উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজে হাসপাতালের গাফিলতিতে মৃত্যু হল এক ডেঙ্গু আক্রান্তের। প্রাণ বাঁচাতে দরকার ছিল রক্তের প্লেটলেট তার বদলে দেওয়া হয় মুসাম্বি জুস। আশ্চর্যের বিষয় সেই রক্তের প্লেটলেট কেনা হয়েছিল হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্ক থেকে। বুধবার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ৩২ বছর বয়সী এক ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যু হয়। এরপরই ধুন্ধুমার কাণ্ড বেঁধে যায় হাসপাতালে। মৃতের আত্মীয়দের অভিযোগ, প্লাজমা বা প্লেটলেটের পরিবর্তে ‘মুসাম্বির জুস’ দেওয়া হয় রোগীকে। যার ফলেই মৃত্যু হয় যুবকের। প্রয়াগরাজ-এর যে বেসরকারি হাসপাতালটির বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, সেটি সিল করে দিয়েছেন চিফ মেডিক্যাল অফিসার। প্রয়াগরাজের অ্যাডিশনাল চিফ মেডিক্যাল অফিসার সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া বিবৃতিতে আরও জানিয়েছেন, স্যাম্পল টেস্টের রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত ওই বেসরকারি হাসপাতালটি সিল থাকবে। এই ঘটনা সামনে আসতেই প্রয়াগরাজের সিএমও নানক শরণ জানান, ‘বিষয়টি তদন্ত করতে তিন সদস্যের একটি প্যানেল গঠন করা হয়েছে’ । সিএমও নানক শরণ আরও বলেন, “তদন্ত চলছে, মৃতের পরিবারের পক্ষ থেকে নির্দিষ্ট অভিযোগ করা হয়েছে। সেই সব দিক তদন্ত করে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” মৃত প্রদীপ পান্ডের শ্যালক সৌরভ ত্রিপাঠির কাছ থেকে জানা যায়, ১৪ অক্টোবর প্রদীপ বাবুর স্বাস্থ্যের অবনতি হয় এবং তাকে প্রয়াগরাজের পিপলগাঁও এলাকার গ্লোবাল হসপিটাল অ্যান্ড ট্রমা সেন্টারে ভর্তি করা হয়। পরীক্ষার পর তার ডেঙ্গু ধরা পড়ে। ১৬ অক্টোবর, বলা হয়েছিল যে তার আট ইউনিট প্লেটলেট প্রয়োজন। আমরা পরিবারের মধ্যে থেকে তিনটি ইউনিটের ব্যবস্থা করা হয়। হাসপাতালের তরফে আরও ৫ইউনিট প্লেটলেটের জন্য ২৫ হাজার টাকা দাবি করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সেই দাবি মত টাকাও দেওয়া হয়। এদিকে প্লাজমা এবং মুসাম্বি জুসের রঙ প্রায় একইরকম। অভিযোগ, প্লাজমার পরিবর্তে ব্লাড ব্যাঙ্ক থেকে রোগীর পরিবারকে মুসাম্বি জুস ভর্তি সিল করা পাউচ বিক্রি করা হয়। রোগীর চিকিৎসাও হয় তা দিয়ে। অবস্থা খারাপ হওয়ায় আরেকটি বেসরকারি হাসপাতালে পাঠানো ওই ডেঙ্গি রোগীকে। সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। দ্বিতীয় যে হাসপাতালে ডেঙ্গি রোগীকে ভর্তি করা হয়েছিল, সেখানেই জানা যায়, প্লাজমা নয়, পাউচে আসলে কেমিক্যাল এবং মুসাম্বি জুস মেশানো ছিল। মৃতের শ্যালক বলেন, ‘ শেষ প্যাকেটটি আমার কাছে রয়েছে। আমি তা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তরিত করব”। প্রয়াগরাজের এসএসপি শৈলেশ পান্ডে বলেছেন, “আমরা ইতিমধ্যেই এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছি। প্লেটলেটের বেআইনি সরবরাহে জড়িত গ্যাংকে ধরার চেষ্টা করছি। এর আগেও আমরা অবৈধভাবে রক্ত ও প্লাটিলেট সরবরাহের দায়ে ১২ জনকে গ্রেফতার করেছি”।