করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে ছয় সপ্তাহের লকডাউন চলছে দেশে। গৃহবন্দি সাধারণ মানুষ। তবে কাজ কিন্তু থেমে নেই। চলছে পড়াশোনাও। তবে সামনাসামনি নয়, পুরোটাই হচ্ছে ভিডিও কনফারেন্সিং অ্যাপের মাধ্যমে। অধিকাংশ নেটিজেনই ভিডিও কনফারেন্সের জন্য ব্যবহার করছেন ‘জুম অ্যাপ’। কিন্তু, আদৌ কি সেই অ্যাপ নিরাপদ?অফিসের গুরুত্বপূর্ণ মিটিং বা গোপন মিটিং করার ক্ষেত্রে ‘জুম’ অ্যাপ ব্যবহার না করার পরামর্শ দিল কেন্দ্রীয় সরকার। ‘জুম’ মিটিং অ্যাপ ভিডিও কনফারেন্সিং প্ল্যাটফর্ম হিসেবে বেশ জনপ্রিয়। এবার সরকার জানিয়ে দিল, ভিডিও বৈঠক করার জন্য নিরাপদ নয় এই অ্যাপ। এই অ্যাপটির নিরাপত্তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। জুমের মাধ্যমে ব্যবহারকারীর মোবাইলে হ্যাকার সিঁধ কাটছে না তো? এরকমই হাজারও প্রশ্ন ঘুরছে সোশ্যাল মিডিয়াতে। অবশেষে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে এবিষয়ে স্পষ্ট বক্তব্য মিলল। বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক একটি অ্যাডভাইসরি জারি করে বলেছে, জুম অ্যাপ নিরাপদ নয়। এমনকী সরকারি কর্মীদের বৈঠক বা অন্য কোনও কাজের ক্ষেত্রে এই ধরনের অ্যাপের ব্যবহার বন্ধ করতে বলা হয়েছে। তবে ব্যক্তিগতভাবে যাঁরা জুম অ্যাপ ব্যবহার করছেন তাঁদের উদ্দেশ্যে বলা হয়েছে, নির্দিষ্ট সতর্কতা মেনে তা ব্যবহার করুন। দেশে লকডাউন শুরু হতেই সরকারি-বেসরকারি সংস্থাগুলি ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’ চালু করেছে। একাধিক স্কুলও শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বাড়ি থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে পড়ানোর নির্দেশ দিয়েছে। এই বাজারে কার্যত পোয়া বারো জুম অ্যাপের। মার্কিন এই টেলি কনফারেন্সিং অ্যাপ ভারত সহ গোটা বিশ্বেই গত একমাসে ব্যাপক হারে ডাউনলোড হয়েছে। বিভিন্ন টেক সংস্থার তথ্য বলছে, মার্চের একটি দিনে শুধুমাত্র আমেরিকায় ৩.৪৩ লক্ষ বার ডাউনলোড হয় জুম অ্যাপ। কিন্তু, এতগুলি ভিডিও কলিং অ্যাপ থাকতে জুম অ্যাপই কেন জনপ্রিয় হল? টেক গুরুদের মতে, জুম অ্যাপে বিনামূল্যে একসঙ্গে সর্বাধিক ১০০ জন একটি ভিডিও কনফারেন্সে যোগ দিতে পারেন। সর্বাধিক ৪০ মিনিট ধরে চলতে পারে কনফারেন্স। এছাড়া টাকা দিয়ে সাবস্ক্রাইব করলে সুযোগ সুবিধা আরও বেশি। ফলে ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’ করা জনতা ও পড়ুয়াদের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয় হয় অ্যাপটি। মার্চ মাসে প্রথম ধাক্কা আসে নিউ ইয়র্ক থেকে। প্রশ্ন ওঠে অ্যাপে তথ্যের সুরক্ষা ও গোপনীয়তা রক্ষা নিয়ে। নিউ ইয়র্কের শিক্ষা দপ্তর শহরের স্কুলগুলিতে জুম অ্যাপের ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করে ফেলে। এছাড়া বিভিন্ন দেশে ব্যবহারকারীদের পক্ষ থেকেও তথ্য চুরির অভিযোগ আসছিল। ভারতের সাইবার নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ক সংস্থা ক্রেট কয়েকদিন আগে জুম অ্যাপের তথ্যের সুরক্ষা ও গোপনীয়তা নিয়ে ব্যবহারকারীদের সতর্ক করেছিল। এবার কেন্দ্রের পক্ষ থেকে অ্যাপটিকে সরাসরি নিরাপদ নয় বলে জানিয়ে দেওয়া হল। ব্যবহারকারীদের বাড়তি সতর্ক থাকার কথাও বলা হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছে, জুম অ্যাপ ব্যবহার করার সময় কয়েকটি নির্দেশিকা মেনে চলা উচিত। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য, ই-কনফারেন্স রুমে অবাঞ্চিত কেউ যেন প্রবেশ করতে না পারে। দেখে নিন একনজরে –