সময়ের অভাবে আপন জনের কাছ থেকে আমরা কত দূরে চলে যাই। আর ঠিক সেই শূন্যতাই যখন পূরণ করে কোনও অনাত্মীয়, যাঁর সঙ্গে চোদ্দো পুরুষেও রক্তের কোনও সম্পর্ক নেই। তখন সেই মানুষগুলিই যেন আমাদের ‘কাছের মানুষ’ হয়ে ওঠে। ‘অসহায়’ আমাদের আশ্রয় হয়ে ওঠে। যেন কত কাল থেকে তাঁর সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে। লীনা গঙ্গোপাধ্যায় এবং শৈবাল বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘সাঁঝবাতি’ সেই গল্পই বলবে পর্দায়। মিষ্টি দিদা (লিলি চক্রবর্তী), ছানা দাদু (সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়)এবং চাঁদু (দেব) আর ফুলি (পাওলি দাম) এই চারটি চরিত্রকে কেন্দ্র করেই গল্প। দুই বৃদ্ধ-বৃদ্ধা ছানা দাদু ও মিষ্টি দিদা এবং তাঁদের সব সময়কার সঙ্গী চাঁদু আর ফুলির গল্প দেখাবে পরিচালকজুটি। আজ মুক্তি পেল এই ছবির ট্রেলার। ২০ ডিসেম্বর মুক্তি পাবে ‘সাঁঝবাতি’। এই প্রথম সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে এক পর্দায় দেখা যাবে দেবকে। আবার প্রথমবার, দেব-পাওলি জুটিকে দেখতে পাবেন দর্শকরা। অন্যদিকে, এই প্রথমবার প্রযোজক অতনু রায়চৌধুরির সঙ্গে জুটি বেঁধেছেন পরিচালকদ্বয় লীনা গঙ্গোপাধ্যায় এবং শৈবাল বন্দ্যোপাধ্যায়। লীনা গঙ্গোপাধ্যায়ের জানান, এই তিনটে ফ্যাক্টর ‘সাঁঝবাতি’র ক্ষেত্রে খুব গুরুত্বপূর্ণ। তিনি দেব প্রসঙ্গে বলেন, “প্রথমে আমি দেবকে নিয়ে আপত্তি তুলেছিলাম। আমার সংশয় ছিল, আমি যে ঘরনার গল্প বলি, সেটা হয়তো দেব তুলে ধরতে পারবে না! কিন্তু একজন অভিনেতা হিসেবে দেব নিজেকে যেভাবে ভেঙেছে ‘সাঁঝবাতি’তে, তা সত্যিই প্রশংসনীয়।” ছবিতে ফুলির চরত্রে অভিনয় করছেন পাওলি। তাঁর কথায়, “এই প্রথম দর্শক এরকম একটা চরিত্রে আমায় দেখতে পাবে। যে খুব হাসিখুশি, প্রাণবন্ত একটা মেয়ে। দেবের সঙ্গে অনেকদিন থেকেই এরকম একটা কন্টেন্টে কাজ করতে চাইছিলাম।” পাওলির সঙ্গে জুটি বাঁধার প্রসঙ্গে দেব জানান, “একটা ভাল শটের জন্য পাওলি ঝগড়াও করতে পারে। শুটিংয়ের সময় চরিত্রের মধ্যে যেভাবে ঢুকে যায়, মনেই হয় না ও পাওলি। ও তখন শুধুমাত্রই সিনেমার সেই চরিত্র। অনেক কিছু শেখার রয়েছে ওর কাছ থেকে। ওর চরিত্রের একটা সংলাপও যদি কেটে দেওয়া হত, পাওলি রীতিমতো সেটে চেঁচামেচি শুরু করে দিত- লীনাদি কাল রাতেও তো এই লাইনটা ছিল, কেটে গেল কেন?… এরকম আর কী!” ‘সাঁঝবাতি’র দেড় মিনিটের ট্রেলারে ফুটে উঠল আদ্যোপান্ত মিষ্টি বাঙালিয়ানার গল্প। ট্রেলারেই বোঝা যাচ্ছে, এই ছবি বুঝিয়ে দেবে কালের ধারায় দুই প্রজন্মের ফাঁক কতোটা গভীর হয়েছে!