কার্ত্তিক গুহ, ঝাড়গ্রাম: সোমবার ঝাড়গ্রাম জেলায় বিভিন্ন জায়গায় পালিত হল করম পরব। ঝাড়গ্রাম জেলায় সরকারিভাবে করম পরব পালিত হল। জঙ্গলমহলে বিভিন্ন গ্রামে কুর্মি সহ বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মূলবাসীরা মেতে ওঠেন এই পরবে। এদিন ঝাড়গ্রাম শহরে করম পুজোটি হয় জেলাশাসকের অফিস প্রাঙ্গণে। আদিবাসী উন্নয়ন বিভাগ ও পশ্চিমবঙ্গ সরকারের উদ্যোগে করম পরব পালিত হয়। সেখানে একটি করম গাছের নীচে করম পুজো হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ঝাড়গ্রামের জেলাশাসক আয়েষা রানি এ ছাড়াও বিশিষ্ঠ আধিকারিকরা, পরে জেলাশাসকের সভাকক্ষে করম পরব উপলক্ষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। জেলাশাসক আয়েষা রানি এ বলেন, সামাজিক রীতি-নীতি মেনে সরকারিভাবে পরব পালিত হয়েছে। এছাড়াও ঝাড়গ্রামের গড় শালবনীর লবকুশ গ্রামে, সাঁকরাইল ব্লকের দিগারবাঁধ ও কুকড়াখুপি গ্রামে, গোপীবল্লভপুর-২ ব্লকের বনগড়া, পদিমা গ্রামে করম পরব সাড়ম্বরে পালিত হয়েছে। শস্যের সমৃদ্ধি ও সন্তান কামনায় শরৎকালে করম গাছকে দেবজ্ঞানে পুজো করেন জঙ্গলমহলের আদিবাসী ও মূলবাসীরা। তারপর সেই গাছের ডাল কেটে শোভাযাত্রা করে বাড়ির প্রাঙ্গণে নিয়ে যাওয়া হয়। সবাই মিলে করম গানের মধ্য দিয়ে আঙিনার মাঝে করম ডাল পোঁতেন ‘লায়া’(পূজারী)। শরতের আগমনে শস্য ও সন্তানের সমৃদ্ধি কামনায় জঙ্গলমহলে মূলবাসীদের করম পরব। জঙ্গলমহলের গ্রামগঞ্জে মূলত কুড়মি (মাহাতো) সম্প্রদায়ের মূলবাসীরা এ দিন মেতে ওঠেন উৎসবে। সেই সঙ্গে ভূমিজ, বাগাল, কামার, কুমোর সম্প্রদায়ের মানুষজনও উৎসবে সামিল হন। ভাদ্র মাসের শুক্লপক্ষের একাদশীর দিনটিকে স্থানীয়রা বলেন পার্শ্বএকাদশী। প্রচলিত বিশ্বাস, এই বিশেষ তিথিতে নররূপী নারায়ণ অনন্ত শয্যায় পাশ ফিরে ভূলোকের দিকে তাকিয়েছিলেন। যে দিকে নারায়ণের দৃষ্টি পড়েছিল, পৃথিবীর সেই অংশ হয়ে উঠেছিল শস্যশ্যামল। এমনই এক বিশেষ দিনে কুড়মি সম্প্রদায়ের মধ্যে করম ঠাকুরের পুজোর প্রচলন করেছিলেন কর্মু নামে এক রাজপুত্র। এই তিথিতে করম গাছের ডালকে দেবজ্ঞানে পুজো করেন জঙ্গলমহলের মূলবাসীরা।