জেলা

‘মানহানিকর তথ্য’, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে লেখা দীপক ঘোষের বিতর্কিত বইয়ের উপর স্থগিতাদেশের নির্দেশ দিল আদালত

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে লেখা দীপক ঘোষের বিতর্কিত বইয়ের উপর অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশের নির্দেশ দিল বারাসত আদালত । মঙ্গলবার নির্দেশে বলা হয়েছে, আগামী 17 সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই স্থগিতাদেশ কার্যকর থাকবে । এই সময়ের মধ্যে বইটির প্রকাশ, বিক্রি, বিতরণ কিংবা বইয়ের কোনও উদ্ধৃতি অংশ সোশাল মিডিয়া বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা যাবে না । এমনকি সোশাল মিডিয়ায় বইয়ের যে অংশবিশেষ ইতিমধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে সেগুলোর প্রচারেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে আদালতের তরফে । দীপক ঘোষের লেখা ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে যেমন দেখেছি’-বইটি নিয়ে এর আগে বিতর্ক কম হয়নি । বইটিতে মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ‘মানহানিকর’ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে । এমনই অভিযোগ তুলে সম্প্রতি বারাসত জেলা আদালতে মামলা করেন বিধাননগর পুরনিগমের 20 নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর প্রসেনজিৎ নাগ । সেই মামলার প্রেক্ষিতেই মঙ্গলবার বারাসত সিভিল কোর্টের জুনিয়র ডিভিশনের (ফাস্ট কোর্ট) বিচারক পৌলমী পণ্ডিত এই নির্দেশ দেন । আদালত সূত্রে খবর, এই মামলার শুনানি শুরু না হওয়া পর্যন্ত বইটির কোনওরকম প্রকাশনা, বিক্রি কিংবা প্রচার করা যাবে না । সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা জারি থাকবে বইয়ের অংশ বিতরণ করার ক্ষেত্রেও ।  মামলাকারী প্রসেনজিৎ নাগের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন,”সম্পূর্ণ ভুল ও মিথ্যে তথ্যের আশ্রয় নিয়ে বইটি লেখা হয়েছে । এর ফলে কালিমালিপ্ত হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী ও দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বচ্ছ ভাবমূর্তি ৷ বিরোধী শিবির মাঝে মধ্যেই এই বইটিকে হাতিয়ার করে রাজনৈতিক ফায়দা তোলার চেষ্টা করে । দলের কর্মীরাও এতে বিভ্রান্তি হয়ে পড়েন । সেই বিভ্রান্তি দূর করতে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি । আমরা চাই, সত‍্যটা সামনে আসুক । বিভ্রান্তিকর প্রচার বন্ধ হোক । আদালত আমাদের পর্যবেক্ষণে প্রাথমিক মান‍্যতা দিয়েছে । স্থগিতাদেশ জারি করে বলেছে, 17 সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বইয়ের কোনওরকম প্রকাশনা, বিক্রি, বিতরণ এবং প্রচার নিষিদ্ধ করা হল । শুধু তাই নয়, সংবাদমাধ্যমেও বইয়ের কোনও অংশ প্রচার করা যাবে না । আমরা আদালতের কাছে আবেদন করেছি দীপক ঘোষের বিতর্কিত এই বইটি সম্পূর্ণভাবে বাজার থেকে তুলে নেওয়া হোক । আশা করছি আদালত সেই আবেদনও গ্রহণ করবে ।” এই বিষয়ে তৃণমূলের চিকিৎসক সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার বলেন,”রাজনৈতিকভাবে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে মোকাবিলা করতে না পেরে তাঁকে হেয় প্রতিপন্ন করার চেষ্টা চলছে । সেই কারণে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে কুৎসা ছড়াতে পরিকল্পিতভাবে এই বইটি লেখা হয়েছে । আদালত বইটির উপর অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ দেওয়ায় সত‍্যের জয় হল ।” প্রসঙ্গত, তৃণমূলে থাকাকালীন বেশ কয়েক বছর আগে ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে যেমন দেখেছি’-শীর্ষক বইটি লিখেছিলেন দীপক ঘোষ । তাঁর লেখা এই বইটিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ঘিরে নানা অভিজ্ঞতা ও পর্যবেক্ষণ তুলে ধরা হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছিল প্রকাশনার পক্ষ থেকে । যদিও, বইয়ের নানা অংশে মুখ্যমন্ত্রীর নামে ব‍্যক্তিগত কুৎসা ও বিষোদগার করা হয়েছে বলে বার বারই অভিযোগ উঠেছে।