জল্পনা চলছিল অনেকদিন ধরেই। সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টে এক মামলা চলাকালীনও কেন্দ্র সরকার ডিজিটাল মিডিয়ার জন্য নির্দিষ্ট আইন আনার পক্ষে সওয়াল করেছিল। এবার সেই জল্পনাই সত্যি হল। অনলাইন নিউজ পোর্টাল, ওটিটি প্ল্যাটফর্ম এবং অন্যান্য ডিজিটাল কনটেন্ট প্রোভাইডার সংস্থাকে নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য নয়া নির্দেশিকা জারি করল কেন্দ্রীয় সরকার। এবার থেকে যে কোনও রকম ডিজিটাল কনটেন্ট প্রোভাইডার সংস্থাগুলো থাকবে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের অধীনে। ৯ নভেম্বর রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ এই মর্মে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। সরকারের তরফে জারি নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, এবার থেকে অনলাইন ফিল্ম এবং নিউজ কন্টেন্ট, সমসাময়িক ঘটনা সম্পর্কিত অনুষ্ঠান তথ্য সম্প্রচার মন্ত্রকের (I&B ministry) আওতাভুক্ত হবে। অর্থাৎ মুদ্রণ, বৈদ্যুতিন মিডিয়ার মতো ওটিটি প্ল্যাটফর্মেও এবার থেকে সরকারের কড়া নজর থাকবে। ইচ্ছেমতো দেখানো যাবে না নগ্নতা-অশালীনত। ওটিটি প্ল্যাটফর্ম ও ডিজিটাল সংবাদ কড়া নজর থাকবে কেন্দ্রের। ইন্টারনেট আর স্মার্টফোনের দৌলতে দেশের কোণায় কোণায় পৌঁছে গিয়েছে এই মাধ্যম। বিশেষ করে লকডাউনের সময় আট থেকে আশি, সকলের কাছে প্রিয় হয়েছে ওটিটি। সে দিকে নজর রেখে ভারতের বাজার দখল করতে নেমেছে নেটফ্লিক্স, আমাজন প্রাইম, হটস্টারের মতো জনপ্রিয় ওয়েব মাধ্যমগুলি।
প্রসঙ্গত, দেশের প্রিন্ট মিডিয়ার উপর নজর রাখে প্রেস কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া। নিউজ চ্যানেলগুলি নিউজ ব্রডকাস্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের অধীনে, অ্যাডভার্টাইজিং স্ট্যান্ডার্ড কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়ার অধীনস্থ বিজ্ঞাপন সংস্থাগুলি। সিনেমার ক্ষেত্রে রয়েছে সেন্ট্রাল বোর্ড অফ ফিল্ম সার্টিফিকেশন। এবার ডিজিটাল প্রোভাইডার সংস্থাগুলোর উপর রাশ টানতে সুপ্রিম কোর্টের কাছে আবেদন জমা পড়েছিল। অক্টোবর মাসে দেশের শীর্ষ আদালত কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে এই প্রসঙ্গে মতামত জানতে চায়। যার প্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক এবং ব্রডকাস্টিং অ্যান্ড ইন্টারনেট অ্যান্ড মোবাইল অ্যাসোসিয়েশনকে নোটিশ পাঠিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। এছাড়া অন্য একটি মামলায় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক সুপ্রিম কোর্টকে জানিয়েছিল যে, ডিজিটাল মিডিয়াগুলির উপর রাশ টানা দরকার। কারণ, অনলাইন মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলি ফিল্মমেকার এবং নানা শিল্পীদের ভীষণ সুবিধে করে দিয়েছে। সেন্সর বোর্ড নিয়ে তাদের মাথা ঘামাতে হচ্ছে না। আর সেসবের প্রেক্ষিতেই এবার নিউজ পোর্টাল-সহ বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলিকে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের অধীনে আনা হল।