কলকাতা

‘ভুলে যাচ্ছেন আপনি একজন মনোনীত রাজ্যপাল, আর আমি একজন নির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রী’, ধনকড়কে পত্রাঘাত মমতার

রাজ্যে রেশন ব্যবস্থার ‘অনিয়ম’ থেকে শুরু করে কেন্দ্রের পাঠানো টিমের ‘অসহযোগিতা’র প্রশ্নে গত কয়েক দিন ধরেই রাজ্য সরকারের একপ্রকার সমালোচনায় অবতীর্ণ রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। তা সত্ত্বেও মুখ্যমন্ত্রী পাল্টা জবাব দেওয়া থেকে বিরতই ছিলেন। কিন্তু আজ বিকেলে রাজ্যপালকে চিঠি দিয়ে আক্রমণ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জগদীপ ধনকড়কে দীর্ঘ চিঠি লিখে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আপনি হয়তো ভুলে গিয়েছেন, আমি ভারতের গর্বিত এক রাজ্যের নির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রী। আপনি হয়তো এও ভুলে গিয়েছেন যে আপনি একজন মনোনীত রাজ্যপাল। আপনি আমার সরকার বা মন্ত্রিসভার সদস্যদের পরামর্শ বা ইনপুট নাও গ্রহণ করতে পারেন (পশ্চিমবঙ্গে রাজ্যপাল পদের দায়িত্ব নেওয়ার পর যা আপনি আকছার করছেন) কিন্তু ১৯৪৯ সালের ৩১ মে সংবিধান সভায় দাঁড়িয়ে বাবা সাহেব আম্বেদকর যে কথা বলেছিলেন, তা আপনার উপেক্ষা করা উচিত নয়।” এ কথা বলে, সংবিধান সভায় রাজ্যপালদের অধিকার প্রসঙ্গে আম্বেদকরের মত, উদ্ধৃত করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তার মাধ্যমে বোঝাতে চেয়েছেন, আঞ্চলিক সরকারের দৈনন্দিন বিষয়ে নাক গলানোর কোনও অধিকার নেই রাজ্যপালের। বস্তুত রাজ্যপালের সেই অর্থে কোনও ভূমিকাই নেই। এ ছাড়াও সরকারিয়া কমিশনের প্রসঙ্গও চিঠিতে উল্লেখ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।রাজ্যপালকে লেখা মুখ্যমন্ত্রীর চিঠি থেকেই জানা গিয়েছে যে গত কয়েক দিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধারাবাহিক ভাবে কয়েকটি চিঠি পাঠিয়েছিলেন ধনকড়। ২২ এপ্রিল বুধবার সকাল সাতটার সময় মুখ্যমন্ত্রীকে রাজ্যপাল একটি টেক্সট মেসেজও করেছিলেন। সেই মেসেজ এদিন চিঠিতে হুবহু তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সঙ্গে বলেন, যে নজিবিহীন ভাষা ও মেজাজে আপনি এসএমএস করেছেন তা আরও একবার এখানে তুলে ধরা দরকার। মমতাকে এসএসএম করে রাজ্যপাল লিখেছিলেন, “আপনার গতকালের জবাব দেখে ভীষণ অবাক হয়েছি। তাতে আমার পদের অবমাননা হয়েছে। আমরা দু’জনেই সাংবিধানিক পদে রয়েছি। এটা কারও জমিদারি নয় যে তাঁর খেয়ালখুশি মতো চলবে।”রাজ্যপালের এ হেন শব্দ চয়নের তীব্র সমালোচনা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেছেন, মুখ্যমন্ত্রী সম্পর্কে এই ধরনের শব্দ কীভাবে ব্যবহার করতে পারেন একজন রাজ্যপাল। এটা শুধু অসাংবিধানিক নয়, তার থেকেও বেশি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, “এ বার আপনি নিজেই বিচার করুন আপনি সংবিধান সম্মত কাজ করছেন কিনা। আপনি যেভাবে আমাকে আক্রমণ করছেন, সরকারের মন্ত্রীদের সমালোচনা করছেন, সাংবাদিক বৈঠক করে সরকারের সমালোচনা করছেন, যে ভাষায় চিঠি লিখছেন তা কতটা রাজ্যপাল সুলভ।” মুখ্যমন্ত্রীর ওই চিঠি পেয়ে রাজ্যপাল একটি টুইট করেন। তিনি বলেন, আমি রাতেই এ ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া জানাব। তার পর কাল আরও বিশদে বলব। রাজ্যের মানুষের সবটা জানা দরকার।

https://twitter.com/jdhankhar1/status/1253316083139743749