কলকাতা জেলা

ফুসফুসে কুলের বিচি, বের করল মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের এএনটি-র চিকিৎসকরা

বন্ধুদের সঙ্গে খেলতে খেলতে কুল খাচ্ছিল । সেইসময় অন্যমনস্ক হয়ে গিলে ফেলে কুলের বীজ । প্রথমে গুরুত্ব দেয়নি । পরে বীজটি বুকের কাছে আটকে থাকায় শুরু হয় বুকে ও পেটে ব্যাথা । অবশেষে সাতদিন পর পিঙ্কির বুকে আটকে কুলের বীজ বের করল কলকাতা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের এএনটি বিভাগের চিকিৎসকরা । ঘটনাটি ঘটে শনিবার ১১ জানুয়ারি । বিকেল বেলা বন্ধুদের সঙ্গে খেলছিল পুরুলিয়ার বয়স ১২-র পিঙ্কি হাঁসদা । তখন অন্যমনস্ক হয়ে কুলের বীজ গিলে ফেলে এই বিপত্তি । পিঙ্কির কাছ থেকে বিষয়টি শুনে সঙ্গে সঙ্গে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে । এক্স রে করে সেখানকার চিকিৎসকরা দেখেন, পিঙ্কির ডানদিকের ফুসফুসটি কাজ করছে না । সাদা হয়ে গেছে । হাসপাতালে ভরতি করা হয় পিঙ্কিকে । কিন্তু দু’দিন পরেও তার শারীরিক অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় সিটি স্ক্যান করানো হয় । তাতেই দেখা যায় শিশুর ডানদিকের শ্বাসনালীতে কিছু একটা আটকে রয়েছে । যার ফলে সেখানে কোনও হাওয়া যাওয়া-আসা করতে পারছে না । আর তাই অকেজো হয়ে পড়েছে পিঙ্কির ফুসফুস । পিঙ্কির শারীরিক অবস্থা ক্রমাগত খারাপ হতে থাকায় তাকে আইসিইউ-তে রাখা হয় । কিন্তু তাতেও কোনও লাভ না হওয়ায় গতকাল তাকে নিয়ে আসা হয় কলকাতা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে । ফের পিঙ্কির সিটি স্ক্যান করা হয় । তাতেও একই জিনিস সামনে আসে । পিঙ্কির ডানদিকের শ্বাসনালীতে আটকে রয়েছে কুলের বীজ । এরপর শুরু হয় চিকিৎসা । প্রথমে ওষুধের মাধ্যমে পিঙ্কির শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল রাখার চেষ্টা করেন চিকিৎসকরা । কিন্তু আজ সকালে তীব্র শ্বাসকষ্ট শুরু হয় তার । অবনতি হতে থাকে শারীরিক অবস্থার । সেইসময় জরুরিভিত্তিতে ব্রংকোস্কপি করে আটকে থাকা কুলের বীজটি বের করা হয় । সময় লাগে ৪০ মিনিট । পিঙ্কির ব্রংকোস্কপি জন্য তৈরি চিকিৎসকদের দলে ছিলেন সৌমেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, দীপ্তাংশু মুখোপাধ্যায়, তুষার চক্রবর্তী, শুক্লা কর্মকার এবং প্রীতি রুবিনাথ । চিকিৎসকরা জানিয়েছে, আপাতত সুস্থ প্রীতি । ২-৩ দিনের মধ্যে স্বাভাবিকভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে পারবে সে ।