ভাইরাল

আইনজীবী ইন্দিরার পারিশ্রমিক ১৭ লক্ষ, জুনিয়র চিকিৎসকদের নামে কিউআর কোডে উঠছে টাকা!

আরজিকর হাসপাতালের তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ-খুনের ‘ন্যায়বিচার’ চাই! এই দাবি সামনে রেখেই ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টরস’ ফ্রন্টের (ডব্লুবিজেডিএফ) নামে ‘তোলাবাজি’ কারবার শুরু করল অসাধু চক্র। সুপ্রিমকোর্টে আইনি লড়াইয়ে ব্যস্ত আইনজীবীদের পারিশ্রমিক দেওয়ার নামে চাওয়া হচ্ছে টাকা। ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ ব্যানারে শহর তথা রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠেছে নানা ‘প্রতিবাদী মঞ্চ’। সেরকমই এক মঞ্চের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ এবং সমাজমাধ্যমে রীতিমতো ‘কিউআর কোড’ দিয়ে টাকা পাঠানোর আবেদন জানানো হচ্ছে। তাতে স্পষ্ট লেখা, ‘জুনিয়র ডাক্তারদের হয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা লড়ছেন বিশিষ্ট আইনজীবী ইন্দিরা জয় সিং এবং তাঁর টিম। আগামী ২৭ তারিখ পরবর্তী শুনানির জন্য তিনি ১৭ লক্ষ টাকা পারিশ্রমিক দাবি করেছেন। আপনি/আপনারা যদি সাধ্যমতো অর্থ সাহায্য করেন, তা খুব উপকারে আসবে।’ এই আবেদনের সঙ্গেই জনৈক অমিত মান্নার ‘গুগল পে অ্যাকাউন্ট-এর কিউআর কোড’ দেওয়া হয়েছে। ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’-এর অন্যান্য গ্রুপেও তা ছড়িয়েছে। আবেদনটি সঠিক, এমন দাবি সহ ভয়েস রেকর্ডিং পোস্ট করা হয়েছে বিভিন্ন হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে। অনেকে তাতে টাকা পাঠাতেও শুরু করেছেন। বুধবার সন্ধ্যায় এখবর পৌঁছে যায় সল্টলেক সেক্টর ফাইভে স্বাস্থ্যভবনের সামনে অবস্থানরত জুনিয়র ডাক্তারদের মঞ্চে। বিষয়টি শুনে ক্ষোভে ফেটে পড়েন ডাক্তার আন্দোলনের নেতা আশফাকুল্লা নাইয়া। আর জি কর হাসপাতালের ইএনটি বিভাগের এই পিজিটি বলেন, ‘ডব্লুবিজেডিএফ কোনও টাকা তুলছে না। আন্দোলনে খরচের জন্য যথেষ্ট তহবিল রয়েছে। কেউ যদি ব্যক্তিগতভাবে টাকা তোলে, জানবেন সেটা ভুয়ো, ফেক। এরসঙ্গে ডাক্তার আন্দোলনের কোনও সম্পর্ক নেই।’ আর যাঁর নামকে সামনে রেখে টাকা তোলা হচ্ছে সেই ইন্দিরা জয় সিং কী বলছেন? এদিন বিকেলে দিল্লিতে একটি সেমিনারে ব্যস্ত ছিলেন বিশিষ্ট এই আইনজীবী। তাঁর কানে পৌঁছে দেওয়া হয় গোটা বিষয়টি। শত ব্যস্ততার মধ্যেও তিনি এসএমএস পাঠান। ক্ষুব্ধ ইন্দিরাজি তাতে লেখেন-‘এটি সর্বৈব মিথ্যা!’ তরুণী চিকিৎসকের খুন-ধর্ষণে যুক্তদের শাস্তির দাবিতে পথে নেমে আন্দোলন করছে উত্তর কলকাতার ‘তিলোত্তমা বাহিনী, সিঁথির মোড়’। এদিন তাদের গ্রুপেও ‘কিউআর কোড’ দিয়ে টাকা তোলার ওই আবেদনটি ছিল। সেটি যে ভুয়ো নয়, তার সপক্ষে একটি ভয়েস রেকর্ডিং পোস্ট করেন জনৈকা সুদেষ্ণা। তাঁর কথায়, ‘আমার ছেলে ক্লাস টুয়েলভের ছাত্র। মেয়ে ডাক্তার। ওর কাছেই মেসেজটি এসেছে। এটা কোনও ফ্রড বিষয় নয়।’ অদ্ভুতভাবে মাত্র এক ঘণ্টার মধ্যে ওই গ্রুপের অ্যাডমিনরাই ওই পোস্টটি ডিলিট করে দেন!