৬২ রানে মুম্বইকে হারিয়ে ফাইনালে গুজরাত টাইটান্স। গত বছর ফাইনালে গিয়েছিল হার্দিক পান্ডিয়ার দল। ২০২২ সালের ফাইনালে রাজস্থান রয়্যালসকে হেলায় হারিয়েছিল গুজরাত। তবে রোহিত শর্মার দলকে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে ১৭১ রানে গুটিয়ে দেওয়ার পর, ২৮ মে-র মেগা ফাইনালে বিপক্ষে মহেন্দ্র সিং ধোনির চেন্নাই সুপার কিংস। ১৬ বছরে এই নিয়ে ১০বার ফাইনালে গিয়েছে ‘ইয়েলো আর্মি’। এরমধ্যে আবার পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন। ‘ক্যাপ্টেন কুল’-এর এমন দলকে গতবারের জয়ী দল হারাতে পারবে? এটাই দেখার। বড় ম্যাচ জিততে হলে তারকাকে তো এগিয়ে আসতেই হবে। কিন্তু এবারও রোহিত পারলেন না। ফিল্ডিং করতে গিয়ে চোখে চোট পেয়েছিলেন ঈশান কিশান। ফলে ওপেন করতে পারলেন। শুভমনের শতরানে আগেই ব্যাকফুটে ছিল মুম্বই। ঈশান ক্রিজে না যেতে সমস্যা আরও বেড়ে গেল। রোহিত বাড়তি দায়িত্ব নিলে ম্যাচের ফলাফল অন্য রকম হতেই পারত। কিন্তু সেটা হতে দিলেন না মহম্মদ শামি। নেহাল ওয়াধেরাকে ফেরানোর পর তাঁর শিকার ছিলেন রোহিত। ২১ রানে ২ উইকেট চলে যেতে শুরুতেই চাপে পড়ে যায় মুম্বই। কিন্তু তাই বলে মুম্বই কিন্তু হার মানেনি। চাপের মুখে চুপসে না গিয়ে পালটা মার দিতে শুরু করে দেন তিলক ভার্মা ও সূর্য কুমার যাদব। বিপক্ষে শামি-রাশিদ খান-মোহিত শর্মার মতো বোলার থাকলেও, তিলক দ্রুত রান তুলছিলেন। মাত্র ১৪ বলে ৪৩ রান করে তিলককে থেমে যেত হল। তাঁকে বোল্ড করে হার্দিকের মুখে হাসি ফিরিয়ে দেন আফগানিস্তানের তারকা স্পিনার। ফলে ৭২ রানে ৩ উইকেট হারায় মুম্বই। এত রান চেজ করা কঠিন। সেটা জানতেন ক্যামেরুন গ্রিন ও সূর্য। হাত খুলে রান তুলছিলেন দুই ব্যাটার। কিন্তু মুম্বইয়ের স্কোরবোর্ডে যখন ১২৪ রান, তখন আবার ধাক্কা খেল রোহিতের দল। কারণ জশুয়া লিটল বল হাতে নিয়েই ফিরিয়ে দিলেন ক্যামেরুন গ্রিনকে। ২০ বলে ৩০ রান করে অজি ব্যাটার ফিরতেই মুম্বইয়ের চাপ বাড়ে। স্বভাবতই চাপ বাড়তে থাকে ফর্মে থাকা সূর্যের উপরেও। তবুও খেই হারিয়ে যাওয়া মুম্বইয়ের হয়ে একাই লড়লেন ‘স্কাই’। নিজের মেজাজে ব্যাট চালিয়ে এল পঞম অর্ধ শতরান। তবে শেষরক্ষা হল না। ১৪.৩ ওভারে মোহিত শর্মার মিডল স্টাম্পের বলকে ফাইন লেগের উপর দিয়ে মারতে গেলে বোল্ড হয়ে যান সূর্য। ৩৮ বলে ৬১ রানে সূর্য নিভে যেতেই মুম্বই ইনিংসের শেষের শুরু হয়ে গেল। শুধু সূর্য নয়, ১০ রানে ৫ উইকেট নিয়ে বিপক্ষের মিডল অর্ডার ভেঙে দিলেন এবার গুজরাতে ‘নেট বোলার’ হিসেবে আসা অভিজ্ঞ মোহিত। টিম ডেভিড ক্যাচটা লুফে নিলে ম্যাচ জিতে হাসি মুখেই মাঠ ছাড়তে পারতেন রোহিত। কিন্তু সেটা আর হল কোথায়! শুভমন রান তখন ৩০। ক্রিস জর্ডনের বলে তাঁর ক্যাচ ফেলে দেন টিম ডেভিড। ব্যস সেই তাণ্ডব শুরু করলেন গুজরাতের ওপেনার। আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে তাঁর শতরান এল মাত্র ৪৯ বলে। দেখতে দেখতে চলতি আইপিএল-এ শতরানের হ্যাটট্রিক সেরে নিয়েছিলেন তারকা ওপেনার। ফের বুঝিয়ে দিলেন কেন তাঁকে ‘নেক্সট বিগ থিং ইন্ডিয়ান ক্রিকেট’ বলা হচ্ছে। আর তাই তো শুভমন ফেরার সময় তাঁর কাছে এসে হাত মিলিয়ে গেলেন বিপক্ষের অধিনায়ক ‘হিটম্যান’। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হল যে আকাশ মাধিওয়ালকে তিনি টার্গেট করেছিলেন, মুম্বইয়ের সেই পেসারই শুভমনকে ফেরালেন। আর তাঁর ক্যাচ নিলেন সেই টিম ডেভিড। এলিমিনেটরে লখনউ সুপার জায়ান্টসকে ধ্বংস করে দিয়েছিলেন আকাশ মাধওয়াল। মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের ডানহাতি পেসার মাত্র ৫ রান দিয়ে ৫ উইকেট তুলে রেকর্ড গড়েছিলেন। ইঞ্জিনিয়ারিং ছেড়ে ক্রিকেটে আসা মাধওয়ালকে নিয়ে রীতিমতো হইচই চলছে। উত্তরাখণ্ডের পেসারকে নিয়ে শুক্রবার ছেলেখেলা করলেন শুভমন। তাঁর এক ওভারে নিলেন ২১ রান। মারলেন ৩ ছক্কা।