সম্প্রতি রাজ্য সরকারকে চিঠি দেয় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। বলা হয় কলকাতায় লকডাউন ঠিকমতো হচ্ছে না। এরপরেই রাজ্যে আসে কেন্দ্রীয় পরিদর্শক দল। তারাও চিঠির পর চিঠি দেয়। রাজ্য বিজেপি-র নেতারা মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধেও লকডাউন ভাঙার অভিযোগ আনেন। এমন রিস্থিতিতে সর্বভারতীয় সমীক্ষায় ধরা পড়ল পুরো বিপরীত বার্তা। ‘করোনা ভাইরাস কনজিউমার্স ইনসাইটস ২০২০’ শিরোনামে চালানো সমীক্ষায় গুরুত্ব দেওয়া হয় লকডাউন সফল করতে প্রশাসনিক প্রয়াস ও মানুষের সচেতনতার ওপর। আওতায় ছিল কলকাতা, মুম্বই, হায়দরাবাদ, আমেদাবাদ, গুয়াহাটি, কোচির মতো ১৬টি বড় শহর। দেখা গেছে, অন্যদের চেয়ে কয়েক কদম এগিয়ে কলকাতা। কলকাতা ৯৫% পেয়ে ‘খুব ভাল’।
রয়েছে ৬ নম্বরে। তার পরেই আমেদাবাদ (৯৪%) এবং হায়দরাবাদ (৯১%)। কিন্তু লকডাউন কার্যকর করার ক্ষেত্রে কলকাতা ১ নম্বরে। ওই ১৬টি শহরকে ধরে গোটা দেশের গড় যখন ৭৪ শতাংশ, কলকাতা তখন ৮৫ শতাংশ। ঠিক পরেই ৮৩ শতাংশ পেয়েছে কোয়েম্বাটুর আর জয়পুর। করোনা আবহে কতটা সচেতন দেশের বিভিন্ন শহর? সেই ছবিও উঠে এসেছে টিআরএ-র সমীক্ষায়। আপনি কতটা সচেতন- এই প্রশ্নের তিনটি জবাব ছিল। প্রথমটি, ‘পুরোপুরি জানি’, দ্বিতীয়টি, ‘কিছুটা জানি’ এবং শেষ জবাব, ‘কিছুই
জানি না’। এর মধ্যে প্রথম দু’টি জবাবকেই সচেতনতার ক্ষেত্রে সবুজ সঙ্কেত হিসেবে ওই সমীক্ষায় ধরা হয়েছিল। ‘পুরোপুরি জানি’ জবাবের ক্ষেত্রে ১৬টি শহরেই গড় দাঁড়িয়েছে ৭৭ শতাংশ। কলকাতা ৮৬ শতাংশ। টিআরও রিসার্চ জানিয়েছে, এপ্রিলের ১০ থেকে ২০ তারিখ পর্যন্ত ৯০২ জন শহরবাসীকে নিয়ে এই সমীক্ষা হয়েছিল। দেখা গেছে, লকডাউন শহরগুলিতে সামগ্রিকভাবে কার্যকর হওয়ার হার ৯১ শতাংশ। ৫টি শহর ৯৮ শতাংশের বেশি নম্বর পেয়ে উৎকর্ষের স্বীকৃিত পেয়েছে। জানানো হয়েছে, পরিবারের উদ্বেগ সূচকের একেবারে শীর্ষে লখনউ, ৮৫%। এরপরেই নাগপুর, ৮১%। পরিবারের কারও করোনা হওয়ার উদ্বেগে রয়েছে ৭৪% পরিবার। ৬৮% পরিবার মনে করে চাকরি ও ব্যবসার ক্ষতি হবে। দেরিতে মাইনে পাবে,
ভাবছে ৬২% পরিবার। তবে ভবিষ্যৎ জীবন নিয়ে উদ্বেগ ছাড়িয়ে গেছে অন্য সব উদ্বেগকে। ভারতের করোনা মোকাবিলার ক্ষমতা রয়েছে বলে মনে করেন ৭৪% উত্তরদাতা। এর অর্থনৈতিক প্রভাব সরকার সামলাতে পারবে বলে ভরসা ৬৩ শতাংশের। সংস্থার সিইও এন চন্দ্রমৌলি বলেন, ‘লকডাউনের সিদ্ধান্ত ও তার প্রয়োগের কার্যকারিতায় ফাঁক রয়েছে ২৪ শতাংশ। এছাড়া, ২১ থেকে ২৪ বছর ও ৪৬ থেকে ৫০ বছর বয়সিদের মধ্যে করোনা সংক্রমণ সংক্রান্ত তথ্যে বড় রকমের ফাঁক রয়েছে। ডিম বা মাংস খেলে করোনা হয়, এ ধরনের তথ্যও জনমানসে প্রভাব ফেলছে।’রোগের উপসর্গ নিয়ে সচেতনতায় সবচেয়ে এগিয়ে দিল্লি। এরপরেই মুম্বই। তবে এই রোগ কীভাবে ছড়ায়, সে বিষয়ে ভুল ধারণার তালিকাতেও শীর্ষে দিল্লি। তারপরে চণ্ডীগড়।