জেলা মালদা

বেঁচে থাকার লড়াইয়ে দুই কন্যাশ্রী

হক জাফর ইমাম, মালদা: বেঁচে থাকার জন্য লড়াইে দুই কন্যাশ্রী। গত দুই বছর আগে গত হয়েছেন বাবা , মা গত হয়েছেন প্রায় বছর খানেক আগে।বেঁচে থাকার শেষ সম্বল টুকুও আজ আর নেই।তবু লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে মালদা মানিকচক ব্লকের চৌকি মিরদাদপুর অঞ্চলের ভগবানপুর গ্রামের নাবালিকা দুই বোন।এই লড়াই কঠিন তবুও পড়াশোনাকে হাতিয়ার করে এগিয়ে যেতে চাই দুই বোন।পড়াশোনার খরচা যেখানে অধিক কল্পনা ,সেখানে বেঁচে থাকতে দুবেলা দুমুঠো অন্ন জোটাতে ভিক্ষায় একমাত্র সম্বল।সেখান থেকে বাঁচার তাগিদে চলছে এই লড়াই।এখনো পর্যন্ত জোটেনি কোনো সরকারী সাহায্য।এগিয়ে আসেনি কোনো সেচ্চসেবী সংগঠনও।তাই ভগবান ভরসাতেই এগিয়ে চলছে দুই বোনের লড়াই।মালদার মানিকচক ব্লকের চৌকি মিরদাদপুর অঞ্চলের ভগবানপুর গ্রামে বাস নাবালিকা দুই বোনের।বড়ো বোন দেবী মাঝি(১৩) ও ছোট বোন পার্বতী মাঝি(১১)।স্থানীয় কালিন্দ্রি উচ্চ বিদ্যালয়ে অষ্টম ও পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রী।বাবা নগেন মাঝি শাররীক অসুস্থতায় মারা গেছে প্রায় দুই বছর আগে।মা চঞ্চলা মাঝি মারা গেছেন প্রায় এক বছর আগে।তারপরই যেনো সাধের খেলনা ভেঙে শেষ।দুই অসহায় বোনের পাশে আসেনি আত্মীয় পরিজনেরা।খেলনা নিয়ে খেলার বয়সে দুই বোনের শুরু হয়ে যায় পেটের খিদে মেটানোর লড়াই।কখনো এই পাড়া তো আবার অন্য পাড়ায় গিয়ে শুরু হয় ভিক্ষে করে পেট চালানোর লড়াই।ফলে লাটে উঠেছে পড়াশোনা।একবেলা খাওয়ার জুটে তো আবার কখনো এক বেলা অনাহারেই দিন কাটাতে হয় এই নাবালিকা অসহায় দুই বোনকে।প্রতিবেশীদের দয়া ও ভগবান ভরসায় চলছে দুই বোনের দিন।বাবা মাকে মনে করে প্রতিনিয়ত গুমরে গুমরে কাঁদে দুই বোন।বাবা মায়ের স্মৃতি জড়ানো ভিটে না ছেড়েই চাইছেন সাহায্য। স্থানীয়রা জানান,এই দুই বোন আজ অসহায়।একটি মাটির ঘর রয়েছে।নেই বিদ্যুৎ সংযোগ।পেটের খাওয়ার জোটাতে ভিক্ষে করতে হচ্ছে তাদের।গ্রামে তাদের কোনো আত্মীয় নেই।দূরে বসবাসকারী মাসি পিসিরাও নেই না কোনো খোঁজ।গ্রামের মানুষ যতটা পারে সাহায্য করে নতুবা গ্রামে গিয়ে ভিক্ষা করে চলে করুন দিন।কেউ সাহায্য করতে হয়তো দিন বদলাবে তাদের।অসহায় দুই বোন জানান,আমরা পড়াশোনা করতে চাই কিন্তু পেটের খাওয়ার জোগাড় করতে স্কুল ছেড়ে করতে হয় ভিক্ষে।কেউই কোনো সাহায্য করেনি।কোনোদিন সম্ভব হলে যায় স্কুল,তবে বেশির ভাগ দিনই ভিক্ষা করতে গিয়ে যাওয়া হয়না স্কুলে।কষ্ট যেনো এদিন দুই বোনের সাথে দেখা করেন এলাকার শিক্ষক তথা সমাজসেবী সুনন্দন মজুমদার।নিজে সামান্য কিছু আর্থিক সাহায্য করেন।এপ্রসঙ্গে তিনি বলেন,এই দুই বোনের অবস্থা খুবই করুন।আমি শুনেই ছুটে এসেছি।দেখা করলাম কথা বললাম।আমি সর্বশক্তিতে এই দুইজনের সাহায্য করবো।প্রশাসনের কাছে সাহায্যের আর্জি জানাবো।