আর জি কর কাণ্ডের সুবিচার, মুখ্যমন্ত্রী-স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে মঙ্গলবার নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছে ‘অরাজনৈতিক’ সংগঠন পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ। সেই প্রতিবাদ কর্মসূচি ঘিরে যে ব্যাপক অশান্তি ছড়াতে পারে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে, আসলে এটি অশান্তির ষড়যন্ত্র – এমন অভিযোগ বারবার শোনা গিয়েছে শাসকদলের নেতাদের গলায়। এবার রাজ্য পুলিশের এই প্রতিবাদ মিছিলকে ‘বেআইনি’ বলে ঘোষণা করে দিল। সোমবার নবান্ন থেকে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ADG, আইনশৃঙ্খলা মনোজ বর্মা জানালেন, ”কোনও ছাত্র সংগঠনের তরফে আমাদের কোনও অনুমতি চায়নি। এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) মনোজ ভার্মা এও জানান, নবান্ন একটি সংরক্ষিত এলাকা। এখানে কোনও কর্মসূচি করতে গেলে অনুমতি নিতে হয়। তবে, ‘পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ’ নাম দিয়ে যে সংগঠন অভিযান করার ডাক দেওয়া হয়েছে, তাঁরা কোনওরকম অনুমতি নেয়নি বলে দাবি করেন তিনি। নবান্ন উচ্চ নিরাপত্তার এলাকা। রাজ্যের প্রশাসনিক ভবন। এখানে কোনও অনুমতি ছাড়া কোনও কর্মসূচি পালন করা যায় না। তাই এই মিছিল বেআইনি।” তাঁর আরও সতর্কবার্তা, এর আড়ালে প্রতিবাদীদের সঙ্গে মিশে কেউ বা কারা অশান্তি ছড়াতে পারে। সাধারণ মানুষকে এসব থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিচ্ছে পুলিশ। যদিও মঙ্গলবার শহরের আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে বাড়তি পুলিশ মোতায়েন থাকবে। রাজ্যের এডিজি, আইনশৃঙ্খলা মনোজ বর্মা বলেন, ”নবান্ন নয়, অন্য কোনও জায়গায় এই মিছিলের অনুমতি চাইলে পুলিশ তা দিতে প্রস্তুত। আর তাছাড়া ২৭ তারিখ NET আছে। পরীক্ষা দেবেন বহু পরীক্ষার্থী। তাঁদের যাতে পথেঘাটে কোনও সমস্যা না হয়, তার জন্য় পুলিশ সবরকমভাবে তৈরি। রাস্তায় অতিরিক্ত বাস থাকবে।” গোয়েন্দা দপ্তরের রিপোর্টে এই বেআইনি মিছিলের আড়ালে দুষ্কৃতীরা ঢুকে অশান্তি বাঁধাতে পারে বলে তাদের কাছে প্রচু্র ইনপুট আছে, এমনই জানিয়েছেন মনোজ বর্মা। এমনকী, ‘পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ’ নামে কোনও আইনি স্বীকৃত সংগঠনই নেই বলে দাবি করা হয় পুলিশের তরফে। বিষয়টি নিয়ে এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতিম সরকার বলেন,’ পশ্চিমবঙ্গ ছাত্রসমাজ’ নামে একটি সংগঠন এই অভিযানের ডাক দিয়েছে। কিন্তু ‘পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ’ নামে কোনও সংগঠনই নেই। আমরা খোঁজ নিয়ে দেখেছি, এই নামে কোনও সংগঠন নেই।’ এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতিম সরকার বলেন, ‘সাধারণ মানুষের ভাবাবেগকে কাজে লাগিয়ে কেউ কেউ এসব করার চেষ্টা করবে।’ এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের কথা উল্লেখ করেন তিনি। সুপ্রিম কোর্ট আরজি কর কাণ্ড নিয়ে পুলিশকে কোনও শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে বাধা দিতে না পারলেও, আইন-শৃঙ্খলার অবনতি পুলিশ যথাযথ ব্যবস্থা নিতে পারবে বলে জানানো হয়েছে।