পহেলগাঁও হামলাকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি প্রতিবেশী রাষ্ট্র পাকিস্তানের সঙ্গে সামরিক সংঘাতে জড়িয়েছে ভারত ৷ আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণের চলতে থাকে তিন দিন ৷ এবার দেশের সীমান্তে নিরাপত্তাকে তাই আরও মজবুত করতে এই প্রথম ‘ড্রোন স্কোয়াড্রন’ তৈরি করছে বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স (বিএসএফ) ৷ অপারেশন সিঁদুর থেকে শিক্ষা নিয়ে প্রাণঘাতী ইউএভি আক্রমণ রুখতে ইতিমধ্যেই ভারত-পাক সীমান্তবর্তী পোস্টগুলিকে আরও শক্তিশালী করে তোলার কাজ শুরু করে দিয়েছে বিএসএফ ৷ সেই কারণেই, ড্রোন স্কোয়াড্রন তৈরির সিদ্ধান্ত নিল বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স ৷ এই প্রসঙ্গে এক নিরাপত্তা আধিকারিক জানান, বিশেষ কয়েকটি বর্ডার আউটপোস্টে (বিওপি) এই স্কোয়াড্রন মোতায়েন করা হবে ৷ স্কোয়াড্রনে থাকবে নজরদারির চালানোর জন্য এবং আক্রমণের জন্য ড্রোন, মনুষ্যবিহীন বিমান আনম্যান্ড এরিয়ল ভেইক্যাল (ইউএভি) এবং যন্ত্রগুলি পরিচালনার জন্য বিশেষভাবে প্রশিক্ষিত কর্মীরা ৷সূত্রের খবর, চণ্ডীগড়ে বিএসএফ-এর ওয়েস্টার্ন কমান্ডের সদর দফতরের একটি কন্ট্রোল রুম তৈরি করা হয়েছে ৷ মূলত, সেই কন্ট্রোল রুম থেকে বিশেষ এই স্কোয়াড্রনটি পরিচালনা করা হবে ৷ সাম্প্রতিক সময়ে অপারেশন সিঁদুর অভিযানের পর যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে ভারতীয় সেনাবাহিনীর দুর্বলতা এবং শক্তি পর্যবেক্ষণের পর বিশেষ এই ইউনিট তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ৷ এই মুহূর্তে ইন্দো-পাকিস্তান আন্তর্জাতিক সীমান্ত (আইবি)-এর নিরাপত্তার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বিএসএফ-কে ৷ গত 22 এপ্রিল পহেলগাঁও হামলার জবাব পাকিস্তান এবং পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীরের 9টি জঙ্গিঘাঁটি অপারেশন সিঁদুর অভিযান চালায় ভারতীয় সামরিক বাহিনী ৷ গত 7 মে’র অভিযানে সেনার সঙ্গে অংশগ্রহণ করেন বিএসএফ জওয়ানরাও ৷ পাল্টা ভারতীয় সামরিকঘাঁটি এবং সাধারণ মানুষের বসবাসকারী এলাকাগুলি লক্ষ্য করে ড্রোন হামলা চালায় ইসলামাবাদ ৷ গত 10 মে জম্মুর আরএস পুরা সেক্টরে খারখোলা বর্ডার পোস্টে ড্রোন হামলা করে পাকিস্তান ৷ বিস্ফোরণে দুই বিএসএফ জওয়ান এবং একজন সেনা জওয়ান শহিদ হন ৷ হামলায় গুরুতর আহত হন আরও 4 জওয়ান ৷ আহতদের মধ্যে একজনের পা কেটে বাদ দিতে হয় ৷ সূত্রের খবর, 2 হাজার কিলোমিটার দীর্ঘ ভারত-পাকিস্তান সীমান্তের নির্বাচিত কয়েকটি পোস্টে মোতায়েন করা হবে বিশেষ এই স্কোয়াড্রন ৷ বিশেষত উত্তরে জম্মু থেকে পশ্চিমের পঞ্জাব, রাজস্থান এবং গুজরাত পর্যন্ত বিস্তৃত ভারত-পাক সীমান্তে একাধিক পোস্টে মোতায়েন করা হবে ড্রোন স্কোয়াড্রন ৷
কী থাকবে এই স্কোয়াড্রনে ?
জানা গিয়েছে, ছোট ও বড় নজরদারি ড্রোনের পাশাপাশি স্কোয়াড্রনে থাকবে আক্রমণকারী ড্রোনও ৷ সূত্রের খবর, অপারেশন সিঁদুরের মতো জরুরিকালীন পরিস্থিতিতে এই সমস্ত ড্রোনগুলিকে ব্যবহার করা হবে ৷ সেই সঙ্গে, ড্রোনগুলিকে পরিচালনার জন্য় 2-3 জন প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত কর্মীও নিযুক্ত করা হবে এই স্কোয়াড্রনে ৷ উল্লেখ্য, 10 মে’র হামলার পর সীমান্তবর্তী পোস্টগুলিকে শক্তিশালী করে তুলেছে বিএসএফ ৷ বর্ডার পোস্টের বাঙ্কারের দেওয়াল ও ছাদে অ্য়ালোয় সিট ব্যবহার করে আরও মজবুত করে তোলা হয়েছে ৷ পাশাপাশি, আরও বেশকিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে ৷ অপারেশন সিঁদুর অভিযানের পর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং জানান, সামরিক অভিযানে অন্তত 118টি পাক ঘাঁটি ধ্বংস করে দিয়েছে বিএসএফ ৷ তাদের নজরদারি ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণ নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি ৷


