ঘূর্ণিঝড়ের জেরে ওলটপালট জলপাইগুড়ি, কোচবিহার-সহ বিস্তীর্ণ এলাকা। পাশে দাঁড়িয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মানুষের সুবিধে-অসুবিধের কথা শুনেছেন। বৃহস্পতিবার থেকে তাঁর রাজনৈতিক কর্মসূচি শুরু হচ্ছে। তাঁর আগে বুধবার চালসায় চা শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বললেন মুখ্যমন্ত্রী। একেবারে ঘরের মেয়ের মতো পৌঁছে যান চা বাগানের ভিতরে। সেখানে গিয়ে শ্রমিকদের সুবিধা-অসুবিধার কথা শোনেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চা বাগান যাওয়ার পথে স্কুলের পড়ুয়াদের দেখে গাড়ি থেকে নেমে পড়েন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁকে দেখে তখন আনন্দে আত্মহারা ছাত্রীরা। লাফালাফি শুরু করে দেয়। তাদের সঙ্গে কথা বলে ভালোভাবে লেখাপড়া করার পরামর্শ দেন অভিভাবক মুখ্যমন্ত্রী। এর পরে রওনা দেন চা বাগানের দিকে। সেখানে তখন চা-পাতা তোলা হচ্ছিল। একেবারে বাগানের মধ্যে গিয়ে চা শ্রমিকদের সঙ্গে তিনি কথা বলেন। চা পাতা তোলেন। বাগান থেকে বেরিয়ে চলে যান স্থানীয় মানুষের বাড়ি। মুদির দোকানে যান। হেঁটেই ঘুরতে থাকেন এলাকায়। তাঁকে হাতের কাছে পেয়ে বিহ্বল চালসার সাধারণ মানুষ। চা শ্রমিকদে আবাসনে গিয়ে নিজেদের অভাব-অভিযোগের কথা শোনেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানকার রাস্তা ও জলসমস্যার কথা শোনান স্থানীয়রা। এক কলেজ পড়ুয়া ভাষা নিয়ে সমস্যার কথা বলেন। মুখ্যমন্ত্রী জানান, নির্বাচনী আচরণ বিধি জারি থাকায় তিনি বিস্তারিত কিছু বলতে পারছেন না। তবে প্রশাসন পাশে আছে। মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাস পেয়ে খুশি চা-বাগানের শ্রমিকরা।বরাবরই জেলায় গিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে মিশে যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কখনও তাঁকে দেখা গিয়েছে রাস্তার ধারে ছোট্ট দোকানে চা তৈরি করতে। আবার কখনও হাত লাগিয়েছেন রান্নায়। সাধারণ মানুষের বাড়িতে বসে সুখ-দুঃখের কথা শোনেন তিনি। এই কারণে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলার ‘ঘরের মেয়ে‘। তাঁকে সেভাবেই দেখে বাংলার মানুষ। চালসাতেও তার ব্যতিক্রম হল না। মুখ্যমন্ত্রীর এভাবে তাদের পাশে এসে দাঁড়িয়ে কথা বলবেন অভিযোগ শুনবেন। পড়ুয়াদের আশীর্বাদ দেবেন ভাবতে পারেনি চালসা। সেই কারণেই তুমুল উচ্ছ্বসিত তাঁরা। মুখ্যমন্ত্রীর আশ্রাস পেয়ে আপ্লুত। উত্তরবঙ্গের চা-বাগানের ১০ লক্ষ শ্রমিক ভুগছিলেন অনিশ্চয়তায়৷ তৈরি হয়েছিল তাঁদের কর্মহীন হয়ে পড়ার আশঙ্কাও৷ সেই কারণেই আন্দোলনের পথে যাবেন ভেবেছিলেন উত্তরবঙ্গের চা-বাগানের কর্মীরা৷ তবে শেষ পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায় আশ্বস্ত হলেন তাঁরা৷ আপাতত তাই আন্দোলনের পথ থেকেও আপাতত সরে আসছেন চা-শ্রমিকরা৷