দিল্লি থেকে কলকাতার ব্যাঙ্ক গ্রাহকদের টাকা তোলা অভিযোগ প্রথম এসেছিল শনিবার। তারপর থেকে এখনও পর্যন্ত প্রায় ৫৭ টি এটিএম জালিয়াতির অভিযোগ এসেছে পুলিশের কাছে। আর সেই বিষয়ে তদন্ত করতে গিয়েই বিস্ফোরক তথ্য এসেছে পুলিশের কাছে। এটিএম জালিয়াতির কৌশল নিয়ে গোয়েন্দাদের অনুমান, এবার অত্যাধুনিক স্কিমিং মেশিন ব্যবহার করা হয়েছে। যা দিয়ে একদিকে কার্ডের ম্যাগনেটিক স্ট্রিপের ট্র্যাক ১ ও ট্র্যাক ২-এর তথ্য কপি হয়ে যাচ্ছে। একইসঙ্গে কপি হয়ে যাচ্ছে চিপের তথ্যও। গোয়েন্দারা বলছেন, এই স্কিমিং ডিভাইসটি-ই সম্ভবত যুক্ত থাকছে ক্যামেরার সঙ্গে। আর সেই ক্যামেরা রাখা থাকছে এটিএম মেশিনের কিপ্যাডের উপরে। এরফলে কেউ ওই মেশিন থেকে টাকা তোলার সঙ্গে সঙ্গেই তাঁর কার্ডের পিন ও তথ্য তৎক্ষণাৎ চলে যাচ্ছে হ্যাকারদের হাতে। সেই তথ্য দিয়েই তৈরি হচ্ছে নকল কার্ড। আর সেই কার্ড ব্যবহার করেই পরক্ষণেই টাকা তুলে নিচ্ছে হ্যাকারদের দল। এটিএম জালিয়াতির ঘটনায় তদন্তে নেমে এমনটাই মনে করছেন তদন্তকারী অফিসাররা। পুলিশের সন্দেহ রোমানিয়া ও তুরস্কের একটি চক্র এর পিছনে কাজ করছে। গ্রাহকদের টাকা উধাও হয়ে যাওয়ার সময় নির্ধারণ করে একটি এটিএমের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে পুলিশ জানিয়েছেন, জালিয়াতরা পরিচয় লোকাতে মাথায় টুপি ও মুখোশ পরে এটিএমে ঢুকছে। দিনে দু’বার তারা এটিএমে ঢুকে টাকা লুঠ করছে। এর আগে কলকাতায় রোমানিয়া ও তুরস্কের গ্যাং এটিএম কার্ডের পিন হাতিয়ে টাকা লুঠ করেছিল। সেই দলের সঙ্গে এবারের জালিয়াতের কোনও যোগ আছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে চাইছে পুলিশ। রাজ্য পুলিশ জানিয়েছে, ইতিমধ্যে দিল্লিতে এ রাজ্যের পুলিশের একটি দল পৌঁছে গিয়েছে। তাঁরা তদন্তের কাজও শুরু করে দিয়েছেন। দ্রুত এটিএম গুলি চিহ্নিত করার চেষ্টা করছেন তাঁরা। সেখানে কারা আসছে, যাচ্ছে সেটিও নজর রাখবেন। যাঁদের টাকা খোয়া গেছে তাঁদের টাকা ফেরাতে ব্যাঙ্কের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে বলেও জানিয়েছে পুলিশ। জালিয়াতদের ধরতে দিল্লি পুলিশের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করছেন রাজ্যের গোয়েন্দারা। এদিন সকাল থেকেই ব্যাঙ্কে ছিল গ্রাহকদের ভিড়। সকলেই আতঙ্কিত ছিলেন। সকলেরই বক্তব্য, অনেকেরই অ্যাকাউন্ট থেকেই টাকা উধাও হয়ে যাচ্ছে। তাই আতঙ্কিত হয়ে গ্রাহকরা এসে হাজির হচ্ছেন ব্রাঞ্চে। তাঁরা কেউ পাশবুক আপটেড করছেন, কেই কীভাবে এটিএম কার্ডের পিন বদলাবেন সেটা খোঁজ করছেন।
প্রতীকী ছবি।