বকেয়া জিএসটি নিয়ে বেজায় সমস্যায় পড়ল রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবির সম্পূর্ণ উল্টো দিকেই কার্যত হাঁটতে চলেছে দেশ। রাজ্যগুলিকে বকেয়া টাকা তো দূর অস্ত। বরং বেশি সুদে রাজ্যগুলিকে বাজার থেকে ধার নেওয়ার পথেই হাঁটাতে চলেছে কেন্দ্র। গত মাসে সব রাজ্যের সঙ্গে বৈঠকে রাজ্যগুলি যখন বকেয়া জিএসটি দেওয়ার কথা কেন্দ্রকে বলেছিল, তখন কেন্দ্রের তরফ থেকে দুটি প্রস্তাব রাখা হয়েছিল। প্রথমত, বাজার থেকে চড়া সুদে রাজ্যগুলি ধার করে নিজেদের প্রয়োজন মেটাক। দুই, রাজ্যের যে ঘাটতি রয়েছে, সেই অনুযায়ী ঋণ রাজ্যগুলি কেন্দ্রের কাছ থেকে নিতে পারবে। তবে এই ক্ষেত্রেও সুদ দিতে হবে। অর্থাত্ রাজ্যের বকেয়া টাকা যে দেওয়া হবে না, তা স্পষ্ট। এরপরেই সম্প্রতি দেশের ১৩টি রাজ্য ইতিমধ্যেই কেন্দ্রকে জানিয়ে দিয়েছে, তারা বাজার থেকে ঋণ নেওয়ার পক্ষপাতি। ফলে মনে করা হচ্ছে, সিংহভাগ রাজ্য এই মতামত জানানোর কারণে কেন্দ্র এই পথেই এগোবে। ইতিমধ্যেই উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, অন্ধ্রপ্রদেশ, বিহার, গুজরাত, হরিয়ানা, কর্নাটক, সিকিম, ওড়িশা, উত্তরাখণ্ড, মেঘালয় ও ত্রিপুরা বাজার থেকে ঋণ নেওয়ার বিষয়ে মত দিয়েছে। দ্বিতীয় বিকল্পের জন্য মত দিয়েছে শুধু মণিপুর। উল্লেখ্য, এই রাজ্যগুলি সবই বিজেপি শাসিত কিংবা বিজেপির সঙ্গীদের দ্বারা শাসিত রাজ্য। এক দু’দিনের মধ্যে আরও ৬টি রাজ্য তাদের বিকল্প জানাবে বলেই জানা গিয়েছে। এই রাজ্যগুলি হল-গোয়া, অসম, অরুণাচল প্রদেশ, নাগাল্যান্ড, মিজোরাম ও হিমাচল প্রদেশ। মনে করা হচ্ছে এরাও বাজার থেকে ঋণ নেওয়ার কথাই জানাবে। অর্থাত্ সংখ্যাগরিষ্ঠ রাজ্যই কেন্দ্রের শর্তে মেনে নেওয়ার দিকে হাঁটছে। ফলে মনে করাই যায় বাকি রাজ্যদের উপরেও এই শর্তই চাপবে।তবে বিরোধী রাজ্যগুলির বক্তব্য, যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর শর্তকে লঙ্ঘন করছে কেন্দ্র। জিএসটি বাস্তবায়নের সময় কেন্দ্র কথা দিয়েছিল, নতুন কর ব্যবস্থা প্রবর্তণের কারণে যে ঘাটতি হবে তা প্রথম পাঁচ বছর মেটাবে কেন্দ্র। কিন্তু এখন তা না করে রাজ্যগুলিকে বাজার থেকে ঋণ নিতে জোর করছে। মূলত বিরোধী রাজ্যগুলি, পশ্চিমবঙ্গ, মহারাষ্ট্র, রাজস্থান, তামিলনাড়ু, তেলেঙ্গানা, কেরলের মতো হাতে গোনা পাঁচ-ছটি রাজ্য রয়েছে একদিকে। এখন দেখার নিজেদের আর্থিক সমস্যা মেটাতে কী করে এই রাজ্যগুলি।