রাস্তাগুলি বেহাল। এছাড়াও জালালপুর থেকে ধারারা পর্যন্ত রাস্তাটিও সংস্কারের অভাবে জরাজীর্ণ দশা প্রাপ্ত হয়েছে। পাকা এই রাস্তা সংস্কার না হবার কারণে পিচের আস্তরণ উঠে গিয়েছে। তৈরি হয়েছে খানাখন্দ। বর্ষাকালে সেই রাস্তায় জল কাদা জমেছে। ফলে সেখান দিয়ে চলাচল করতে প্রতিনিয়ত নাজেহাল হতে হচ্ছে স্কুলপড়ুয়া থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষকে। জেলাপরিষদের অধীনে থাকা রাস্তাটি মেরামত করার জন্য স্থানীয় পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ কেন কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না, সেই প্রশ্নও তুলছেন বহু মানুষ। সূত্রের খবর, জালালপুর অঞ্চলের প্রধান একালার উন্নয়নের কাজে কার্যত একনায়কতন্ত্র চালাচ্ছেন। কোনো বিষয়েই তিনি নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি বা দলীয় নেতৃত্বের কথায় কর্ণপাত করছেন না। মূলত, তাঁর কারণেই থমকে রয়েছে এলাকার উন্নয়ন। এনিয়ে একাধিক পঞ্চায়েত সদস্য ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দলীয় নেতৃত্বের কাছে। প্রধানের কাজে যে দলীয় সদস্যদের একাংশ ক্ষুব্ধ রয়েছে, সেই বিষয়ে অবহিত রয়েছেন জালালপুর অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি জোহরুল খান। তিনি বলেন, রাজ্যের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গ্রামবাংলার উন্নয়নের জন্য প্রচুর টাকা বরাদ্দ করছেন। কিন্তু সেই টাকা খরচ করতে ব্যর্থ হচ্ছেন অনেক জনপ্রতিনিধি। জালালপুরের প্রধানের বিরুদ্ধেও দলের অনেক সদস্য নিজেদের অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। উন্নয়নের জন্য প্রধান কারো সঙ্গে কোনোরকম আলোচনা না করার ফলে কাজ প্রায় থমকে গিয়েছে। এর প্রভাব পড়েছে ভোটের বাক্সেও। লোকসভা নির্বাচনে এই অঞ্চলে কংগ্রেস প্রার্থী তৃণমূলের থেকে বেশি ভোট পেয়ে এগিয়ে গিয়েছেন। উন্নয়নে ঘাটতি থাকার কারণেই মানুষ আমাদের দিক থেকে মুখ ফিরিয়েছেন। আগামীদিনে সকলকে সঙ্গে নিয়ে উন্নয়নের কাজে গতি আনতে না পারলে দলের সাংগঠনিক ভিত্তি বিপন্ন হতে পারে। বিষয়টি ব্লক এবং জেলাস্তরের নেতাদের জানানো হয়েছে।  প্রধানের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ জানতে তাকে একাধিক বার ফোন করা হয়েছিল কিন্তু ফোন বন্ধ থাকায় তাঁর কোন প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি ।