পার্লারে কাজ করেন শাগুফতা। কিন্তু, কোন পার্লার, সেখানে কী কাজ হতো, তা অজানা ছিল শাগুফতা ওরফে চাঁদনির পরিবারের কাছেও। শুধু তাই নয়, প্রেমিক রবীন্দ্রকুমারও সেবিষয়ে কিছু জানতেন না। সম্প্রতি তরুণীর ফোনের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট নজরে আসে তাঁর। সেই সূত্রেই শাগুফতার একাধিক পুরুষের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কথা জেনে ফেলেন প্রেমিক। এরপরেই তাঁদের মধ্যে শুরু হয় তীব্র অশান্তি। তার জেরেই বৃহস্পতিবার ভোরে আত্মঘাতী হন শাগুফতা পারভিন (২৪) ও তাঁর প্রেমিক ব্যবসায়ী রবীন্দ্রকুমার চৌরাসিয়া (৪৫)। প্রাথমিক তদন্তের পর এমনটাই জানতে পেরেছে পুলিশ। সূত্রের খবর, রবীন্দ্রকুমার পাঁচপাতার সুইসাইড নোটে লিখেছেন, কাজের সূত্রেই একাধিক পুরুষের সঙ্গে আলাপ হয় চাঁদনি তথা শাগুফতার। সেই পুরুষদের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কেও যুক্ত হয়েছিলেন তরুণী। সম্প্রতি তরুণীর হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট দেখেই এই তথ্য জানতে পারেন রবীন্দ্রকুমার। চ্যাটের স্ক্রিনশট তুলে নিজের ফোনে পাঠিয়ে রেখেছিলেন মাঝবয়সি ওই ব্যবসায়ী। সুইসাইড নোটের সঙ্গে সেই সমস্ত স্ক্রিনশট ঘটনাস্থলে রেখে আত্মঘাতী হন তিনি। মোট ১০৯ পাতার স্ক্রিনশট উদ্ধার হয়েছে হরিদেবপুরের চাঁদার ভিলেজের ওই ফ্ল্যাট থেকে। তা খতিয়ে দেখে পুলিস জানতে পেরেছে, তরুণীর ‘কীর্তি’ জেনে ফেলতেই রবীন্দ্রকুমারকে ব্ল্যাকমেল করা শুরু হয়। ধর্ষণের অভিযোগে ফাঁসিয়ে দেওয়ার ভয় দেখানো হতো বলেও সুইসাইড নোটে লিখেছেন ব্যবসায়ী। এই নিয়ে মাঝেমধ্যেই দু’জনের মধ্যে ঝামেলা হতো। সম্প্রতি যুগলের মধ্যে বিবাদ চরমে ওঠে। দু’জন আলাদা থাকতে শুরু করেছিলেন। শাগুফতা এন্টালির কনভেন্ট রোডে তাঁর মায়ের কাছে থাকছিলেন। এদিন তাঁর বড় দিদি বলেন, কিছু বাজে ছেলের সঙ্গ নিয়েছিল ও। সে জন্যই এমন ঘটনা ঘটে গেল। লালবাজার জানিয়েছে, বুধবার ওই যুগল হরিদেবপুরের ফ্ল্যাটে আসেন। গভীর রাতে দু’জনের মধ্যে তীব্র বাদানুবাদ হয়। পরেরদিন সকালে অনেক বার স্বামীকে ফোনে না পেয়ে হরিদেবপুরের ফ্ল্যাটে আসেন রবীন্দ্রকুমারের আইনি স্ত্রী। তবে ফ্ল্যাটে কোনও সাড়াশব্দ না পেয়ে পুলিসের দ্বারস্থ হন তিনি। এরপরেই হরিদেবপুর থানার পুলিস ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙে দেহ দু’টি উদ্ধার করে। পুলিশ সূত্রের খবর, শুক্রবার মৃতদেহ দু’টির ময়নাতদন্ত করা হয়। লালবাজার জানিয়েছে, প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী, দু’জনেই গলায় ওড়নার ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন।