আজকের দিনেই কল্পতরু হয়েছিলেন রামকৃষ্ণ । তাই নতুন বছরের প্রথম দিনে সকাল থেকে ভিড় দক্ষিণেশ্বরে । হাতে ডালা নিয়ে পুজো দিতে দক্ষিণেশ্বরে বিপুল ভক্ত সমাগম।শুধু কলকাতা বা আশপাশের জেলা নয়, দূরদূরান্ত থেকে ভক্তের ঢল নামে ভোরের আলো ফোটার আগে থেকেই। পুরাকালে কল্পতরুর কাছে কিছু চাইলে তা নাকি পাওয়া যেত। অবশ্য চাওয়ার মতো করে চাইতে পারলে তবেই নাকি অভীষ্ঠ লাভ হত বলে বিশ্বাস। শ্রীরামকৃষ্ণও কল্পতরু হয়ে ভক্তদের মনোবাঞ্ছা পূর্ণ করেছিলেন বলে কথিত আছে। মনোবাঞ্ছা পূরণের জন্য প্রার্থনা করতে জন্য প্রতি বছর ১ জানুয়ারি ভবতারিণী মন্দিরে আসেন ভক্তের দল। ভবতারিণী মন্দিরে ভক্তদের ভিড় সামলাতে এদিন অতিরিক্ত নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়েছিল ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের পক্ষ থেকে। মন্দির প্রাঙ্গণে পুণ্যার্থীরা যাতে ঠিক মতো ভবতারিণীর মন্দিরে পুজো দিয়ে সুরক্ষিত ভাবে ফিরতে পারেন তার জন্য সরকারি স্তরে ব্যবস্থা করা হয়েছিল। রীতি অনুযায়ী গঙ্গাস্নান করে তবেই পুজো দেন ভক্তরা। তাই দক্ষিণেশ্বরে গঙ্গার ঘাটেও যথেষ্ঠ ভিড় থাকে এবং বিপদের আশঙ্কাও থাকে। সম্ভাব্য দুর্ঘটনা এড়াতে সেখানেও সুরক্ষা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছিল।
প্রসঙ্গত, শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংস তখন গলার ক্যান্সারে ভুগছেন, রয়েছেন কাশীপুর উদ্যানবাটিতে। ১৮৮৬ সালের ১ জানুয়ারি তিনি কিছুটা সুস্থ বোধ করেন। বাগানে চলাফেরা করেন। সেখানেই তিনি কল্পতরু রূপ ধারণ করেন। ভক্তরা বিশ্বাস করেন, তাঁর শিষ্য তথা অন্যতম শ্রেষ্ঠ নাট্যকার গিরিশ ঘোষের গলার অসুখ তিনি নিজের গলায় ধারণ করেছিলেন। ১৮৮৬ সালেই প্রয়াণ ঘটে রামকৃষ্ণ পরমহংসের। তাঁকে অবতাররূপে পুজো করেন ভক্তরা। কাশীপুর উদ্যানবাটিতে শ্রীরামকৃষ্ণের কল্পতরু হওয়ার স্মরণে ভক্তরা এই দিনটি বিশেষ ভাবে পালন করে আসছেন। বিশ্বজুড়ে রামকৃষ্ণের সঙ্গে যুক্ত সমস্ত স্থানে এই দিনটি স্মরণ করা হয় শ্রদ্ধা ও ভক্তির সঙ্গে। ১৮৮৬ সালের এই দিনেই রামকৃষ্ণ ভাবে সমাধিস্থ হয়েছিলেন এবং শিষ্যদের প্রশ্নের উত্তর দিয়েছিলেন।