রাজ্যে ৫৯টি করোনা হাসপাতাল রয়েছে, তার মধ্যে ৪টি কলকাতায়
পরিস্থিতি সামলাতে ও অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে গ্লোবাল অ্যাডভাইজারি কমিটি গঠন
জ্যোতির্ময় দত্ত, কলকাতাঃ আজ মুখ্যমন্ত্রী সাফ জানিয়ে দেন, সোমবার ১২টা পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত ৬১। বাড়েনি মৃতের সংখ্যা। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন ১৩ জন। এর মধ্যে ৫৫টি কেস সাতটি পরিবারের। কালিম্পংয়ে ১টি পরিবারেই ১১ জন আক্রান্ত হন। তার মধ্যে ১ জন মারা গিয়েছেন। এরা চেন্নাই থেকে এসেছিলেন। হাওড়ায় ৮ জন আক্রান্ত, কলকাতায় ১২ জন আক্রান্ত। কম্যান্ড হাসপাতালের চিকিত্সকের পরিবার আক্রান্ত হয়েছেন। তেহট্টের বিয়েবাড়িতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছেন। এগরায় ১১ জন আক্রান্ত। হলদিয়ায় দুজন করোনা আক্রান্ত।করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় গ্লোবাল অ্যাডভাইসারি বোর্ড তৈরি করছে রাজ্য সরকার। সাংবাদিক বৈঠকে এদিন মুখ্যমন্ত্রী তোপ দাগেন, “করোনা পরিস্থিতি নিয়ে ভুল বোঝানো হচ্ছে। অনেক ভুয়ো খবর রাজনৈতিকভাবে প্রচার করা হচ্ছে। কিছু রাজনৈতিক দলের আইটি সেল এটা করছে। কাঁসর ঘণ্টা নিয়ে পথে নেমে ভুল বোঝানো হচ্ছে।” ক্ষোভপ্রকাশ করে বলেন, “কেন্দ্রের তথ্য নিয়ে কখনও চ্যালেঞ্জ করিনি। কারণ এখন রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জের সময় নয়।” এদিন সাংবাদিক বৈঠকে পরিসংখ্যান পেশ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে আরও ১৩ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন। যাঁদের আজই ছেড়ে দেওয়া হবে। সোমবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে এই কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, এই কমিটি তৈরি করা হচ্ছে রাজ্যের করোনা মোকাবিলার জন্য। কমিটিতে থাকবেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিত্ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়। থাকবেন বিশেষজ্ঞ চিকিত্সকরা। মুখ্যমন্ত্রী এই কমিটি গঠনের কথা জানানোর পাশাপাশি কমিটিতে কারা থাকবেন, তাও জানিয়ে দেন। এই কমিটিতে থাকবেন সরোজ সরকার, অভিজিত্ চৌধুরী, সুকুমার মুখোপাধ্যায়ের মতো বিশেষজ্ঞ চিকিত্করা। একই সঙ্গে ভাবা হচ্ছে লকডাউনের পর অর্থনৈতিক উন্নতিতে কী করতে হবে। মুখ্যমন্ত্রীকে সাহায্য করবে এই কমিটি।মমতা বলেন, মানুষ খুব কষ্টের মধ্যে রয়েছে এই লকডাউন পরিস্থিতিতে। করোনার সংক্রমণ রুখতে এছাড়া কোনও পথ খোলা ছিল না। বর্তমান পরিস্থিতিতে এখনও কতদিন এমন চলবে জানি না আমরা কেউই। তাই ওই কমিটির পরামর্শ মতো আমরা এগোব, কী করে সাধারণ মানুষের মুখে অন্য তুলে দেওয়া যায়, তাও পরামর্শ দেবে কমিটি।করোনা মোকাবিলায় কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যের পাশে দাঁড়ায়নি, রাজ্যকে প্রয়োজনীয় সাহায্য দেয়নি বলে এদিন সাংবাদিক বৈঠকে ফের অভিযোগ করেন মুখ্যমন্ত্রী। পরিসংখ্যান তুলে ধরে তিনি বলেন, রাজ্য সরকার এখনও পর্যন্ত ১১ লক্ষ PPE অর্ডার দিয়েছে। তারমধ্যে ২ লক্ষ ৬০ হাজার ১০০ হাতে এসেছে। বাকি ৮ লক্ষ হাতে পেতে বাকি। এদিকে কেন্দ্র এতদিনে মাত্র ৩ হাজার PPE পাঠিয়েছে। কেন্দ্রের পাঠানো সেই PPE-গুলি আবার ‘বিশেষ’ হলুদ রঙের বলেও তোপ দাগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আরও জানান, কেন্দ্র N95 মাস্ক দিয়েছে মাত্র ১০ হাজার। সেখানে রাজ্য সরকার ৭ লক্ষ ৯২ হাজার অর্ডার দিয়েছে। তারমধ্যে এখনও পর্যন্ত ৭৮ হাজার ৭৫০ হাতে এসেছে। রাজ্যের তরফে ২০ হাজার থার্মাল গান অর্ডার দেওয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি, নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে এদিন মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট জানান, কেন্দ্রীয় সরকার চা বাগান খোলার কথা বললেও এখনই তা সম্ভব নয়। তাঁর কথায়, পরিস্থিতি এখনও অনুকূল নয়। তাই চা বাগান খোলা সম্ভব হচ্ছে না। তবে করোনা মোকাবিলায় কিট ও সরঞ্জাম নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ করলেও, ৮ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রীর ডাকা বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রতিনিধি থাকবেন বলে জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।


