আম্বেদকর-মন্তব্য ইস্যুতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিশানায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ৷ সংবিধানের স্থপতি বাবাসাহেব আম্বেদকরকে নিয়ে শাহের মন্তব্যের কড়া প্রতিক্রিয়া দিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। মমতা সোশাল মিডিয়ায় জানিয়েছেন, “মুখোশ খুলে গিয়েছে ৷ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সংবিধানের গৌরবময় 75 বছরকে কলঙ্কিত করেছেন ৷ বাবাসাহেব আম্বেদকরের বিরুদ্ধে অসম্মানজনক মন্তব্য করেছেন তিনি ৷ তাও আবার গণতন্ত্রের মন্দিরে দাঁড়িয়ে ! এই মন্তব্য থেকেই বিজেপির দলিত-বিরোধী মানসিকতা প্রকাশিত হয়ছে ৷” তিনি আরও লেখেন, “আসন কমে 240 হয়েছে, তাতেই এই আচারণ ৷ শুধু কল্পনা করুন, যদি তাদের 400টি আসন পাওয়ার স্বপ্ন বাস্তবায়িত হত, তাহলে কীভাবে ক্ষতি করত ৷ তারা ড. আম্বেদকরের অবদানকে মুছে ফেলতে নতুন করে ইতিহাস লিখে ফেলত ৷” মঙ্গলবার সংসদের উচ্চকক্ষে সংবিধানের 75 বছর পূর্তি বিতর্কে ভাষণ দেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ৷ সেখানে তিনি বলেন, “এখন এক ফ্যাশন হয়েছে— আম্বেদকর, আম্বেদকর, আম্বেদকর ৷ এত বার যদি ভগবানের নাম নিত, তবে সাত জন্ম স্বর্গবাস হত ৷ একশো বার আম্বেদকরের নাম নেওয়া হয়, কিন্তু আমি বলতে চাই তাঁর প্রতি আপনাদের (কংগ্রেস) অনুভূতি কী ? জওহরলাল নেহরুর সঙ্গে আম্বেদকরের অনেক মতপার্থক্য ছিল ৷ সেই কারণে নেহরুর মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেন তিনি ৷” শুধু তাই নয়, শাহ মনে করিয়ে দেন বাবাসাহেবের বিরুদ্ধে নির্বাচনে প্রচার পর্যন্ত করেছিলেন জওহরলাল নেহরু। এমন মন্তব্যে হইচই পড়ে যায় দেশের রাজনৈতিক মহলে ৷ সংসদ চত্বরে আম্বেদকরের ছবি হাতে বিক্ষোভ দেখান কংগ্রেস সাংসদরা ৷ এই ইস্যুতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী শাহের কড়া সমালোচনা করে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরও লেখেন, “লক্ষ লক্ষ মানুষ আম্বেদকরকে অনুসরণ করেন ৷ তিনি অনেকের অনুপ্রেরণা ৷ সেইসব মানুষদের কাছে এমন মন্তব্য অপমানজনক ৷ কিন্তু যে দলের কাছে ঘৃণা ও ধর্মান্ধতাই অস্ত্র, তাদের থেকে আর কীই বা আশা করা যায় ?” শেষে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লেখেন, “ডঃ বাবাসাহেব আম্বেদকর সংবিধানের জনক। সেই জায়গা থেকে এই আপত্তিকর মন্তব্যটি শুধুমাত্র তাঁর উপরে নয়, সংবিধানের খসড়া কমিটির সব সদস্যের উপরই একটি আক্রমণ, যা সমস্ত বর্ণ, ধর্ম, জাতিসত্তা এবং সদস্যদের সঙ্গে সঙ্গে দেশের ঐক্যের প্রতীক ।” পাশাপাশি তাঁর দল তৃণমূলও ‘শাহি মন্তব্য’ নিয়ে সংসদে সক্রিয় বিরোধিতার পথে হেঁটেছে। রাজ্যসভার তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন স্বাধিকার ভঙ্গের নোটিশ এনেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ৷