জ্যোতির্ময় দত্ত, কলকাতাঃ সম্পত্তির লোভে নিঃসঙ্গ বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের খুনের ঘটনায় লাগাম টানতে নতুন সিদ্ধান্ত নিচ্ছে রাজ্য সরকার। সোনারপুর ও নেতাজি নগরে দম্পতির জোড়া রহস্যমৃত্যুর ঘটনার প্রেক্ষিতে এই সিদ্ধান্ত বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই দুই ঘটনাতেই সম্পত্তি সংক্রান্ত বিবাদের ভূমিকা থাকতে পারে বলে প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন পুলিশকে দুটি খুনের ঘটনার বিস্তারিত তদন্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দোষীদের কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। পাশাপাশি তিনি বলেন নিহতদের সম্পত্তি যাতে কেউ দখল করতে না পারেন সে ব্যবস্থা করা হবে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘যদি কেউ মনে করে বাড়িতে স্বামী স্ত্রী একা থাকেন দেখার কেউ নেই বলে খুন করে সম্পত্তি দখল করে নেবে সেটা করা যাবে না।’ দখলদারি ঠেকাতে নেতাজি নগর ও সোনারপুরের নিহত দুই দম্পতির বাড়িতে তাদের নামে ফলক বসিয়ে দেওয়া হবে বলে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন। পথের কাঁটা সরিয়ে সম্পত্তি দখলের অপচেষ্টা রুখতে এ ধরনের ঘটনার ক্ষেত্রে পরবর্তীকালে একই ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন। মমতা বলেন, ‘ এধরনের পদক্ষেপ নিলে এটা একটা দৃষ্টান্ত তৈরি
হবে। পাড়া-প্রতিবেশী পঞ্চায়েত পুরসভা গুলোকেও নজর রাখতে হবে যাতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটে। কোনভাবেই এ ধরনের ঘটনা বরদাস্ত করা হবে না।’ নেতাজি নগর বা সোনার পুরে জোড়া খুনের ঘটনা কে বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে দেখছে না রাজ্য সরকার। সাম্প্রতিককালে বেশ কয়েকটি খুনের ঘটনায় সম্পত্তির লোভের তত্ত্ব উঠে এসেছে। অসহায় নিঃসঙ্গ বৃদ্ধ-বৃদ্ধা নিঃসন্তান দম্পতি রা প্রোমোটার বা দূর সম্পর্কের আত্মীয়দের সফট টার্গেট হচ্ছেন। যেন তেন প্রকারেন তাদের পথ থেকে সরিয়ে সম্পত্তির দখল পেতে খুন করতেও পিছপা হচ্ছে না দুষ্কৃতীরা। এই ধরনের প্রবণতা ঠেকাতেই রাজ্য সরকারের এই নতুন সিদ্ধান্ত বলে জানা গিয়েছে । প্রশাসনিক সূত্রে খবর কোন হত্যার ঘটনায় সম্পত্তি সংক্রান্ত বিবাদের সূত্র মিললে মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সেই সম্পত্তি যাতে বিক্রি না হয় সেজন্য থানা গুলিকে নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। পঞ্চায়েত পুরসভার মত স্থানীয় প্রশাসন কেও নজরদারি বাড়াতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি কলকাতা পুলিশের ধাঁচে রাজ্যের বাকি জেলাতেও থানা গুলিকে তাদের এলাকার নিঃসঙ্গ বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের তালিকা তৈরি করে তাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ফাইল চিত্র।