ভাইরাল

রশ্মিকা মন্দনা ফেক ভিডিও কাণ্ডে সোশ্যাল সাইটগুলিকে কড়া নির্দেশিকা কেন্দ্রের

আল্লু অর্জুনের ‘পুষ্পা’ খ্যাত জনপ্রিয় নায়িকা রশ্মিকা মন্দনা-র ডিপ ফেক ভিডিয়ো ভাইরাল হওয়ার পর থেকেই দেশজুড়ে তুমুল বিতর্ক। লক্ষ লক্ষ নেটিজেনদের মত খোদ অমিতাভ বচ্চনও রশ্মিকার ডিপ ফেক ভিডিয়ো নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। রাশ্মিকার ডিপ ফেক ভিডিয়ো প্রমাণ করে দিয়েছে, আগামী দিনে আমাদের সবার ওপর বড় বিপদ অপেক্ষা করছে। আর ডিপ ফেক ভিডিয়ো নিয়ে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং প্ল্যাটফর্মগুলিতে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিল কেন্দ্রীয় সরকার।ডিপ ফেক ভিডিয়ো নিয়ে ফেসবুক, টুইটার-এর মত প্ল্যাটফর্মদের সতর্কবার্তা পাঠিয়েছে কেন্দ্র। এমনটা শোনা যাচ্ছে। এই ধরনের ঘটনায় সাত দিনের মধ্যে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রবিবার রাত থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় অভিনেত্রী রশ্মিকা মন্দনার একটি আপত্তিকর ভিডিয়ো ঘুরছে। যেখানে অভিনেত্রীকে একটি কালো রঙের পোশাকে লিফটে প্রবেশ করতে দেখা গিয়েছে। সেই পোশাকে রশ্মিকার বক্ষবিভাজিকা বেজায় উন্মুক্ত। এই ধরনের পোশাকে আগে কখনও নায়িকাকে দেখেননি তাঁর অনুরাগীরা। তাই শুরু থেকেই ওই ভিডিও-র সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছিলেন ভক্তরা। তবে ভিডিয়োর ওই মহিলা আদতে রশ্মিকা নন। কারসাজি করে নায়িকার মুখ বসানো হয়েছে ভিডিয়োর ওই মহিলার মুখে। কৃত্রিম মেধা তথা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্যবহার করে এই ধরেনের কাজ যে কী পরিমাণ সাংঘাতিক তা স্মরণ করালেন রশ্মিকা নিজেই। সংবাদমাধ্যমকে কেন্দ্রীয় ইলেকট্রনিক্স ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব বলেন, ‘‘‘ডিপফেক’ ভিডিও-র বাড়বাড়ন্তের মাঝে সমাজমাধ্যমগুলির কাছে ইতিমধ্যেই চিঠি পাঠানো হয়েছে। তারা ডিপফেক ভিডিও আটকাতে না পারলে তাদের বিরুদ্ধেও কড়া ব্যবস্থা নেবে সরকার।’’ সমাজমাধ্যমগুলির কাছে পাঠানো নোটিসে ২০০০ সালের তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৬৬ ডি ধারার উল্লেখ করা হয়েছে। এই ধারায় বলা হয়েছে, কোনও ব্যক্তি যদি কম্পিউটার প্রযুক্তি ব্যবহার করে কোনও ব্যক্তির ফোটো কিংবা ভিডিয়ো বিকৃত করে, তাতে কারসাজি করে সমাজমাধ্যমে আপলোড করে বা ছড়িয়ে দেয়, তা হলে তাঁর তিন বছরের জেল কিংবা ১ লক্ষ টাকা জরিমানা হতে পারে। রূপান্তরিত ছবির বিষয়ে কোনও রকম অভিযোগ আসার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই সেগুলি সাইট থেকে মুছে ফেলার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার ইতিমধ্যেই এক্স, ফেসবুক ও টুইটারকে নির্দেশ দিয়েছে। সমাজমাধ্যমের প্ল্যাটফর্মগুলি যাতে গ্রাহকদের ‘ফেক’ ভিডিয়ো বা ছবি শেয়ার করার বিষয় সতর্ক করে সেই বিষয়ও নোটিসে উল্লেখ করা হয়েছে। নিজের ‘ডিপফেক’ ভিডিয়ো দেখে ইতিমধ্যেই মুখ খুলেছেন অভিনেত্রী রশ্মিকা। ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে বিবৃতি দিয়ে লেখেন, ‘‘আমার যে ডিপফেক ভিডিয়ো ছড়িয়েছে সমাজমাধ্যমে, সেটা নিয়ে কথা বলতে গেলেও ভীষণ খারাপ লাগছে। আমি ব্যথিত। এই ঘটনা আমার কাছে খুবই ভয়ের। শুধু আমার একার জন্য নয়, যাঁরাই সারা ক্ষণ ক্যামেরার সামনে রয়েছেন তাঁদের জন্যও। ভাবলেই ভয় করছে, কী ভাবে প্রযুক্তির অপব্যবহার করা হচ্ছে। আজ এক জন নারী ও অভিনেত্রী হিসাবে আমি আমার পরিবার, বন্ধুবান্ধবদের কাছে কৃতজ্ঞ, যাঁরা আমাকে এই সময় সমর্থন করেছেন আমার পাশে দাঁড়িয়েছেন। কিন্তু ভাবুন, যদি আমি এক জন স্কুল-কলেজে পড়া ছাত্রী হতাম! আমার তো মাথা কাজ করত না এই পরিস্থিতিকে সামাল দেওয়ার জন্য। আমাদের সকলের উচিত সমষ্টিগত ভাবে এগিয়ে এসে এই ধরনের সমস্যা নিয়ে কথা বলা।’