কাটিহার এক্সপ্রেসে তবলা বাদককে খুন করেছিল যে সিরিয়াল কিলার, ৩০ বছর বয়সি সেই যুবকের সম্পর্কে চাঞ্চল্যকর তথ্য হাতে পেয়েছে গুজরাত পুলিশ৷ নভেম্বর মাসেই বালির বাসিন্দা ওই তবলা বাদক সহ অন্তত তিন জনকে খুন করেছে সে৷ এখানেই শেষ নয়। গত ১৪ নভেম্বর গুজরাতের ভালসরে ১৯ বছর বয়সি এক কলেজ ছাত্রীকে রেল লাইনের ধারে ধর্ষণ করে খুন করে এই রাহুল৷ টিউশন থেকে বাড়ি ফেরার সময় রেল লাইনের ধারে নির্জন জায়গায় ছাত্রীর উপরে চড়াও হয় সে৷ চাঞ্চল্যকর এই ঘটনার তদন্তে না্মে গুজরাত পুলিশ৷ কিন্তু প্রমাণ এবং সূত্রের অভাবে সহজে অভিযুক্তকে চিহ্নিত করা যাচ্ছিল না৷ এর পর ধর্ষক এবং খুনিকে ধরতে পঞ্চাশ জনের একটি দল তৈরি করে গুজরাত পুলিশ৷ মহারাষ্ট্র, রাজস্থান, অন্ধ্রপ্রদেশ, ওড়িশার মতো বিভিন্ন রাজ্যের পুলিশের সাহায্য নেওয়া হয়৷ বিভিন্ন রাজ্যে যায় গুজরাত পুলিশের দল৷ খতিয়ে দেখা হয় বিভিন্ন রেল স্টেশনের সিসিটিভি ফুটেজ৷ সেই সূত্রেই চিহ্নিত করা যায় খুনিকে৷ গুজরাত পুলিশ জানতে পারে, সুরাতের একটি জেলে কিছুদিন আগেও বন্দি ছিল অভিযুক্ত৷ সেই সূত্রেই মেলে তার পরিচয়, জানা যায় ওই সিরিয়াল কিলার হরিয়ানার বাসিন্দা৷ গুজরাত পুলিশ সূত্রে খবর, তিরিশ বছরের এই সিরিয়াল কিলারের মানসিক বিকৃতি রয়েছে৷ ট্রেনে চড়ে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়াত সে৷ ঘুমোত প্ল্যাটফর্মে৷ ট্রেনের মহিলা অথবা প্রতিবন্ধী কামরায় একা কাউকে পেলেই হামলা চালাত সে৷ খুনের পর মৃতদেহ চাদর চাপা দিয়ে ট্রেন থেকে নেম যেত সে৷ এ ভাবেই হাওড়ার বাসিন্দা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কেও খুন করে ওই সিরিয়াল কিলার৷ শেষ পর্যন্ত গত ২৪ নভেম্বর বান্দ্রা থেকে ভুজ গামী একটি ট্রেন থেকে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে গুজরাত পুলিশ৷ এর পরই উঠে আসে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য৷ জানা যায়, গুজরাতের ওই কলেজ ছাত্রীকে ধর্ষণ করে খুন, কাটিহার এক্সপ্রেসে প্রবীণ তবলা বাদকে খুনের পাশাপাশি গত কয়েক মাসে আরও অন্তত তিনটি খুন করেছে ওই সিরিয়াল কিলার৷গুজরাতের ওই কলেজ ছাত্রী ছাড়াও গত অক্টোবর মাসে পুণে থেকে কন্যাকুমারীগামী একটি ট্রেনের কামরায় আরও এক মহিলাকে একা পেয়ে ধর্ষণ করে খুন করে সে৷ আবার কাটিহার এক্সপ্রেসে হাওড়ার বাসিন্দা ওই তবলা বাদককে খুনের পর সেকেন্দরাবাদে মিনুগুরু এক্সপ্রেস নামে একটি ট্রেনের কামরার ভিতরে এক মহিলাকে গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করে সে৷ বেঙ্গালুরু থেকে মুর্দ্রেশ্বরগামী একটি ট্রেনের প্রতিবন্ধী কামরাতেও এক ব্যক্তিকে খুন করে সে৷ প্রত্যেকটি ক্ষেত্রেই খুনের পর নিহতদের কাছে থাকা নগদ, মোবাইল ফোন এবং অন্যান্য সামগ্রী লুঠ করত সে৷ পুলিশ জানতে পেরেছে, এই রাহুলের অতীতে অপরাধের রেকর্ড রয়েছে৷ মূলত হাইওয়ের ধারে হোটেল বা ধাবার পাশে দাঁড়ানো ট্রাকে চুরি করত সে৷ গুজরাত, রাজস্থানের মতো রাজ্যে তার বিরুদ্ধে অস্ত্র পাচারের মতো গুরুতর অভিযোগও রয়েছে৷ ২০১৮-১৯ সালে জেলেই ছিল সে৷ তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন রাজ্যের পুলিশের কাছে দায়ের হওয়া প্রায় ১৫টি অভিযোগের খোঁজ পেয়েছে গুজরাত পুলিশ৷