জেলা

পালিত হল বালুরঘাট দিবস

বালুরঘাট: ১৯৪৭ এরও বহু আগে বালুরঘাট স্বাধীন বলে ঘোষিত হয়েছিল। ১৯৪২ সালেই স্বাধীনতা সংগ্রামীরা এই শহরের ব্যাংক পোস্টঅফিস আদালত লুঠ করে সেখানকার কাগজপত্র আগুনে পুড়িয়ে দিয়েছিলেন। শুধু তাই নয় ট্রেজারীতেও লুঠতরাজের পাশাপাশি ইউনিয়নজ্যাক পতাকা নামিয়ে সেখানে তেরঙ্গা পতাকা উত্তোলিত করে বালুরঘাটকে স্বাধীন বলে ঘোষণা করেছিলেন স্বাধীনতা সংগ্রামীরা। ৪২ এর বালুরঘাটের সেই আন্দোলনে সামনে হার মানতে বাধ্য হয়েছিল ব্রিটিশ প্রশাসন। বালুরঘাট ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছিলেন ব্রিটিশ ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশও।সেদিনের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের সেই আত্মত্যাগ ও দেশের প্রতি ভক্তিকে আজও নিষ্ঠার সাথে স্মরণ করেন বালুরঘাটবাসী। প্রতিবছরের মত এবারেও যথাযথ সম্মানে বালুরঘাট দিবস হিসেবে পালন করলেন। ডাঙ্গি এলাকা ও বালুরঘাটের ট্রেজারী বিল্ডিং চত্বরে ৪২এর স্মারকে পুষ্পস্তবক নিবেদনের পাশাপাশি জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়।ইতিহাস গবেষক সমিত ঘোষ জানিয়েছেন ভারতছাড়ো আন্দোলনে গোটা দেশের মধ্যে বালুরঘাটের ভূমিকা ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বালুরঘাটের এই আন্দোলনের তীব্রতা আশপাশের কয়েক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছিল। পাশের ব্লক তপনের পারিলাহাটে চারদিন পর ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে রীতিমত যুদ্ধ করেছিলেন মানুষজন। স্থানীয় তেঁতুলতলায় তীরধনুক ও বাটুল হাতে বন্দুকের সামনা করেছিলেন আন্দোলনকারীরা। সেদিন ব্রিটিশের গুলিতে শহীদ হয়েছিলেন চারজন। জখম হয়েছিলেন শ’দুয়েক।মহাত্মাগান্ধী ১৯৪২ এর ৯ আগস্ট ব্রিটিশ তুমি ভারতছাড়ো আন্দোলনের ডাক দিয়েছিলেন। মুম্বাইয়ে গান্ধীজীর সেই ডাক অবিভক্ত দিনাজপুরের বালুরঘাটে আছড়ে পড়েছিল ১৪ সেপ্টেম্বর। নদী পথে আত্রেয়ী পাড়ের ডাঙ্গি এলাকায়র জড়ো হয়েছিলেন কয়েক হাজার স্বাধীনতা সংগ্রামী। অধুনা বাংলাদেশের পত্নিতলা নওগাঁ ধামর তথা দিনাজপুরের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা মানুষজন বিপ্লবী সরোজরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তীর ধনুক টাঙি বল্লম হাতে পায়ে হেঁটে বালুরঘাট অভিমুখে মিছিল করেন। তাঁদের বন্দেমাতরম ধ্বনীতে সেদিন আকাশ বাতাস মুখরিত হয়ে উঠেছিল।