সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের প্রয়াণের খবর পেয়েই ভেঙে পড়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার রাতে শিলিগুড়িতে বসেই গীতশ্রীর প্রয়াণ খবর পেয়ে কার্যত বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন তিনি। সংবাদমাধ্যমকে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে শোকার্ত কণ্ঠে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ভাবতেই পারছি না সন্ধ্যাদি এত তাড়াতাড়ি চলে যাবেন। আমি একজন শুভানুধ্যায়ীই নয়, একজন অভিভাবককেও হারালাম। আজ অনেক কথা মনে পড়ে যাচ্ছে। বাংলা সঙ্গীত জগতের যে ক্ষতি হলো, তা কোনও দিনই পূরণ হবে না।’ শুধু তাই নয়, প্রিয় মানুষের শেষকৃত্যে হাজির হওয়ার জন্য উত্তরবঙ্গ সফর কাটছাঁট করারও পরিকল্পনা নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বুধবার বিকালে কলকাতায় ফিরে আসার চেষ্টা চালাচ্ছেন তিনি। প্রয়াত শিল্পীর প্রয়াণে পাঠানো শোকবার্তায় মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, ‘কিংবদন্তীপ্রতিম সঙ্গীতশিল্পী, অমর সুরসাধিকা সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের প্রয়াণে আমি গভীরতম শোক প্রকাশ করছি। তিনি আজ কলকাতায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। বয়স হয়েছিল ৯০ বছর। দশকের পর দশক ধরে তিনি তাঁর অবিস্মরণীয় কণ্ঠমাধুর্যের জাদুতে
শ্রোতাদের মুগ্ধ করে রেখেছিলেন। তাঁর গাওয়া অসংখ্য গান সঙ্গীতপ্রেমীদের পছন্দের তালিকায় আজও শীর্ষে রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ সরকার তাঁকে ২০১১ সালে ‘বঙ্গবিভূষণ’, ২০১২ সালে ‘সঙ্গীত মহাসম্মান’ ও ২০১৫ সালে ‘ওস্তাদ বড়ে গোলাম আলি বিশেষ সঙ্গীতসম্মান’ প্রদান করে। এছাড়া তিনি ভারত নির্মাণ অ্যাওয়ার্ড, ন্যাশনাল ফিল্ম অ্যাওয়ার্ড, বিএফজেএ অ্যাওয়ার্ড সহ বহু সম্মানে ভূষিত হন। তিনি আমৃত্যু পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সঙ্গীত আকাদেমীর সভাপতিও ছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে সঙ্গীত জগতের অপূরণীয় ক্ষতি হল। স্বর্ণকণ্ঠী গীতশ্রী সন্ধ্যাদির সঙ্গে আমার দীর্ঘদিনের হৃদ্য সম্পর্ক ছিল। তাঁর মৃত্যুতে আমি আমার অগ্রজাকে হারালাম। আমি সন্ধ্যাদির পরিবার-পরিজন ও অসংখ্য অনুরাগীকে অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি।’ সরকারি কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করতে এখন উত্তরবঙ্গের কোচবিহারে রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী ৷ সেখান থেকেই তিনি সংবাদমাধ্যমকে জানান, এই খবর পেয়ে তিনি শোকাহত ৷ আরও ভালো চিকিৎসার ব্যবস্থা করছিল রাজ্য সরকার ৷ কিন্তু সব প্রচেষ্টা বিফলে গেল ৷উত্তরবঙ্গ সফর থেকে মুখ্যমন্ত্রীর আগামী পরশু, বৃহস্পতিবার ফেরার কথা ছিল ৷ কিন্তু তিনি জানিয়েছেন যে কোচবিহারের অনুষ্ঠান সেরে আগামিকাল বিকেলের মধ্যে কলকাতায় ফেরার চেষ্টা করবেন ৷