জেলা

আইনশৃঙ্খলার স্বার্থে কেন্দ্রের শাসন চায় সায়ন্তন

মেদিনীপুর: প্রাথমিক শিক্ষক তথা সক্রিয় আরএসএস কর্মী বন্ধু প্রকাশ পাল ও তাঁর পরিবারকে খুনের ঘটনায় আরও একবার বাংলায় কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপের দাবি জানালেন বিজেপির রাজ্য নেতা সায়ন্তন বসু।শুক্রবার দুপুরে মেদিনীপুরে এক দলীয় কর্মসূচিতে যোগ দিতে এসে সাংবাদিক দের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘‘রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা অবনতি হচ্ছে৷ বিজেপির কর্মী সমর্থকদের খুন হতে হচ্ছে৷ এতে আমরা কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে জানিয়েছে এই অবস্থায় বাংলায় কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপ খুবই জরুরি।’’তাঁর প্রশ্ন কেন এরাজ্যে কেন্দ্রীয়শাসন বলবৎ হবে না? পুজোর মুখেই বিজেপির পরিবারের সদস্যরা খুন হয়েছেন। কোনো ক্ষেত্রেই পুলিশ প্রকৃত খুনিদের না খোঁজ করে বলে দিচ্ছে পারিবারিক অশান্তি, আর্থিক লেনদেন, সম্পত্তি নিয়ে বিবাদের জেরে খুন। প্রতিটি ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্তের দাবিতে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারা রাষ্ট্রপতি, সরাষ্ট্র মন্ত্রীর দ্বারস্থ হচ্ছেন৷শনিবার গান্ধী মূর্তির পাদদেশে অবস্থান বিক্ষোভ করবেন বিজেপি নেতা কর্মীরা। কেন্দ্র কোনো পদক্ষেপ না করলে বাংলা বনধ ও নবান্ন অভিযান চালানো হবে।প্রসঙ্গত, শুক্রবার দুপুরে ট্যুইট করে অপর্ণা সেন জানান, “আরএসএস কর্মীর গর্ভবতী স্ত্রী ও সন্তানকে নৃশংসভাবে খুন করা হল তাও আমাদের এই পশ্চিমবঙ্গে! যে কারণেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটুক না কেন আমাদের নিজেদের ওপর লজ্জা হচ্ছে। মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী দয়া করে অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করুন। রাজনৈতিক ভেদাভেদকে দূরে রেখে পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত নাগরিকের দায়িত্ব আপনার। আপনি সবারই মুখ্যমন্ত্রী।”এই ঘটনা নিয়ে ইতিমধ্যে রাজনৈতিক তৎপরতা শুরু করেছে বিজেপি। বৃহস্পতিবার এই নিয়ে সংবাদমাধ্যমের সামনে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ও। অন্যদিকে আরএসএস-এর দাবি নিহত স্কুল শিক্ষক তাঁদের সংগঠনের সদস্য ছিলেন। সেদিনই বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার এই হত্যাকাণ্ডে রাজ্যের বুদ্ধিজীবীদের নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। আর তারপরই অপর্ণা সেনের এমন ট্যুইট।দশমীর সকালে একই পরিবারের তিন সদস্যের ক্ষত বিক্ষত মৃতদেহ উদ্ধারকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়ায়। মৃতদের নাম বন্ধু প্রকাশ পাল (৩৫), বিউটি পাল (৩০) ও অঙ্গন পাল (৬)। মুর্শিদাবাদের জিয়াগঞ্জের কানাইগঞ্জ লেবুতলার ঘটনা।৷ প্রকাশবাবু এলাকায় আরএসএস-এর সক্রিয় কর্মী বলেই জানা গিয়েছে৷পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত প্রকাশবাবু আজিমগঞ্জের গোসাঁই গ্রাম সাহাপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন। মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘী এলাকায় আদিবাড়ি হলেও, চাকরির সুবাদে স্ত্রী বিউটি ও ছেলে অঙ্গনকে নিয়ে জিয়াগঞ্জের লেবুতলায় থাকতেন ওই শিক্ষক।ঘটনার দিন সকালে প্রতিবেশিরা চিৎকার শুনে ছুটে এসে দেখতে পান নিজের বাড়িতে খাটের উপর পড়ে রয়েছেন প্রকাশবাবু৷ মেঝেতে তাঁর ছেলে অঙ্গন ও পাশের ঘরে তার স্ত্রী বিউটির রক্তাক্ত দেহ পড়ে রয়েছে। মৃত্যুর ঘটনায় হতবাক প্রতিবেশীরাও। খবর পেয়ে জিয়াগঞ্জ থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মৃতদেহগুলি উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায় ময়না তদন্তের জন্য।ঘটনাস্থল থেকে একটি একটি ধারালো অস্ত্রও উদ্ধার করেছে পুলিশ। আস্বাভবাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্তে নেমেছে জিয়াগঞ্জ থানার পুলিশ।