মালদা

পরিশ্রুত আর্সেনিক মুক্ত পানীয় জলের দাবিতে পথ অবরোধ

হক জাফর ইমাম, মালদা: এলাকায় পরিশ্রুত আর্সেনিক মুক্ত পানীয় জলের দাবিতে শনিবার মালদা জেলার বাঙ্গিটোলা এলাকায় দীর্ঘক্ষন রাজ্য সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদে সামিল হলেন এলাকার গ্রামবাসীরা । রাস্তা অবরোধের ফলে প্রায় চার ঘন্টা ওই রুটে যানবাহন চলাচলে বন্ধ হয়ে পড়ে । চরম দুর্ভোগে পড়েন পঞ্চানন্দপুর , পাগলাঘাট সহ বিভিন্ন এলাকার নিত্যদিনের যাত্রীরা । কালিয়াচক – ২ নম্বর ব্লকের বাঙ্গীটোলা গ্রাম পঞ্চায়েতের জোতঅনন্তপুর ও সাদিপুর, কাশিমবাজার প্রভৃতি গ্রামের বাসিন্দারা বাঙ্গিটোলা হাসপাতালের কাছে রাস্তা অবরোধে অংশগ্রহণ করেন । এদিন পাড়ার কয়েকশো মহিলা বাড়ির রান্নাবান্না সাময়িক বন্ধ রেখে আর্সেনিক মুক্ত পানীয় জল না পেয়ে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন । স্থানীয়দের বক্তব্য, গঙ্গার জল মানিকচক আর্সেনিক প্লান্ট থেকে এলাকায় সরবরাহ হয় । কিন্তু সমস্যাকবলিত মানুষের দাবি, এলাকা ভূগর্ভে সবচেয়ে বেশি আর্সেনিকের মাত্রা রয়েছে।অথচ এলাকায় সেই পানীয় জল পাওয়া যায় না । আর্সেনিকযুক্ত বিষ জল পান করে এলাকার মানুষ। এলাকায় গত এক বছর আর্সেনিক মুক্ত পানীয় জল পাচ্ছেন না ।বারবার বিষয়টি পি এইচ ই ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জানালেও কোন ফল হচ্ছে না বলে অভিযোগ । যদি ও স্থানীয় এক পিএইচ ই কর্মীরা বলেন, আমরা চেষ্টা করছি যাতে সব মানুষ আর্সেনিক মুক্ত পানীয় জল পান । ৩/৪ মাস থেকে গঙ্গার আর্সেনিক মুক্ত পানীয় জল অনেকে পাচ্ছেন না ।এই জলাধার থেকে নিয়মিত এলাকায় ১৩ লক্ষ লিটার পানীয় জল সরবরাহ করা হয় । কিন্তু পাইপ ফাটিয়ে ও অবৈধ জলের সংযোগ একাংশ গ্রহণ করার ফলে জলের চাপ কমে যায় ও সঠিক জল পাওয়া থেকে বঞ্চিত হন মানুষজন । তবে অবৈধভাবে যত্রতত্র জলের কানেকশন রয়েছে ফলে বাসিন্দারা জল থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন সেটা ও সকলেই বলছেন ।সকাল আট থেকে দুপুর পর্যন্ত প্রায় চার ঘণ্টা অবরোধ চলে । মোথাবাড়ি থানার পুলিশ অফিসার শ্যামল চন্দ্র বর্মণ কালিয়াচক -২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি টিঙ্কুর রহমান বিশ্বাস সহ অন্যান্যরা অবরোধ ও ঘটনাস্হলে ছুটে আসেন । পুলিশ প্রশাসনের কর্তাদের উপস্থিতিতে দ্রুত সমস্যা সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে ও অবরোধ উঠে যায় । গোটা মালদা জেলার মধ্যে অন্যতম আর্সেনিক এলাকা বাঙ্গীটোলাতে গ্রামপঞ্চায়েতের সাদীপুর সহ এলাকার কয়েকটি গ্রাম । গত এক দশক থেকে কালিয়াচক দুই নং ব্লকের বাঙ্গিটোলার সাদিপুর এলাকাসহ বেশিরভাগ আর্সেনিকের প্রভাব এর ফলে মানুষ চরম সমস্যার মধ্যে আছে। এলাকায় আর্সেনিকের প্রভাবে বিভিন্ন অসুখ বিসুখে আক্রান্ত হন । এমনকি অনেকের মৃত্যু ও হয়েছে । সরকার প্রায় এক দশক আগে এই এলাকায় একটি আর্সেনিক মুক্ত জল প্রকল্প তৈরি হয় । মানুষের কাছে পৌঁছাচ্ছে না গঙ্গার পরিশ্রুত আর্সেনিকমুক্ত পানীয় জল । ফলে ক্রমশই আর্সেনিকমুক্ত জল না পেয়ে  মানুষের ক্ষোভ । এদিন এই তুমুল ক্ষোভের বহিপ্রর্কাশ ঘটে । এলাকায় আর্সেনিক  সমস্যা মিটাতে এলাকার বাঙ্গীটোলা গ্রাম পঞ্চায়েতে সাদিপুর পানীয় জল প্রকল্প নামে একটি চালু হয় প্রায় এক দশক আগে। কিন্তু দিনের পর দিন গ্রামগুলোতে সঠিকভাবে পানীয় জল পৌঁছাচ্ছে না বলে অভিযোগ।পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি টিঙ্কুর রহমান বিশ্বাস ঘটনাস্থলে পৌছে বলেন, মা মাটি মানুষের সরকার আপনাদের কাছে দায়বদ্ধ । গঙ্গার পরিশ্রুত পানীয় জলের দাবি এখনকার   একটা সমস্যা রয়েছে । তাদের দাবির সঙ্গে সহমত ও সহমর্মিতা পোষন করেন ।এদিন কথা বলেন   সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে। একটি বৈঠক করবেন দ্রুত জলের সমস্যার সমাধান হয়। এলাকার  মানুষ  বিশুদ্ধ পানীয় জলের দাবি করে আসছেন ।  আমরা  শীঘ্রই পঞ্চায়েতের তরফে দশদিন সময় বেধে দিয়েছি । এলাকায় আর্সেনিক মুক্ত পানীয় জল সঠিক ভাবে পাবেন । আমি কথা দিয়ে কথা রক্ষার চেষ্টা করি । মানুষের কাজ করতে পারলে এলাকার মানুষ উপকৃত হবেন । আমিও পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হিসেবে আনন্দিত হব ও গর্ববোধ করব । কারণ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার চান মানুষের উন্নয়ন , সমৃদ্ধি ও হাসিখুশি মুখ । পিএইচই দপ্তর জানিয়েছেন, ওই এলাকায়  জল সরবরাহ  সঠিক ভাবে না হওয়ার  প্রধান  কারন   কিছু  মানুষ বিভিন্ন স্থানে জলাধার জল স্টোরের আগেই মেন লাইনটি ফাটিয়ে জল ব্যবহার  করছে । এতে জলের গতি কমে গিয়ে জলের স্পিড অনেকটাই কমে যাচ্ছে ফলে  জল সরবরাহ বাধা পাচ্ছে । মানিকচকে  আর্শেনিক  প্ল্যান্টে জল সাপ্লাইয়ের পরিমাণ  রয়েছে। মানুষের মধ্যে নিবিড় সচেতনতার বার্তা দেন ও দ্রুত সকলে জল পাবেন আশ্বাস দেওয়া হয় ।