যে সম্পর্ক নিয়ে মানুষের মনে এতদিন এত প্রশ্ন ছিল তার এবার ইতি টানছেন পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায় এবং বাংলাদেশের অভিনেত্রী,সঞ্চালক, গায়িকা তথা, সমাজকর্মী রাফিয়াৎ রশিদ মিথিলা। গত ন’বছর কলকাতার সেরা ব্যাচেলরদের লিস্টে সৃজিতের নাম বরাবরই শীর্ষে থাকত। তবে শুক্রবার সন্ধেবেলার পর থেকে সেই লিস্টে আর তাঁর নাম থাকবে না। সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে শেষে সাত পাকে বাঁধা পরছেন সৃজিত ও মিথিলা। আজ ৬ ডিসেম্বর সন্ধেবেলা রেজিস্ট্রি করেই একে অন্যের সঙ্গে সারাজীবন কাটানোর জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ হচ্ছেন সৃজিত-মিথিলা। তাঁদের প্রেমপর্ব চলেছে বছরখানেক ধরে। বিয়ে উপলক্ষে মিথিলার বাবা-মা, পরিবারের লোকজন এসেছেন বাংলাদেশ থেকে। সৃজিতের মা, দিদি উপিস্থিত থাকছেন বিয়েতে। সৃজিত-মিথিলার প্রাণভোমরা মিথিলার মেয়ে আয়রা-ও থাকছে এই শুভদিনের সাক্ষী হয়ে। সৃজিতের টলিউডের পরিবার রুদ্রনীল, শ্রীজাত, ইন্দ্রদীপ, যিশু, নীলাঞ্জনা, অনুপম, পিয়া থাকছেন। বহুদিন ধরেই টলিপাড়ায় কান পাতলেই শোনা যাচ্ছিল বাংলাদেশের রাফিয়াৎ রশিদ মিথিলার সঙ্গে জনপ্রিয় পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের প্রেমের খবর। তাঁরা যে বিয়ে করছেন এখবরও মোটামুটি নিশ্চিত ছিল। অবশেষে এল সেই শুভক্ষণ। বিয়ের দিন মিথিলার প্রতি তাঁর ভালোবাসার কথা নিজের ইনস্টা হ্যান্ডেলে প্রকাশ্যে স্বীকার করে নিয়েছেন সৃজিত।তাঁর ছবি জাতিস্মরে কবির সুমনের লেখা গানের কথাতেই মিথিলার জন্যে তাঁর ভালোবাসার কথা প্রকাশ্যে স্বীকার করলেন সৃজিত। সাদা কালো ক্যানভাসে ফুটে ওঠে মনের মানুষের হাত ছুঁয়ে থাকা এক পারফেক্ট ফ্রেম। তিনি লেখেন, ‘ খোদার কসম জান, আমি ভালোবেসেছি তোমায়…’। টলিউডের বহু নায়িকাই কিন্তু স্বপ্ন দেখতেন মিসেস মুখার্জি হওয়ার। ইন্ডাস্ট্রির বহু কন্যার
সঙ্গেই সৃজিতের নাম জড়িয়েছে। তবে যার সঙ্গে সম্পর্কের কথা সবসময়ই পসিটিভ বডি ল্যাঙ্গোয়েজই প্রকাশ করেছেন সৃজিত, তিনি হলেন মিথিলা। বাংলাদেশে যাতায়াত তো ছিলই সৃজিতের। কখনও কাজের সূত্রে তো কখনও মিথিলার জন্য। এদিকে আবার সৃজিত যখনই বন্ধুদের সঙ্গে পার্টি করেছেন তখন প্রায় সবসময়ই মিথিলাকে দেখা গিয়েছে সেই পার্টিতে। অর্থাৎ নিজের ক্লোজ সার্কিটে এই বিষয়টা তিনি পরিষ্কার বুঝিয়ে দিয়েছিলেন ‘সি ইজ দ্য ওয়ান’। কলকাতা আন্তর্জাতিক ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল ২০১৯-এ বলিউড বাদশাহ শাহরুখ খানের সঙ্গে প্রেমিকা মিথিলাকে নিয়ে ছবিও তোলেন সৃজিত। সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই ছবি পোস্টও করেন পরিচালক। আজ বিয়ের সন্ধেবেলা সৃজিত পরবেন পাজামা, পাঞ্জাবি, জহরকোট। মিথিলা পরছেন লাল জামদানি। মিথিলার হাত ধরা নিয়ে সৃজিত বলেন, ‘যদিও ঘটনাটা ঘটছে ভারতবর্ষে, কিন্তু ঘটা উচিত ছিল ‘কলম-বিয়া’-তে’ (কারণ আজ বিয়েটা হচ্ছে রেজিস্ট্রি করে)। মিথিলা বলেন, ‘আমি আর সৃজিত দু’ জনেই কাজপাগল। আবার আমরা ভীষণ অলস। এটা বলে বোঝানো যায় কি না জানি না। কিন্তু এতেই আমাদের আসল মিল’। রেজিস্ট্রি ম্যারেজের পর টলিউডের সকল অতিথিদের নিয়ে বিশেষ পার্টি হবে। আজ মুখোপাধ্যায় বাড়িতে খাওয়াদাওয়া শুরু দুপুর থেকে। খাঁটি বাঙালি রান্না। সন্ধেবেলা বিরিয়ানি হবে। জানা যাচ্ছে, জামাইয়ের জন্য দু’ কেজি ওজনের চারটি ইলিশ এসেছে পদ্মা থেকে। তবে আগামী মার্চ মাসে বড় করে সৃজিত-মিথিলার রিসেপশন পার্টি দেওয়ারও পরিকল্পনা রয়েছে বলে শোনা যাচ্ছে। সৃজিত জানান, গত বছরের শেষ দিক থেকে তাঁর সঙ্গে মিথিলার আলাপ। তারপর এ বছর ১৭মার্চ সল্টলেকের অভিজাত হোটেলে এক মিডিয়া কর্তার জন্মদিনের পার্টিতে তাঁদের দু’জনকে প্রথম প্রকাশ্যে দেখা যায়। তার ২৬৪ দিন পর, সারা জীবন একে অপরের পাশে থাকার অঙ্গীকার করছেন সৃজিত-মিথিলা।