সম্প্রতি মেমারির এক ব্যক্তির অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা লোপাট হয়। তদন্তে নেমে বর্ধমান সাইবার ক্রাইম থানা দুর্গাপুরে জামতাড়া গ্যাংয়ের উপস্থিতি টের পায়। সেখান থেকে দুলাল দাস এবং অয়ন খান নামে দু’জনকে গ্রেপ্তার করে। দুলালের বাড়ি জামতাড়ায়। তাকে জেরা করে জানা যায়, জামতাড়ার সাত-আটজন প্রতারক দুর্গাপুরে ডেরা বেঁধেছিল। কিন্তু পুলিস অভিযানের আগেই বাকিরা চম্পট দেয়। পূর্ব বর্ধমানের পুলিস সুপার আমনদীপ বলেন, সাইবার ক্রাইম নিয়ে সতর্ক করতে বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচার করা হয়। তারপরও অনেকে একই ভুল করছেন। প্রতারকদের বিরদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সাইবার ক্রাইম থানা ঢেলে সাজানো হচ্ছে। প্রযুক্তি আরও উন্নত করা হবে। মেমারির নিমো মল্লিকপুর বাজারের এক ব্যবসায়ীর অ্যাকাউন্ট থেকে সাইবার অপরাধীরা ২লক্ষ ৫০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। প্রতারকরা তাঁকে ফোনে বলে, ‘পোস্ট অফিসে আপনার একটি পার্সেল এসেছে। সেটি বাড়িতে পাঠানো হবে। তার আগে আপনার মোবাইলে একটি ওটিপি যাবে। সেটা জানাতে হবে।’ পোস্ট অফিসের মাধ্যমে ওই ব্যবসায়ীর কাছে প্রায়ই পার্সেল আসে। তাই তিনি প্রতারকদের কথা অবিশ্বাস করেননি। তিনি সরল বিশ্বাসে তাঁর মোবাইলে আসা ওটিপি দিয়ে দেন। আর তারপরই কয়েক ধাপে তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা লোপাট হয়ে যায়। পুলিস ওই ব্যবসায়ীর কাছে আসা মোবাইল নম্বরের সূত্র ধরে প্রতারকদের ব্যাপারে জানতে পারে। প্রথমে তারা দুর্গাপুরের এক যুবকের নাম পায়। তাকে কয়েকদিন নজরদারিতে রাখা হয়। তদন্তকারীরা তার সঙ্গে জামতাড়া গ্যাংয়ের লিঙ্ক পায়। তারপরই জামতাড়ার ওই প্রতারক সহ তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এক পুলিস আধিকারিক বলেন, প্রতারকরা একটি কোম্পানির পরিচয় দিয়ে ঘরভাড়া নিয়েছিল। তিনজন ফোন করে কৌশলে ওটিপি হাতিয়ে নিত। দু’জন টেকনিক্যাল বিষয়টা দেখত। ওটিপি জানার পর অন্য অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠাত। ওই অ্যাকাউন্ট ও এটিএম ব্যবহার করার জন্য প্রত্যেককে মাসে পাঁচ-ছ’হাজার টাকা ভাড়া দিত। টাকা ট্রান্সফার করার পর তাদেরই এটিএম কার্ড ব্যবহার করে তা তুলে নিত। ধৃতদের জেরা করে পুলিস জানতে পেরেছে, প্রায়ই কোনও না কোনও রাজ্যের পুলিস ঝাড়খণ্ডের জামতাড়ায় অভিযান চালায়। সেকারণেই তারা দুর্গাপুর, কলকাতা, শিলিগুড়ি সহ রাজ্যের বিভিন্ন শহরে ডেরা বেঁধেছে। স্থানীয়দের সহযোগিতায় তারা ব্যবসা করার জন্য অফিস ভাড়া নিয়েছিল। তবে, তাদের ব্যবসার ব্যাপারে স্থানীয়রা কিছু জানত না।