তিন বছরের একরত্তিকে দিনের পর দিন সূচ বিঁধিয়ে যন্ত্রণা দিয়ে হত্যা। ২০১৭ সালের সেই ঘটনায় শিউরে উঠেছিল গোটা বাংলা। সাড়ে তিন বছরের ফুটফুটে শিশুকন্যা এমন নারকীয় ভাবে হত্যার অভিযোগ উঠেছিল তাঁর মা এবং মায়ের তান্ত্রিক প্রেমিকের উপরে। ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় ২০২১ সালে ফাঁসির সাজা শোনায় পুরুলিয়া আদালতের ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট। সেই রায় পরিবর্তন করে বৃহস্পতিবার ফাঁসি সাজা রদের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি বিভাসরঞ্জন দে-এর ডিভিশন বেঞ্চ। হাইকোর্টে দুই বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ এদিন পুরুলিয়া সূচ কাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত মঙ্গলা গোস্বামী এবং তাঁর প্রেমিক সনাতন ঠাকুরের ফাঁসির সাজা থেকে মুক্তি দিল। তবে একই সঙ্গে উচ্চ আদালত জানায়, আগামী ৩০ বছর অবধি মুক্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন না সনাতন। ফাঁসি রদ করে দুজনকেই এদিন যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা শোনায় আদালত। উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ১১ জুলাই তিন বছরের শিশুকে নৃশংসভাবে সূচ ফুটিয়ে খুন করে মা মঙ্গলা গোস্বামী ও তার প্রেমিক সনাতন ঠাকুর। পেশায় কীর্তনশিল্পী তথা ওঝা সনাতনের বিরুদ্ধেই শিশুটির শরীরে সাতটি সুচ ফুটিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় ভর্তি করা হয় মঙ্গলার তিন বছরের শিশুকন্যাকে। পরীক্ষা করে দেখা যায় তার নিম্নাঙ্গে সাতটি সূচ ঢোকানো আছে। তাকে সেখান থেকে প্রথমে বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ এবং পরে কলকাতায় SSKM হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। শিশুটির শরীর থেকে বের করা হয় সাতটি সূচই। কিন্তু, তাতেও শেষ রক্ষা হয়নি। চিকিৎসকদের সব চেষ্টা ব্যর্থ করে সেখানে ২১ জুলাই মৃত্যু হয় শিশুটির।