জেলা

সরকারি নির্দেশ অমান্য করে হাসপাতালে দেখা নেই চিকিৎসকদের

পূর্ব বর্ধমান: এখন পুজোর রেশ কাটিয়ে উঠতে পারেনি সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকরা৷ প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল পুজোর ছুটিতে সরকারি হাসপাতালে চিকিত্সকদের থাকবে৷ কিন্তু কার্যক্ষেত্রে তা বাস্তবিত হল না৷ ফলে চিকিত্সা পরিষেবা না পাওয়ার অভিযোগ উঠল৷কোথাও দেখাই মিলল না চিকিত্সকের৷ আবার কোথাও চিকিত্সক থাকলেও সঠিক চিকিত্সা না হওয়ায় রোগী মৃত্যুর অভিযোগ উঠল৷ এই চিত্রটাই ধরা পড়ল খোদ বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে৷ সরকারিভাবে বারবার ঘোষণা এবং প্রতিশ্রুতি দেওয়া সত্ত্বেও খোদ বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে পুজোর ছুটিতে পাওয়া গেল না মানসিক রোগ বিভাগের সিনিয়র চিকিত্সককে।ফলে দিনভর হয়রানির মুখে পড়লেন গলসী থানার পুলিশ কর্মীরা। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার গলসী থানার পুলিশ আসকরণ গ্রাম থেকে একজন বছর তিরিশের মানষিক রোগে আক্রান্ত ভবঘুরে যুবককে নিয়ে আসেন। সোমবার সকালে তাঁকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের মানষিক রোগ বিভাগে নিয়ে আসেন পুলিশ কর্মীরা।নিয়মানুযায়ী এই ধরণের মানষিক রোগাক্রান্ত ভবঘুরেদের হাসপাতালের মানসিক বিভাগের সিনিয়র চিকিত্সকের কাছ থেকে অনুমোদন নিয়ে তাদের আদালতে পেশ করতে হয়। এরপর আদালত এই চিকিত্সকের অনুমোদনের উপর ভিত্তি করেই ওই ভবঘুরেকে কোনো হোমে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু সোমবার সকাল ১০টা থেকে ২ টো পর্যন্ত গলসী থানার পুলিশ বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ওই ভবঘুরেকে ভরতি করার চেষ্টা করলেও তা পারেননি।এমনকি মানসিক বিভাগে কোনো সিনিয়র চিকিত্সক না আসায় ওই ভবঘুরের কাউন্সিলিংও করান যায়নি। পুজোর ছুটির জন্য এদিন মানষিক বিভাগে সিনিয়র কোনো চিকিত্সকই আসেননি। কয়েকজন মেডিসিন বিভাগের চিকিত্সক হাজির ছিলেন। কিন্তু তাঁরা এই ভবঘুরের কাউন্সিলিং করতে পারবেন না বলে জানিয়ে দেন। ফলে সমস্যায় পড়েন পুলিশ কর্মীরা।যদিও পুজোর ছুটি শুরুর আগেই বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আশ্বস্ত করে জানান, এই বছর পুজোর ছুটির সময় পুরোদমেই হাসপাতালের সমস্ত ধরণের পরিষেবা চালু থাকবে। হাজির থাকবেন সিনিয়র চিকিত্সকরাও। তাঁদের অন কলে থাকার কথাও জানানো হয়, যাতে ডাকা মাত্রই হাজির হতে পারেন হাসপাতালে।সোমবার দুর্গাপুজো, লক্ষ্মীপূজোর পর্ব শেষ হয়ে গেলেও হাসপাতালের মানষিক রোগ বিভাগের সিনিয়র ডাক্তার না থাকার ঘটনায় হাসপাতালের পরিষেবা নিয়েই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। যদিও এব্যাপারে হাসপাতালের ডেপুটি সুপার ডা. অমিতাভ সাহা জানিয়েছেন, এরকম কোনো ঘটনার কথা তিনি জানেন না। খোঁজ নিয়ে দেখছেন।অপরদিকে, সোমবার সকালে মন্তেশ্বর হাসপাতালে জ্বর ও বমির উপসর্গ নিয়ে ভরতি হওয়া এক রোগীর বিনা চিকিত্সায় মৃত্যুর অভিযোগ করেছেন পরিবারের লোকজন। মৃত রোগীর নাম মুন্সী মহম্মদ মুস্তাক (৫৫)। বাড়ি মন্তেশ্বর থানার রাইগ্রামে। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন সকালে তাঁকে মন্তেশ্বর হাসপাতালে ভরতি করার পর তার কোনো চিকিত্সাই হয়নি।