শিয়ালদায় আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় চাঞ্চল্যকর তথ্য এল লালবাজারের হাতে । এসটিএফ সূত্রের খবর, ধৃতরা কলকাতায় ডাকাতির জন্য এসেছিলেন । তাঁরা প্রত্যেকেই উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা । মঙ্গলবার লালবাজারে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা প্রধান রূপেশ কুমার সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, “আমরা ইতিমধ্যেই এই বিষয়ে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের সঙ্গে কথা বলেছি । ধৃতদের কোনও প্রকারের ক্রিমিনাল রেকর্ড আছে কি না তাও খতিয়ে দেখছি ৷ ধৃতদের কাছ থেকে দুটি আগ্নেয়াস্ত্র, কার্তুজ, ম্যাগাজিন ও ছুরি ৷ বাজেয়াপ্ত আগ্নেয়াস্ত্রের মধ্যে একটি পিস্তল ইতালির ৷ ” এই ঘটনায় যাঁদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে তাঁরা হলেন, শিবশঙ্কর যাদব (26), রাহুল যাদব (27),আদিত্য মৌর্য (20), দেবাঙ্ক গুপ্ত (24) ৷ এছাড়াও রুকেশ সাহানি (30) নামে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে । লালবাজার সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতরা উত্তরপ্রদেশ থেকে কলকাতায় এসে লজে আত্মগোপন করেছিলেন ৷ ওই লজেও মঙ্গলবার কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ যায় এবং লজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে । তবে শুধুমাত্র কি ডাকাতির উদ্দেশ্যে অভিযুক্তরা জড়ো হয়েছিলেন, নাকি কোনও হামলার ছক ছিল, সেই বিষয়টিও ভালোভাবে খতিয়ে দেখা হচ্ছে গোয়েন্দাদের তরফে । লালবাজার সূত্রে আরও খবর, রাহুল যাদব হুগলির তারকেশ্বরে গিয়েছিলেন ৷ ধৃতদের সঙ্গে কল সেন্টারের যোগ থাকতে পারে ৷ তাঁদের কাছ থেকে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র উদ্ধার হয়েছে ৷ যেখান থেকে উত্তরপ্রদেশ ও বিহারের একাধিক ব্যক্তির নাম ঠিকানা পাওয়া গিয়েছে ৷ ধৃতদের লাগাতার জেরা করে প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, নথিপত্রে নাম থাকা ওই সকল ব্যক্তিরা বেআইনি অস্ত্র ব্যবসায়ী ৷ এই নিয়ে ইতিমধ্যে লালাবাজারের তরফে, মহারাষ্ট্র, বিহার ও উত্তরপ্রদেশে পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে ৷ সম্প্রতি তৃণমূল কাউন্সিলর সুশান্ত ঘোষের উপর আক্রমণের ঘটনা ঘটে । কসবায় নিজের বাড়ির সামনেই বন্দুকবাজদের সম্মুখীন হতে হয় তাঁকে । পরে জানা যায়, জমি সংক্রান্ত বিবাদকে কেন্দ্র করে এক ব্যক্তি উত্তরপ্রদেশের বেশ কয়েকজন দুষ্কৃতীকে এই ঘটনায় সুপারি কিলার হিসাবে ব্যবহার করেছিল । সেই ঘটনায় কলকাতা পুলিশের ক্রিমিনাল নেটওয়ার্ক নিয়ে প্রশ্ন উঠতে থাকে । প্রশ্ন উঠতে থাকে যে, কীভাবে এত বড় ঘটনা ঘটল, আর পুলিশ কিছুই জানল না । সেই ঘটনার পর শিয়ালদায় আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় ফের প্রশ্ন উঠেছে শহরের নিরাপত্তা নিয়ে । সুশান্ত ঘোষের মতো অন্য কোনও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব শিয়ালদায় আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারে ধৃতদের টার্গেটে ছিল না, সেই বিষয়টিও খতিয়ে দেখছেন গোয়েন্দারা ৷ কারণ যে প্রশ্নটি তদন্তকারীদের বিচলিত করেছে তা হল, ধৃতরা দাবি করছেন তাঁরা ডাকাতির উদ্দেশ্যে জড়ো হয়েছিলেন ৷ কিন্তু ধৃতদের কাছ থেকে যে সকল আগ্নেয়াস্ত্র ও সরঞ্জাম উদ্ধার হয়েছে, তা খতিয়ে দেখে তদন্তকারীদের প্রাথমিক অনুমান, অভিযুক্তরা তদন্তকে ঘুরপথে চালনা করার চেষ্টা করছেন ৷ ধৃতদের 9 তাারিখ পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে পাঠিয়েছেন ব্যাঙ্কশাল আদালতের বিচারক ৷