আবশেষে টানা ৪০ দিন বন্ধ মদের দোকান। তারপর দোকান খোলার খবর আগে থেকেই ছিল সুরাপ্রেমীদের কাছে। ভোর থেকেই বাজারের ব্যাগ দিয়ে লাইন রাখা শুরু হয়ে গিয়েছিল। আর দোকান খোলার পর তাতে সোশ্যাল ডিস্ট্যান্সিং বজায় থাকল কই। লাইন দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হয়েছে সোশ্যাল ডিস্ট্যান্সিং না মেনেই। মদের দোকানের কাছে ১৪৪ ধারা ভঙ্গের অভিযোগ উঠল সুরাপ্রেমীদের বিরুদ্ধে। কেননা ভিড় সামলাতে গিয়ে যথেষ্টই বেগ পেতে হয়েছে পুলিশকে। একটা সময়ে পুলিশ বার বার বললেও সতর্ক হননি সুরাপ্রেমীরা। শেষে জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ লাঠি চালায়। পুলিশের তরফে নিরাপত্তার আশ্বাস নে মেলায় অনেক জায়তেই মদের দোকান খোলেননি মালিকেরা। সোমবার সকাল ৯টা থেকে কালীঘাট দমকলের পাশে মদের দোকান। দোকানের শাটার তখনও খোলেনি, তার মধ্যেই দোকানের সামনে ফুটপাতে প্রায় ৬০০ মানুষের লম্বা লাইন। ১ ঘ ন্টা পরেই দোকানের তালা খুলে শাটার অর্ধেক তুললেন দোকানের এক কর্মী। সঙ্গে সঙ্গে ৬০০-৭০০ মানুষের লাইনটা এগিয়ে গেল। এক জনের ঘাড়ে হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন অন্যজন। সবাই চেষ্টা করছেন দোকানের কাউন্টারের কাছে আগে পৌঁছতে। আর তা নিয়েই শুরু হয় ঠেলাঠেলি ও বচসা। সেই ছবি দেখলে কেউ বলবে না, দেশ জুড়ে লকডাউন চলছে। কিছুক্ষণের মধ্যে সেখানে পুলিশ আসে। ওই ভিড় সামাল দিতে নাজেহাল হন তাঁরাও। রীতিমতো লাঠি নিয়ে পুলিশ তাড়া করে উত্সাহী সুরাপায়ীদের।শেষ পর্যন্ত পরিস্থিতি বেগতিক দেখে, পুলিশের নির্দেশে দোকান বন্ধ করে দেন মালিক। সোমবার সকাল থেকে একই ছবি দেখা গেল ভবানীপুরের যদুবাবুর বাজারের কাছে, মহিম হালদার স্ট্রিটের একটি মদের দোকানের সামনে। দেশের বিভিন্ন রাজ্যেও দেখা গেল একই রকম চিত্র। রাজ্য আবগারি এখনও রাজ্য সরকার কোনও বিজ্ঞপ্তি জারি করেনি। তবে সূত্রের খবর কলকাতার কনটেনমেন্ট জোন বাদ দিয়ে ১৪টি মদের দোকানের তালিকা তাঁরা তৈরি। যদি বিজ্ঞপ্তি জারি হয়, তাই সেই দোকানের মালিকদের বলা হয়েছে দোকান খোলার জন্য তৈরি থাকতে। শুধু এ রাজ্যে নয়, মদের দোকান খুলতেই উত্সাহী সুরাপায়ীদের দীর্ঘ লাইন দেখা গিয়েছে দেশের বিভিন্ন রাজ্যে। মদের কেনার হিড়িকের জেরে সোশ্যাল ডিস্ট্যান্সিংও লাটে উঠেছে কোথাও কোথাও। কর্নাটকে সকাল থেকেই দেখা গিয়েছে মদের দোকানের সামনে দীর্ঘ লাইন। একই ছবি দিল্লি,অন্ধপ্রদেশ, ছত্তীসগড়ের বিভিন্ন জায়গায়। দীর্ঘ দিন পর মদের দোকান খোলা পেয়ে কলকাতার মতো হুড়োহুড়ো শুরু হয় দিল্লির বিভিন্ন দোকানের সামনে। সেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠিও চালিয়েছে। দিল্লির কাশ্মীরি গেটের সামনে একটি মদের দোকানের সামনে জনতার ভিড় সামলাতে লাঠি চালিয়েছে পুলিশ। পরে পরিস্থিতি সামাল দিতে দিল্লিতেও দোকান বন্ধ করে দিতে হয়। কেন্দ্র সবুজ সঙ্কেত দিলেও পঞ্জাব, কেরলের মতো কয়েকটি রাজ্য মদের দোকান খুলবে না বলে জানিয়েছে।