হক জাফর ইমাম, মালদা: নার্সিং ট্রেনিং এ ভর্তি হতে না পারায় মানসিক অবসাদে ভুগে শেষ পর্যন্ত আত্মঘাতী হলেন এক ছাত্রী। একেই অভাবী পরিবারের মেধাবী ছাত্রী। নার্সিং ট্রেনিং করার মতো আর্থিক সামর্থ্য না থাকায় নার্সিংয়ে পাঠায় নি তাঁর পরিবার। নুন আন্তে পান্তা ফুরনো পরিবারের পক্ষে নার্সিংয়ের খরচ টানা সম্ভব নয়। অগত্যা কলেজে ভর্তি হতে হয় ওই ছাত্রীকে। এদিকে বন্ধুরা সব নার্সিংয়ে চলে যাওয়ার পর থেকে অবসাদে ভুগছিলেন ছাত্রীটি। তারি অবসাদে গলায় ফাঁস জড়িয়ে আত্মঘাতী হন ছাত্রীটি। ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে মালদা বৈষ্ণবনগর থানা এলাকায়। শোকের ছায়া ওই পরিবারে মধ্যে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতার নাম জয়শ্রী দাস(১৯)। মালদা বৈষ্ণবনগর থানার লক্ষ্মীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের লক্ষ্মীপুর বাউলটোলায় বাড়ি তাঁর। তিনি মালদা সাউথ কলেজে প্রথম বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। বাবা কৈলাশ দাস পেশায় মজুর। দিনে ১৫০-২০০ টাকা রোজগার করে থাকেন তিনি। কোনও দিন সেটাও হয় না। ৩ ভাই-বোনের মধ্যে জয়শ্রী ছিল সবার বড়। পরিবার সূত্রে জানা গেছে, রাতে বোন শিউলির সঙ্গে তিনি ঘুমিয়ে ছিলেন। গভীর রাতের দিকে শিউলির ঘুম ভাঙলে দেখতে পায় দিদির ঝুলন্ত দেহ। গলায় তাঁর ওর্ণা জড়ানো। বোনের চিৎকারে ছুটে আসেন পরিবারে অন্যরা। ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে দেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য পাঠায় মালদা মেডিক্যাল কলেজ এন্ড হাসপাতালের মর্গে। মৃতার কাকা বিকাশ দাস জানান,‘ভাইঝি পড়াশোনায় খুব ভাল। উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করার পর সে বাড়িতে। বলেছিল নার্সিং ট্রেনিংয়ে সে ভর্তি হবে। ছোট থেকেই ওর স্বপ্ন ছিল নার্সের চাকরি করার। কিন্তু দাদা মজুরের কাজ করে সংসার চালান। কোনও দিন কাজ হয়, আবার কোনও দিন সেটাও হয় না। এই অবস্থায় বাইরে রেখে পড়ানো তাঁর পক্ষে সম্ভব ছিল বলে কলেজে ভর্তি করা হয়।’ কাকা আরও জানান, ‘ভাইঝির অন্যান্য বন্ধুরা নার্সিংয়ে সুযোগ পেয়ে গেছে। তাদের অনেকে কলকাতায় গিয়ে ট্রেনিং করছ। এই নিয়ে অবসাদে ভুগছিল সে। সেখান থেকেই আত্মহত্যার পথ বেছে নেয় সে।’ বৈষ্ণবনগর থানার আইসি ত্রিদিব প্রামানিক বলেন,‘লক্ষ্মীপুরে এক ছাত্রীর আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। খুব অভাবী পরিবার তাদের। দেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে মালদা মেডিক্যাল কলেজ এন্ড হাসপাতালের মর্গে।’