মোহনবাগান: ১ (কামিন্স)
মুম্বই সিটি এফসি: ৩ (দিয়াজ, বিপিন, জ্যাকুব)
আইএসএল ফাইনালে ৩-১ গোলে জিতল মুম্বই সিটি এফসি। শনিবার রাতে আইএসএল ফাইনালে মুম্বই সিটি এফসির কাছে হারল সবুজ মেরুন। এক গোলে এগিয়েও তিন গোল হজম। ১-৩ গোলে অপ্রত্যাশিত হার। ১৫ এপ্রিল এই মুম্বইকে হারিয়েই লিগ শিল্ড জিতেছিল হাবাসের দল। বাগানের ডেরায় প্রতিশোধ নিল পিটার ক্র্যাটকির দল। সেদিন ছাংতেকে বোতলবন্দি করে জিতেছিলেন হাবাস। এদিন ঠিক তার উল্টো। মুম্বই কোচের ছকে আটকে গেলেন দিমিত্রি পেত্রাতোস। তাতেই শেষ বাগানের যাবতীয় কারিকুরি। লিগ শিল্ড চ্যাম্পিয়ন দলের থেকে এত খারাপ ফুটবল আশা করা যায়নি। দুরন্ত ছন্দে থাকা বাগানের আচমকাই অধঃপতন। সেই ঝাঁঝ ছিল না। প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত গাছাড়া মনোভাব। খুব বেশি সুযোগ তৈরি করতে পারেনি বাগান। প্রথমার্ধে তাও কয়েকটা পজিটিভ আক্রমণ ছিল। দ্বিতীয়ার্ধে ম্যাচ থেকে পুরোপুরি হারিয়ে যায় বাগান। দুর্দান্ত ছাংতে, আপুইয়া। স্ট্র্যাটেজিতে আইএসএলের সেরা কোচকে টেক্কা দিলেন আনকোড়া ক্র্যাটকি। এদিন একেবারেই চ্যাম্পিয়নদের মতো খেলেনি মোহনবাগান। লিগ শিল্ড জয়ীদের আইএসএল ট্রফি অধরা থাকল। পরপর দু”বার আইএসএল জিতে নজির সৃষ্টি করা হল না বাগানের। যোগ্য দল হিসেবেই আইএসএল চ্যাম্পিয়ন মুম্বই সিটি। জয়ী দলের হাতে ট্রফি তুলে দেন কল্যাণ চৌবে। প্রথমার্ধ ম্যাড়ম্যাড়ে। প্রথম থেকে পুরোপুরি ব্যাকফুটে চলে যায় মোহনবাগান। যা একেবারেই প্রত্যাশিত ছিল না। আগের দিন সাংবাদিক সম্মেলনে ৪৫ মিনিটে ম্যাচ শেষ করার কথা বলেছিলেন হাবাস। কিন্তু মাঠে তার প্রতিফলন হয়নি। প্রথম ৪০ মিনিট কোনও আক্রমণ নেই। বরং ভাগ্য সঙ্গ দিলে প্রথমার্ধে জোড়া গোলে এগিয়ে যেতে পারত মুম্বই। এদিন দলে কোনও পরিবর্তন করেননি বাগান কোচ। তবে শুরুতে বিপক্ষকে মেপে খেলতে গিয়ে পুরোপুরি খোলসের মধ্যে ঢুকে যায় বাগান। কোনও উইং প্লেও ছিল না। প্রথম আধ ঘণ্টা ম্যাচ মূলত মাঝমাঠেই ঘোরাফেরা করে। কোনও দলই সুযোগ তৈরি করতে পারেনি। ম্যাচের ৩১ মিনিটে প্রথম সুযোগ। ছাংতের ফ্রিকিক ক্রসপিসে লাগে। তার আট মিনিট পরে আবার গোলের সুযোগ ছিল মুম্বইয়ের সামনে। কিন্তু এবারও ফুটবল দেবতা সঙ্গ দেয়নি। ম্যাচের ৩৯ মিনিটে বিক্রম প্রতাপের পাস থেকে হাফ টার্ন নিয়ে ছাংতের শট শুভাশিসের পায়ে লেগে পোস্টে লাগে। দর্শক হয়ে দেখা ছাড়া কোনও ভূমিকা ছিল না সবুজ মেরুন রক্ষণের। কিন্তু ভাগ্য সহায় থাকায় সেই যাত্রায় বেঁচে যায় বাগান। হাবাসের দলের প্রথম সুযোগ ৪২ মিনিটে। থাপার পাস থেকে লিস্টনের শট মুম্বই কিপার লাচেনপার গায়ে লাগে। ফিরতি শট সরাসরি কিপারের হাতে তুলে দেন থাপা। ম্যাচের ৪৪ মিনিটে এগিয়ে যায় মোহনবাগান। লিস্টনের পাস থেকে দিমিত্রির দূরপাল্লার শট বাঁচায় মুম্বই কিপার। বাঁ পায়ের ফিরতি শটে গোল জেসন কামিন্সের। ঠিক ওড়িশা ম্যাচের পুনরাবৃত্তি। সবুজ মেরুন জার্সিতে ১২তম গোল অজি বিশ্বকাপারের। বিরতির পরও একই তিমিরে মোহনবাগান। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই ম্যাচে সমতা ফেরান পেরেরা ডিয়াজ। ৫৩ মিনিটে মনবীরকে ঘাড়ে নিয়ে বাঁ পায়ের শট গোলে রাখেন মুম্বইয়ের বিদেশি স্ট্রাইকার। ডিয়াজকে কভার করতে ব্যর্থ মনবীর। শেষে ইউস্তে চেষ্টা করলেও পারেনি। ৬২ মিনিটে আবার সুযোগ ছিল। কিন্তু ছাংতের মাইনাস থাকে বাইরে মারে রাহুল বেকে। ম্যাচের ৮১ মিনিটে পরিবর্ত ফুটবলার বিপিন সিংয়ের গোল মোহনবাগানকে ম্যাচ থেকে ছিটকে দেয়। তিন বছর আগে গোয়ায় আইএসএল ফাইনালে এই বিপিনের শেষ মিনিটের গোলেই স্বপ্নভঙ্গ হয়েছিল। এবারও একই চিত্র। ম্যাচের ৯০+৭ মিনিটে আরও এক “সুপারসাব” বাগানের কফিনে শেষ পেরেক পোঁতেন। বিক্রম প্রতাপের ব্যাক হিল থেকে ১-৩ করেন জাকুব।