এনআরসি ও সিএএ নিয়ে ভয় পাওয়ার কারণ নেই। “কাউকে বাংলা ছাড়তে দেব না। সব্বাই ভাল থাকবেন। আমরা সবাই এদেশের নাগরিক এটা নতুন করে বলার কিছু নেই।” নৈহাটি উত্সবের উদ্বোধনে এসে নাগরিকত্ব ইস্যুতে উদ্বিগ্ন বঙ্গবাসীকে আশ্বাস দিয়ে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নৈহাটিতে শীতকালীন অনুষ্ঠানের উদ্বোধনে এসে ফের আশ্বস্ত করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নৈহাটি উত্সবে এসে সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়কে স্মরণ করার পরেই কেন্দ্রের মোদি সরকারকে আক্রমণ করলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । নৈহাটি উৎসবের উদ্বোধনী মঞ্চ থেকে গাছের চারা, সাইকেল উপভোক্তাদের হাতে তুলে দেওয়ার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখে চলে এল উদ্বাস্তুদের কথা। তিনি প্রথববার সংসদে যাওয়ার পর থেকে উদ্বাস্তুদের দাবি নিয়ে সরব বলে দাবি করেছেন। আর সিএএ নিয়ে তিনি বলেন, কাউকে বাংলা ছাড়া হতে দেব না। আপনাদের চিন্তা আমার মাথায় দিন। উৎসবের মঞ্চ থেকে আহ্বান জানান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “নাগরিকত্ব নিয়ে কোনও কোনও রাজনৈতিক দল মিথ্যে কথা বলছে। তারা কাগজ পাঠিয়ে নাগরিকত্ব দেবে। ভোটার লিস্টে আমার নাম আছে। কারোর দোকান আছে। কিছু না কিছু আছে সেটাই আমার নাগারিকত্ব। ভোট দিয়ে সরকার বানাই আবার নতুন করে নাগরিকত্ব দিতে হবে। যারা আজকে বলছে নাগরিকত্বের সার্টিফিকেট নিতে হবে। তারা কোন সার্টিফিকেটে ভোটে জিতেছে?” প্রশ্ন তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। বিজেপিকে কটাক্ষ করে বলেন, ” ২ বছর আগে বলেছিল আধার কার্ড না করলে টেলিফোনের লাইন পাবেন না। এখন আধারকে তো অন্ধকারে ঠেলে দিয়েছে। কি মজা, মানুষকে যা ভেবেছে তাই করাবে। দশ কোটি মানুষ বাংলায় আছে, আর ১০০০ লোককে নাগরিক করবে। পাঁচ বছর আপনি ছিলেন ভারতবাসী, হয়ে গেলেন বিদেশি। তারপরে আপনি আবেদন করবেন, তারপর ওনারা ঠিক করবে নাগরিকত্ব দেবে কি দেবে না। ভয় পাবেন না আমরা সবাই এদেশের নাগরিক এটা নতুন করে বলার কিছু নেই। এখন প্যান প্যান করে লাইন দিচ্ছে, এখন দেখুন লাইনটাই বেলাইন হয়ে গিয়েছে। আমি সেই লাইন দেব যে লাইনে আমার অধিকার প্রতিষ্ঠা হবে। সেই লাইনে লাইন দেব না যেখানে আমার অধিকার কেড়ে নেওয়া হবে। মরে গেলেও বাংলায় ডিটেনশন ক্যাম্প করতে দেব না। তোমার ভাগ্য ভাল ভোট দিয়ে সরকার গড়তে দিয়েছি। জনগণ বিপদে পড়ে এমন কাজ আমার দ্বারা হবে না। জনগণকে যতটা পারব সাহায্য করব, তাকে বিপদে ফেলব কেন। আমরা অধিকার কেড়ে নিতে দেব না।” সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতায় বিক্ষুব্ধ ছাত্রদের উপরে পুলিশি লাঠি চার্জের ঘটনায় ফের গর্জে উঠলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “আমরা ছাত্রবন্ধুদের অধিকার কেড়ে নেওয়া হবে। ১৮ বছরে ভোট দিয়ে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করবে আর আন্দোলন করতে পারবে না? ভোট দিয়ে সরকার বানাই আর নাগরিকত্ব নিতে হবে নতুন করে? ১৯৪৭ সালে দেশ স্বাধীনের সময় কোথায় ছিল। দলটা। ১৯৮০ সালে জন্মে সবাইকে বের করে দিতে এসেছে। আমরা দিল্লির লাড্ডুর কথায় বাংলায় চলি না। কয়েকদিনের জন্য এসেছে, বিজেপির ভাঙা ছাড়া গড়ার কোনও কাজ নেই।”

